|
|
|
|
ভাঙা ঠেকেই বিক্রি হচ্ছে চোলাই মদ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঘাটাল |
মগরাহাটে বিষমদ-কাণ্ডের প্রেক্ষিতে ঘাটাল মহকুমায় চোলাই মদের বিরুদ্ধে পুলিশ ও আবগারি দফতরের যৌথ তল্লাশি চলছেই। গত কয়েকদিন ধরে টানা অভিযানে ঘাটাল ও চন্দ্রকোনা থানা এলাকা থেকে প্রায় ৬ হাজার লিটার চোলাই মদ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ভেঙে দেওয়া হয়েছে একাধিক চোলাই মদের দোকান। কিন্তু গ্রেফতার হয়নি এক জনও। রাজনৈতিক দল ও পুলিশের সঙ্গে যোগসাজশেই এই সব অবৈধ চোলাই মদের বিক্রেতারা আগে থেকে অভিযানের খবর পেয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ সাধারণ মানুষের। আরও অভিযোগ, ভেঙে দেওয়ার কয়েকদিনের মধ্যেই ফের একই জায়গায় চোলাই মদের ঠেক গজিয়ে উঠছে। এই প্রবণতার কথা মেনে নিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত বলেন, “এটা যাতে না হয়, তার জন্য এ বার থেকে ধারাবাহিক অভিযান চালানো হবে।”
ঘাটাল মহকুমায় চোলাই তৈরি যেন কুটির শিল্প। দুধ-বিক্রির মতো পলিপ্যাকে চোলাই বিক্রি হয়। পুলিশ-আবগারি দফতরকে ‘মাসোহারা’ দিয়ে মহকুমা জুড়ে চোলাই মদের ব্যবসা চলছে রমরমিয়ে। বিষমদে এত লোকের মৃত্যুর পরেও তাতে ছেদ পড়েনি। গত বৃহস্পতিবার ঘাটালের ইড়পালা, গোপমহল, রত্নেশ্বরবাটি, দাসপুরের উত্তরবাড়, গৌরা-সহ একাধিক জায়গায় চোলাই মদের ঠেক ভেঙে দেওয়া হলেও ওই রাতেই ফের সেখানে চোলাই মদ বিক্রি শুরু হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। একই ভাবে শুক্রবার চন্দ্রকোনার মল্লেশ্বরপুর, গাড়া, রামজীবনপুর-সহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ১০-১৫টি মদের ভাটি ভেঙে দেওয়া হলেও চোলাই বিক্রি বন্ধ করা যায়নি। আবগারি দফতরের জেলা সুপারিন্টেন্ডেন্ট পরিমল দত্ত বলেন, “শুধু অভিযান চালালেই হবে না। চোলাইয়ের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা গড়ে তুলতে হবে।”
জনসচেতনতার কথা বললেই উঠে আসছে ‘প্রমীলা বাহিনী’র কথা। বছর খানেক আগে এই প্রমীলা বাহিনী সক্রিয় হয়ে মহকুমার শ’য়ে শ’য়ে চোলাই মদের ঠেক ভেঙে দিয়েছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে তারা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। অভিযোগ, পুলিশ-প্রশাসনের একাংশের বাধাতেই প্রমীলা বাহিনী মদের ঠেক ভাঙার অভিযান বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঘাটালের এক প্রমীলা বাহিনীর সদস্যা বলেন, “অভিযান বন্ধ করার জন্য রাজনৈতিক নেতা, পুলিশ-প্রশাসনের বিভিন্ন স্তর থেকে আমাদের কাছে উড়ো-ফোন আসত। নানা দিক থেকে চাপ আসায় একসময় আমরা সরে আসতে বাধ্য হই।” চোলাই মদ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগের অভিযোগ অবশ্য মানতে রাজি নন রাজনৈতিক নেতারা। বরং চোলাই মদের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা গড়ে তোলার পক্ষে ডাক দিয়েছেন তাঁরা। ঘাটালের তৃণমূল বিধায়ক শঙ্কর দোলই ও চন্দ্রকোনার সিপিএম বিধায়ক ছায়া দোলই বলেন, “এই সব বেআইনি ব্যবসা বন্ধ করতে এলাকার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন শুরু হবে।” |
|
|
|
|
|