কর্তব্যনিষ্ঠার মাসুল, ট্রাফিক পুলিশ বিধানসভার রোষে
বেআইনি পার্কিং-এর জন্য মন্ত্রী-বিধায়ককে জরিমানা করে জনতার বাহবা কুড়োলেওশেষ অবধি, বিধানসভার রোষের শিকার হল মেঘালয়ের ট্রাফিক পুলিশ বিভাগ।
শিলং শহরে যানজট সামলাতে পুলিশকে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমা, নগরোন্নয়ন মন্ত্রী আমপারিন লিংডো যানজটের শিকার হয়ে সময়মতো অনুষ্ঠানে পৌঁছাতে পারেননি। যানজটের ফলে, সাধারণ মানুষ তো বটেই, মন্ত্রী-আমলা-পুলিশ-সেনার গাড়িও রাস্তায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকছে। পরিস্থিতি সামলাতে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, গাড়ি থামিয়ে তোলাবাজি হোক বা বেআইনি পাকি, কাউকে রেয়াত না করে পথ পরিষ্কার রাখতে হবে।
পূর্ব খাসি পাহাড়ের এসপি এ আর মাওতো বলেন, “পুলিশকর্মীর সংখ্যা কম। অথচ গাড়ির সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাচ্ছে। ফলে যান নিয়ন্ত্রণ কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।এখন, একজন ট্র্যাফিক কর্মীকে অন্তত ৪৬৩টি গাড়ির গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। বিভাগে মাত্র ২৪০ জন কর্মী রয়েছেন। গুয়াহাটি-শিলং পথে বড় মালবাহী ট্রাকগুলির খারাপ হয়ে যাওয়া, বেআইনি ভাবে পার্কিং ও ওভারটেক করার ফলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে।”
মুখ্যমন্ত্রী ও এসপির কড়া নির্দেশ পেয়ে ট্র্যাফিক কনস্টেবলরা কড়া হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কড়া হওয়ার নমুনা: ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ডন বস্কো স্কোয়্যারে বেআইনি ভাবে গাড়ি দাঁড় করিয়ে রেখেছিলেন বিধায়ক তথা বিধানসভার অধিকার রক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান রনি ভি লিংডো। কর্তব্যরত কনস্টেবল, লালবাতি লাগানো গাড়ি দেখেও গাড়িতে জরিমানার স্লিপ লাগিয়ে দেন। সস্ত্রীক লিংডো এ ঘটনায় বেজায় রেগে যান। ওই কনস্টেবলকে নিজের পরিচয় দিয়ে, সেখানেই গাড়ি দাঁড় করানোর জন্য জোর করেন তিনি। কিন্তু, কনস্টেবল বিধায়কের কথায় রাজি হননি। বিধায়ককেই, জরিমানা দিয়ে গাড়ি সরিয়ে নিতে হয়।
১৫ ডিসেম্বর, গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী সালেং এ সাংমাকে নো-পার্কিং এলাকায় গাড়ি রাখায় জরিমানা দিতে হয়। মন্ত্রীর নতুন স্করপিওটি খিন্দাই লাডে দাঁড় করানো ছিল। কর্তব্যরত কনস্টেবল গাড়িটিকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ক্রেন-ট্রাক নিয়ে আসেন। মন্ত্রী তড়িঘড়ি এসে নিজের পরিচয় দেন। কিন্তু তাতেও পিছু হটেননি ওই কনস্টেবল। সটান মন্ত্রীর হাতে, নো-পার্কিং-এ গাড়ি রাখার জরিমানা বাবদ ১০০০ টাকার স্লিপ ধরিয়ে দেন। মন্ত্রীও টাকা দিয়ে গাড়ি ছাড়িয়ে চলে যান। প্রত্যক্ষদর্শীরা ওই পুলিশ কনস্টেবলকে বিস্তর বাহবা দেন। ঘটনার খবর সংবাদপত্রেও বের হয়। কিন্তু, মন্ত্রী পরে, জরিমানা দেওয়ার কথা অস্বীকার করেন। আইন ভাঙার ঘটনাও মানতে চাননি তিনি।
পরের ঘটনাটি ঘটে, উমফিরনাই এলাকার ৪৪ নম্বর জাতীয় সড়কে। দিনভর যানজট চলে এই রাস্তায়। যানজটের উৎস সন্ধানে গিয়ে দেখা যায়, ট্রাক থামিয়ে টাকা আদায় করা চলছে। কমফর্ট হোটেল থেকে পুলিশ এমন ছ’জন ‘আদায়কারী’কে গ্রেফতার করে। উদ্ধার হয় প্রায় ৩১ হাজার টাকা ও ‘কাউন্টার ফয়েল’ ছাড়াই জরিমানার আদায়ের ছাপানো বিল বই। ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, তাদের পাণ্ডা হল পুলিশ ইনস্পেক্টর মারবিড রিংজা। তার সঙ্গীরাও, জেলা পরিবহণ দফতরের কর্মী।
পুলিশের ভূমিকায় সাধারণ মানুষ যখন উৎফুল্ল তখনই বিধানসভার চিঠি আসে ট্র্যাফিক শাখায়। পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার আসা ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, মন্ত্রী-বিধায়কদের পরিচয় জেনেও পার্কিং নিয়ে বাড়াবাড়ি করার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিএসপি (সিটি) চেরি সাডাপ ও কর্তব্যরত কনস্টেবলদের বিধানসভার অধিকার কমিটির সামনে হাজির হতে হবে। নিরপেক্ষ ও নির্ভীকভাবে দায়িত্বপালন করার পরে, এমন চিঠি পেয়ে, বেজায় ক্ষুব্ধ পুলিশ বিভাগ।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.