নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
শিলিগুড়িতে দু’টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ভবন এবং অবৈধ গুদামের মালিকদের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করল দমকল কর্তৃপক্ষ। শনিবার দুপুরে চার্চ রোডে নন্দকিশোর আবাসনের চার তলায় অবৈধ ভাবে করা জুতোর গুদামে আগুন লাগে। রাতে আগুন লাগে বিধান মার্কেটের জর্জ মোবার্ট রোডে একটি ব্যাগের গুদামে। ওই দু’টি ঘটনায় অবৈধ গুদামগুলির বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তাঁরা। পুর কর্তৃপক্ষও জানিয়েছেন দমকলের সঙ্গে কথা বলে সংশ্লিষ্ট দোকানগুলির বিরুদ্ধে তাঁরাও ব্যবস্থা নেবেন।
শহরের বিভিন্ন মার্কেট কমপ্লেক্স এবং বহুতলে অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা না থাকায় উদ্বিগ্ন শিলিগুড়ির মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত। তিনি বলেন, “ব্যবসায়ী, বাসিন্দারা প্রয়োজনীয় সমস্ত ক্ষেত্রেই যাতে অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা গ্রহণ করেন তা তাদের বুঝতে হবে। অবৈধ ভাবে কেউ কিছু করতে চেষ্টা করলে তা মেনে নেওয়া হবে না। পুরসভার তরফে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অবৈধ নির্মাণ নিয়ে ইতিমধ্যেই ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে। অবৈধ গুদাম বন্ধ করতেও অভিযানে নামা হবে।”
দমকলের সহকারী ডিরেক্টর (উত্তরবঙ্গ) উদয়নারায়ণ অধিকারী বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই শহরে প্রচুর ভবন তৈরি হয়েছে যেগুলির ক্ষেত্রে দমকলের নিয়ম নীতি মানা হয়নি। বাস্তব পরিস্থিতি যা তাতে রাতারাতি সে সব শুধরানো যাবে না। তবে বাসিন্দারা নিজেদের স্বার্থে অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা না করলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। দমকলের তরফে বারবার সতর্ক করা হচ্ছে। অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা ঠিক না থাকলে বাণিজ্যিক ভবনগুলির ট্রেড লাইসেন্স যাতে না দেওয়া হয় তা পুর কর্তৃপক্ষকে দেখতে হবে। একই ভাবে নার্সিংহোমগুলির ক্ষেত্রে দমকলের অনুমোদন না থাকলে তাদের অনুমোদন না দিতে স্বাস্থ্য দফতরকে অনুরোধ করা হয়েছে।” দমকল সূত্রেই জানা গিয়েছে, শহরের অধিকাংশ মার্কেট কমপ্লেক্স এবং বহুতলে বিশেষ করে পুরনো ভবনগুলিতে অগ্নিনির্বাপনের কোনও ব্যবস্থা নেই। জতুগৃহ হয়ে থাকা বিধান মার্কেট, শেঠ শ্রীলাল মার্কেট, হংকং মার্কেট এলাকার পরিস্থিতি নিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীরাই উদ্বিগ্ন। একাধিকবার বিধান মার্কেটে আগুন লাগার ঘটনাও ঘটেছে।
সম্প্রতি আমরির ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে শহরের নার্সিংহোমগুলির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে অভিযানে নেমেছেন পুর কর্তৃপক্ষ। এখন পর্যন্ত অন্তত ১৬ টি নার্সিংহোম পরিদর্শন করা হয়েছে। কোনও ক্ষেত্রেই অগ্নিনির্বাপণের যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নজরে পড়েনি পুর কর্তৃপক্ষের। তাঁরাই জানিয়েছেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে ভিতরে থাকা রোগী, চিকিৎসক, স্বাস্থ্য কর্মীদের বাইরে বার হওয়ায় বিকল্প রাস্তাও নেই অধিকাংশ নার্সিংহোমেই। শহরে বসবাসের অনেক আবাসনে অবৈধ ভাবে গুদাম করা হয়েছে। ৬-১৩, ৪১-৪২-সহ অনেক ওয়ার্ডেই এ ধরনের অবৈধ কারবারের রমরমা। চার্চ রোডে যে ভবনে শনিবার আগুন লেগেছিল সেখানে একই ফ্লোরে বসবাসের ঘর এবং গুদাম রয়েছে। অনিয়ম বন্ধ করতে পুরসভা কড়া ব্যবস্থা নেবে বলে জানান ট্রেড লাইসেন্স বিভাগের মেয়র পারিষদ দেবশঙ্কর সাহা। তিনি জানান, কোথাও অবৈধ ভাবে গুদাম চালানো, অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা না করলে সংশ্লিষ্ট ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করা হবে। |