রেলের ইনস্টিটিউটগুলির পরিচালন সমিতির নির্বাচনে দীর্ঘদিন পরে আদ্রা বিভাগে বামপন্থী মেনস ইউনিয়নকে হারিয়ে জয়ী হল কংগ্রেসের মেনস কংগ্রেস। এই বিভাগের সাতটি ইনস্টিটিউটের সব ক’টিই মেনস কংগ্রেস দখল করল। আদ্রার ডিআরএম অমিতকুমার হালদার বলেন, “পরিচালন সমিতি ইনস্টিটিউটগুলি দেখাশোনা করে। রেলের নিয়ম অনুযায়ী এক জন আধিকারিকের তত্ত্বাবধানে ওই পরিচালন সমিতির নির্বাচন হয়। ইনস্টিটিউটগুলির সদস্য রেলকর্মীরা ভোট দেন। এ বার নির্বাচনে সাতটি ইনস্টিটিউটের পরিচালন সমিতিতে মেনস কংগ্রেসের মনোনীত প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন।”
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, রেল কর্মীদের অবসর সময়ে বিনোদনের জন্য এই ইনস্টিটিউটগুলি তৈরি করা হয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরে এই ইনস্টিটিউটগুলির ক্ষমতা ধরে রেখেছিল বামপন্থী রেলকর্মী সংগঠন মেনস ইউনিয়ন। গত দুই সপ্তাহ ধরে আদ্রা বিভাগের বিভিন্ন জায়গায় পর্যায়ক্রমে নির্বাচনগুলি হয়েছে। সদর দফতর আদ্রায় দু’টি এবং বাঁকুড়া, বার্নপুর, আনাড়া, ভোজুড়ি ও বোকারোতে এই সাতটি ইনস্টিটিউট রয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে ৯ জন করে পরিচালন সমিতির প্রার্থী ছিলেন। ঘটনা হল, ওই সাতটির মধ্যে আনাড়া, বোকারো ও আদ্রার একটি ইনস্টিটিউটে নির্বাচনে মেনস ইউনিয়ন প্রার্থীই দিতে পারেনি। ওই তিনটি ইনস্টিটিউটে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় মেনস কংগ্রেস জিতে যায়। মেনস কংগ্রেস নেতা সুব্রত দে’র দাবি, “তিনটি ইনস্টিটিউটে মেনস ইউনিয়ন প্রার্থীই দিতে পারেনি। বাকি চারটিতেও আমরাই জয়ী হয়েছি।”
দীর্ঘ দিন ধরে ক্ষমতা ধরে রাখার পরে এমন ফলের কারণ কী? মেনস ইউনিয়নের নেতা গৌতম মুখোপাধ্যায়ের দাবি, “এ বার নির্বাচনে পুরো সাংগঠনিক শক্তি নিয়ে লড়াই করা যায়নি।” বস্তুত নেতৃত্ব নিয়ে মেনস ইউনিয়নের মধ্যে দীর্ঘ সময় ধরেই অর্ন্তদ্বন্দ্ব চলছে। আর এই প্রেক্ষিতেই গৌতমবাবুর স্বীকারোক্তি, “আমাদের সংগঠনের অভ্যন্তরীণ সমস্যা চলছে। নির্বাচনে তার প্রভাব পড়েছে। এখন সমস্যা মিটিয়ে সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি করাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।” তাঁর সাফাই, “এই নির্বাচনে খুব কর্মীই অংশ নেন। তাই এই নির্বাচনের ফল সামগ্রিক ভাবে রেল কর্মীদের মনোভাব নয়।” মেনস কংগ্রেস নেতা সুব্রতবাবুর কটাক্ষ, “সাম্প্রতিক অতীতে রেল বোর্ডের স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য নির্বাচনে দক্ষিণ-পূর্ব রেলেরকর্মীরা আমাদের সংগঠনকে জিতিয়ে ছিলেন। তখন থেকেই মেনস ইউনিয়ন রেলকর্মীদের সমর্থন হারায়। এই নির্বাচনের ফল তাই ধারাবাহিকতা।” তাঁর অভিযোগ, “দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থেকেও ইনস্টিটিউটগুলির পরিকাঠামো উন্নয়ন-সহ নানা দিকে মেনস ইউনিয়ন ব্যর্থ। তাই রেল কর্মীরা এ বার ইনস্টিটিউটগুলির পরিচালন সমিতি আমূল বদলে দিয়েছেন।” |