মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ সত্ত্বেও কুলটির অধিকাংশ স্কুলে এখনও মিড-ডে মিল চালু হয়নি। কবে চালু করা যাবে, সে বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি মহকুমাশাসক, স্কুল পরিদর্শক ও পুর কর্তৃপক্ষ। তাঁরা সকলেই জানিয়েছেন, ফের একটি বৈঠক ডেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেই সঙ্গে সম্প্রতি মিড-ডে মিল চালু না হওয়া প্রায় ৬৪টি স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের কারণ দর্শানোর নোটিসও দেওয়া হয়েছে। এ দিকে, ওই সব স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের অভিযোগ, মিড-ডে মিল চালু করার ক্ষেত্রে বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। প্রশাসনিক কর্তারা নোটিস ধরিয়ে নিজেদের দায়িত্ব কাঁধ থেকে ঝেড়ে ফেলতে চাইছেন। সমস্যাগুলি সমাধানের চেষ্টা করছেন না।
কুলটি শিক্ষাচক্রে মোট ৮৪টি প্রাথমিক স্কুল রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৬৪টি স্কুলে মিড-ডে মিল দেওয়া হচ্ছে না। স্কুলে গিয়েও রান্না করা খাবারের স্বাদ পাচ্ছে না প্রায় দশ হাজার ছাত্র-ছাত্রী। অথচ সম্প্রতি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বর্ধমান জেলার প্রতিটি মহকুমাশাসক ও বিডিওদের নিয়ে সভা করে মিড-ডে মিল চালুর বিষয়ে বিশেষ নির্দেশ দিয়েছেন। সেই সভায় আসানসোলের মহকুমাশাসক সন্দীপ দত্ত মহকুমার যে সব স্কুলে মিড-ডে মিল চালু হয়নি, সেই সব স্কুলে দ্রুত চালু করার প্রতিশ্রুতিও দেন।
এর পরে প্রায় দু’মাস কেটে গিয়েছে। প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা হয়নি। কুলটি শিক্ষা চক্রের সহকারী স্কুল পরিদর্শক নুর আলির অভিযোগ, “প্রতিটি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে মিড-ডে মিল চালু করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ স্কুলেই এই ব্যবস্থা চালু হচ্ছে না।” তিনি বলেন, “আমরা প্রায় ৬৪টি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে মিড-ডে মিল চালু করতে না পারার জন্য কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছি।” |
এ দিকে, মহকুমাশাসক সন্দীপবাবু জানান, প্রধান শিক্ষকদের কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানোর পাশাপাশি দ্রুত মিড-ডে মিল চালুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সমস্যা মেটানোর জন্য পুর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আরও একটি বৈঠক করা হচ্ছে।
অন্য দিকে, স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের অভিযোগ, প্রশাসনিক কর্তারা তাঁদের নোটিস ধরিয়ে নিজেদের দায়িত্ব কাঁধ থেকে ঝেড়ে ফেলতে চাইছেন। স্কুলগুলিতে রান্নাঘর নেই। পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই। রান্নার সামগ্রী কিনে দেওয়া হয়নি। রান্না করার জন্য স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীও তৈরি হয়নি। তাঁদের কথায়, দূর-দূরান্ত থেকে স্কুলে পড়াতে গিয়ে শিক্ষকদের পক্ষে এ সব জোগাড় করা সম্ভব নয়।
স্কুল পরিদর্শক নুর আলি জানান, স্থানীয় পুরসভাকেই এ সব পরিকাঠামো গড়ে দেওয়ার কথা। তিনি বলেন, “আমি কর্তৃপক্ষকে বলেছি এ সবের ব্যবস্থা করতে।”
কুলটির পুর প্রধান তথা বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “প্রায় ২৫টি স্কুলে ইতিমধ্যেই ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। সেগুলিতে মিড-ডে মিল চলছে। বাকিগুলিতেও করে দেওয়া হবে।” যদিও কবে করা হবে, তা জানাতে পারেননি তিনি। যদিও তাঁর দাবি, “রান্না করার স্বয়ম্ভর গোষ্ঠী তৈরির দায়িত্ব স্থানীয় কাউন্সিলরকেই নিতে হয়।”
মিড-ডে মিল চালু না হওয়ায় প্রধান শিক্ষকদের কারণ দর্শানোর নোটিস ধরানোয় ক্ষুব্ধ এবিপিটিএ। সংগঠনের কুলটি শিক্ষা চক্রের সম্পাদক শৈবাল সেনগুপ্ত বলেন, “আমরা চাই, পড়ুয়ারা যেন দুপুরের খাবার পায়। কিন্তু পুরসভা পরিকাঠামো গড়ে না দিলে তা সম্ভব নয়।” |