বিষমদ-কাণ্ডের জেরে এ বার ব্যবস্থা নেওয়া হল স্থানীয় পুলিশের বিরুদ্ধে। সংগ্রামপুরের ওই ঘটনায় উস্তি থানার ওসি দেবব্রত সেন, সংগ্রামপুর ফাঁড়ির ইন-চার্জ এএসআই মনোজ ঠাকুর এবং ওই ফাঁড়িরই তিন কনস্টেবলকে আলিপুর সদরে ‘ক্লোজ’ করা হয়েছে। এ
ছাড়াও মগরাহাট, উস্তি ও মন্দিরবাজার থানার তিন কনস্টেবলকে ‘ক্লোজ’ করা হয়েছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার লক্ষ্মীনারায়ণ মিনা বলেন, “আপাতত মগরাহাটের সার্কেল ইনস্পেক্টর সোমদেব বন্দ্যোপাধ্যায় উস্তি থানার দায়িত্বে থাকবেন। সংগ্রামপুর ফাঁড়িতে বদলি পুলিশকর্মীর ব্যবস্থা হচ্ছে।”
জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, নিয়মিত ভাটি ও ঠেকগুলিতে অভিযান না চালানো এবং নজরদারির গাফিলতিতে চোলাই কারবারের রমরমা হওয়ার অভিযোগে ওই পুলিশকর্মীদের ‘ক্লোজ’ করা হয়েছে। সংগ্রামপুরে খোঁড়া বাদশার চোলাইয়ের ঠেক থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বেই সংগ্রামপুর ফাঁড়ি। ওই এলাকায় ও তার আশপাশে খোঁড়া বাদশার বেশ কয়েকটি চোলাইয়ের ঠেক ছিল। চোলাই খেয়ে ১৭০ জনের মৃত্যুর পরে এ ব্যাপারে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ বারবার উঠেছে। গত ছ’মাসে ওই সব ঠেকে কোনও রকম অভিযানই চালানো হয়নি বলে অভিযোগ তুলেছিলেন স্থানীয় মানুষ। বিষমদ-কাণ্ডের বিভাগীয় তদন্তে এই বিষয়গুলি উঠে এসেছে রাজ্যের পুলিশ-কর্তাদের কাছে। তার জেরেই এই ব্যবস্থা বলে পুলিশ সূত্রের খবর। দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাশাপাশি বিষমদ-কাণ্ডের পরে প্রশাসনিক তৎপরতার নমুনা মিলেছে অন্য জেলাতেও। ভেজাল মদের কারখানার হদিস দিলেই পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে কোচবিহার জেলা প্রশাসন। জেলাশাসক মোহন গাঁধী বলেন, “নকল মদ তৈরির কারখানা কেউ হদিস দিতে পারলেই পুরস্কৃত করা হবে। জেলা আবগারি দফতরের সুপারিন্টেন্ডেন্টকে ওই ব্যাপারে প্রচারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’ সম্প্রতি পুরস্কারের জেরেই জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রচুর বেআইনি মদ আটক করা হয়। জেলা প্রশাসনের কর্তারা জানান, খবরের সত্যতা এবং গুরুত্ব বিচার করে পুরস্কারের অর্থমূল্য স্থির করা হবে।
দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলাতেও গত কয়েক দিন ধরে চোলাই ঠেকগুলিতে লাগাতার ‘অভিযান’ চলছে। কোথাও পুলিশ, কোথাও জনতা সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছে। শনিবার বর্ধমানের পূর্বস্থলী থানার বিদ্যানগর এলাকায় হানা দিয়ে বহু লিটার চোলাই ও চোলাই তৈরির সরঞ্জাম পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে। রবিবার বাঁকুড়া শহরের গোবিন্দনগরে একটি চোলাই ঠেকে হানা দিয়ে ভাঙচুর চালান মহিলারা। লাগোয়া আগয়া গ্রামের একটি চোলাই ভাটিতেও তাঁরা ভাঙচুর করেন। সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক কাশীনাথ মিশ্র। |