বৈধ অনুমতি ছাড়াই পিএইচই-র (জনস্বাস্থ্য-কারিগরি দফতর) গুদাম থেকে পাইপ-সহ অন্যান্য সরঞ্জাম ম্যাটাডরে করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগে এক সিপিএম নেতা-সহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জে সাহপুর গ্রামে। এই ঘটনায় ওই এলাকায় তৃণমূল এবং সিপিএমের মধ্যে চাপানউতোরে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনস্থলে যায় পুলিশ। পিএইচই-র গুদাম থেকে দফতরের জিনিসপত্র চুরি হচ্ছিল বলে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন হিঙ্গলগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ।
হিঙ্গলগঞ্জ থানার ওসি পার্থ সিকদার বলেন, “দফতরের অনুমতি ছাড়াই গুদাম থেকে জিনিসপত্র ম্যাটাডরে করে অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হচ্ছিল। অভিযোগ পেয়ে ম্যাটাডরের চালক সেলিম মণ্ডল, খালাসি দীপাঞ্জন রায়, শ্রমিক সঞ্জয় বিশ্বাস, মহম্মদ সেলিম গাজি এবং দফতরের কর্মী মহম্মদ এলবাহারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মহম্মহ এলবাহার দু’বার হিঙ্গলগঞ্জ পঞ্চায়েতে সিপিএমের উপপ্রধান ছিলেন বলে পুলিশ সূত্রে জনা গিয়েছে। যদিও স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, চক্রান্ত করে তাদের দলের নেতাকে ফাঁসানো হয়েছে। এই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত কি না সে ব্যাপারে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাহপুর গ্রামে পিএইচই-র একটি গুদাম রয়েছে। দফতরে সূত্রে জানা গিয়েছে, গুদামের দায়িত্বে রয়েছেন গোপাল বিশ্বাস। দু’মাস আগে তিনি অন্যত্র বদলি হয়ে যান। এ দিন দুপুর ১২টা নাগাদ গুদাম থেকে প্রচুর পাইপ, তার, কল-সহ অন্যান্য জিনিসপত্র একটি ম্যাটাডরে তোলা হচ্ছিল। রবিবার ছুটির দিন। তাই সন্দেহ হয় গ্রামবাসীদের। কাছেই একটি স্কুলে পরিচালন সমিতির নির্বাচন থাকায় সেখানে পুলিশ ছিল। গ্রামবাসীদের একজন গিয়ে পুলিশকে সব জানান। সঙ্গে সঙ্গে প্রচুর লোকজন ও পুলিশ সেখানে এসে জড়ো হয়। গ্রামবাসীরা ম্যাটাডরটিকে ঘিরে ফেলে। মালপত্র নয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখতে চাইলে বেকায়দায় পড়ে যায় গাড়ির চালক ও অন্যরা। তাদের চেপে ধরলে জানায়, একজন ঠিকাদার তাদের সেখানে পাঠিয়েছে। খোঁজ নিলে দেখা যায় ওই ঠিকাদার এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না। পুলিশের জেরার মুখে শেষ পর্যন্ত তারা জানায়, স্থানীয় সিপিএম নেতা মহম্মদ এলবাহার গাজ তাদের গুদামের চাবি দিয়ে জিনিসপত্র নয়ে যেতে বলেছে। পুলিশ এরপর এলবাহার গাজি-সহ পাঁচজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে দফতরের আধিকারিককে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি জানান, গুদাম থেকে জিনিসপত্র বের করার অনুমতি কাউকে দেওয়া হয়নি। এর পরেই পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে।
পিএইচই-র হাসনাবাদ সাব ডিভিশনের সহকারী বাস্তুকার দেবজিৎ কুণ্ডু বলেন, “হিঙ্গলগঞ্জে দফতরের গুদাম থেকে জিনিসপত্র বের করার অনুমতি কাউকে দেওয়া হয়নি। প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে অভিযুক্তরা সকলেই অন্যায় কাজে জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া জন্য পুলিশকে বলা হয়েছে।’’ |