স্থানীয় পঞ্চায়েতের অনুমতি ছাড়াই করিমপুর রেগুলেটেড মার্কেটের একটি ভবন তৈরির কাজ শুরু করার অভিযোগ তুলে শুক্রবার রেগুলেড মার্কেট কর্তৃপক্ষকে ওই কাজ বন্ধ রাখার নোটিস দিল করিমপুর-১ পঞ্চায়েত। যদিও সেই নোটিস পেয়েও কাজ বন্ধ রাখেনি মার্কেট কর্তৃপক্ষ। এই নির্মাণ কাজের ফলে বিরাট প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়ল করিমপুরে স্থায়ী বাসস্ট্যান্ড তৈরির যাবতীয় পরিকল্পনা। এরপরে করিমপুরে আদৌ কোনওদিন বাসস্ট্যান্ড হবে কি না, সেই নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন প্রশাসনের কর্তা থেকে সাধারণ মানুষ সকলেই।
করিমপুর-১ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান কংগ্রেসের তারক সরখেল বলেন, “যেখানে এখন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে, সেখানে মার্কেটের দুই একর জমি নিয়ে বাসস্ট্যান্ড হবে বলে মাস কয়েক আগে প্রশাসনের কর্তাদের উপস্থিতিতে সর্বদলীয় একটি বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়। সে বিষয়ে একটি প্রস্তাবও জেলা প্রশাসনকে পাঠানো হয়। কিন্তু এখন যেখানে নির্মাণ চলছে সেটা বন্ধ না হলে কোনদিনই করিমপুরে বাসস্ট্যান্ড হবে না।” |
স্থায়ী বাসস্ট্যান্ড না থাকা করিমপুরের অন্যতম প্রধান সমস্যা। দোকানের সামনে কিংবা যত্রতত্র বাস দাঁড়িয়ে থাকা, ছোটখাটো দুর্ঘটনা, পথ চলতে গিয়ে পদে পদে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি করিমপুরের রোজনামচা। তবে মাসকয়েক আগে প্রশাসনের কর্তারা এলাকার রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি ও রেগুলেটেড মার্কেট কমিটির লোকজনকে নিয়ে কয়েক দফায় বৈঠক করেন। সেখানে রেগুলেটেড মার্কেট কমিটি বাসস্ট্যান্ড তৈরির জন্য জমি দিতেও রাজি হয়। করিমপুরের ১-এর বিডিও সুমন্ত রায় বলেন, “সেই সময় মার্কেট কর্তৃপক্ষ ২ একর জমি দেবে বলে ঠিক হয়। এই বিষয়ে একটা প্রস্তাবও জেলা প্রশাসনে পাঠানো হয়েছিল। সম্প্রতি জায়গা ভরাট করতে পঞ্চায়েত থেকে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে মাটিও ফেলা হয়। কিন্তু এখন যেখানে মার্কেট কর্তৃপক্ষ ভবন তৈরি করছে, সেটা হলে বাসস্ট্যান্ডের জন্য জমি পড়ে থাকবে মাত্র ১ একর। সেখানে বাসস্ট্যান্ড করা সম্ভব না।”
জেলা পরিষদের সদস্য সিপিএমের অনুপকুমার বিশ্বাস বলেন, “মার্কেট কমিটি বাসস্ট্যান্ডের জন্য একটি জায়গা দিতে রাজি হয়। পরিবহণ দফতর থেকে সেই জায়গায় সমীক্ষাও হয়েছে। সেখানে মার্কেট কমিটি যে ভাবে ভবন তৈরির কাজ করছে, তাতে আদৌ বাসস্ট্যান্ড করা যাবে কি না এ নিয়ে সন্দেহ আছে।”
তেহট্টের মহকুমাশাসক অচিন্ত্যকুমার মণ্ডল বলেন, “করিমপুরে স্থায়ী বাসস্ট্যান্ড না থাকায় ব্যাপক সমস্যা হয়। সম্প্রতি এক বৈঠকে মার্কেট কর্তৃপক্ষ জমি দিতে রাজি হয়েছিল, এখন সেখানেই ওরা একটা কাজ শুরু করেছে বলে স্থানীয় পঞ্চায়েত আমাদের জানিয়েছে। গোটা ঘটনাটি খতিয়ে দেখে জেলা প্রশাসনকে জানাব।” করিমপুর রেগুলেডেট মার্কেটের চেয়ারম্যান তথা নদিয়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমিসংস্কার) দেবাশিস সরকার জানান, সরকারি জায়গায় সরকারি কাজের জন্য পঞ্চায়েতের অনুমতি নেওয়ার দরকার নেই। তবে এ ক্ষেত্রে এই বিল্ডিং নির্মাণের থেকে বাসস্ট্যান্ডের বিষয়টি আগে গুরুত্ব পাবে। আর বাসস্ট্যান্ডের জন্য ২ একর জমিই লাগবে। তিনি বলেন, “এ ক্ষেত্রে দুই একর জমি বাসস্ট্যান্ডের জন্য ছেড়ে নির্মাণ কাজ হচ্ছে কি না, তা খোঁজ নিয়ে দেখছি। জমি এখনও হস্তান্তরিত না হলেও রেগুলেটেড মার্কেটের জায়গাতেই বাসস্ট্যান্ড হবে বলে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” |