খেলতে এসে স্বজন পেল নিখোঁজ রিঙ্কু
ছোট ভাই বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছিল। তাকে খুঁজতে বাড়ির কাউকে কিছু না জানিয়েই একদিন বেরিয়ে পড়েছিল ১৫ বছরের মূক ও বধির কিশোরী রিঙ্কু। হারিয়ে ফেলেছিল বাড়িতে ফেরার রাস্তা। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে পাঠিয়েছিল রায়গঞ্জের সূর্যোদয় মূক ও বধির বিদ্যালয়ের হোমে। সেখানকার ছেলেমেয়েদের সঙ্গে ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে শিলিগুড়িতে এসে ৩ বছর পর দাগাপুর এলাকায় নিজের বাড়ি খুঁজে পেল ওই প্রতিবন্ধী কিশোরী। হোমের আধিকারিক পার্থসারথি দাস বলেন, “নিয়ম মেনে রিঙ্কুর মা এবং পরিবারের লোকদের রায়গঞ্জে হোমে দেখা করতে বলা হয়েছে। রিঙ্কুর জন্মের শংসাপত্র, হারিয়ে যাওয়ার পর পরিবারের তরফে পুলিশে যে অভিযোগ জানানো হয় সে সব নথিপত্র নিয়ে আসতে বলা হয়েছে। নিয়ম মেনে সব খতিয়ে দেখে পরিবারের হাতে রিঙ্কুকে তুলে দেওয়া হবে।” রবিবার শিলিগুড়ি কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে ছিল প্রতিবন্ধীদের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। তাতে অংশ নেয় রিঙ্কু। রিঙ্কুর মা লক্ষ্মী দেবী, দাদা কানাইয়া রাম এবং পরিবারের অন্যান্যরাও হাজির ছিলেন। কী ভাবে বাড়ি খুঁজে পেল রিঙ্কু? রায়গঞ্জের ওই হোম সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিবন্ধী ছেলেমেয়েদের ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে শনিবার সকালে তাদের ছেলেমেয়েরা শিলিগুড়িতে পৌঁছয়। সেবক রোডে এক ধর্মশালায় তাদের থাকার বন্দোবস্ত করেছিলেন উদ্যোক্তারা। বিকেলে ওই ছেলেমেয়েদের তাঁরা বেড়াতে নিয়ে যাওয়া হয় দাগাপুরের একটি পার্কে। এলাকায় পৌঁছতেই রিঙ্কুর মনে পড়তে থাকে পুরানো দিনের কথা। চিনতে পারে দাগাপুরে তাদের বাড়ির কাছের রাস্তা, দোকান, স্কুল, তাঁর খেলাধূলার জায়গা ‘বসুন্ধরা’ এবং ওই পার্কটিকে। হোমের ছেলেমেয়েদের দেখভালের দায়িত্বে থাকা দিলীপ মোদককে রিঙ্কু আকার ইঙ্গিতে তা জানালে তিনি আঁচ করতে পারেন। স্থানীয় উদ্যোক্তাদের সাহায্যে এর পর সন্ধ্যার মুখে একটি গাড়িতে রিঙ্কুকে নিয়ে তাঁরা বার হন ওর কথা সত্যি কি না তা যাচাই করতে। গাড়ি চলতেই উৎসাহী হয়ে ওঠে রিঙ্কু। গাড়ি কোন দিকে নিতে হবে রিঙ্কু নিজেই ইঙ্গিত করে বলে দিচ্ছিল দেখে সকলের বিশ্বাস বেড়ে যায়। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কেন্দ্র দাগাপুরের বসুন্ধরায় যাওয়ার রাস্তায় গাড়ি ঢুকতেই রিঙ্কু ফের বোঝাতে থাকে রাস্তার ধারেই এই সময় তার মাকে দেখা যাবে। তার মা তেলেভাজার দোকান চালায়। কিছুটা এগোতেই গাড়ি থামাতে বলে রিঙ্কু। রাস্তার পাশে তেলে ভাজা তৈরি করছেন যে মহিলা তিনি-ই ‘মা’ বলে বুঝিয়ে দেয় রিঙ্কু। এর পর শুধু গাড়ি থেকে রিঙ্কুর বার হওয়ার অপেক্ষা মাত্র। রিঙ্কু গাড়ির বাইরে আসতেই হতবাক লক্ষ্মীদেবী। তিন বছর ধরে যে মেয়েকে হন্যে হয়ে খুঁজেছেন সেই রিঙ্কুই তো! ঠিক দেখছেন তো তিনি। রিঙ্কু ছুটে গিয়ে মাকে জড়িয়ে ধরে। জড়িয়ে ধরে কেঁদে ওঠে দু’জনেই। বাসিন্দারা যাঁরা চেনেন তাঁরাও জড়ো হয়ে যান। লক্ষ্মীদেবীকে এর পর বুঝিয়ে রিঙ্কুকে নিয়ে চলে আসেন দিলীপবাবুরা। রবিবার সকালে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে খেলার মাঠে লক্ষ্মীদেবীকে আসতে বলেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.