কিশোরের গান গাইতে গাইতে বিশ্বরেকর্ড সহবাগের |
বীরু-জ্বরে কাঁপছে চেন্নাই থেকে মেলবোর্ন।
চেন্নাইয়ে রবিবার দর্শকরা নিয়মরক্ষার ম্যাচে মাঠে ভিড় জমাবেন একটা স্বপ্ন নিয়ে। আর এক বার কি দেখা যাবে বীরেন্দ্র সহবাগের তাণ্ডব?
আর মেলবোর্ন থেকে অ্যাডিলেড প্রস্তুত হচ্ছে অস্ট্রেলীয় পেস আক্রমণের সঙ্গে সহবাগের লড়াই দেখার জন্য। ডনের দেশে নিউজিল্যান্ড সিরিজ চলছে বটে, কিন্তু এখন থেকেই অজি প্রচারমাধ্যমে জায়গা করে নিয়েছেন সহবাগ। কোনও কাগজে প্রাক্তন লেগ স্পিনার স্টুয়ার্ট ম্যাকগিল মনে করিয়ে দিচ্ছেন, কী ভাবে সহবাগ তাঁর প্রথম বলটাই গ্যালারিতে ফেলে দিয়েছিলেন। কোনও কাগজে বা শিরোনাম হচ্ছে: বক্সিং ডে-তে এ বার প্যাটিনসন বনাম সহবাগ।
|
চেন্নাইয়ে ইরফান আবার ফ্লেচারের ক্রিকেট-ক্লাসের
বাধ্য ছাত্র। শনিবার। ছবি: এএফপি |
এক দিকে যখন উত্তাপ বাড়ছে, তখন তিনি কী করছেন? সহবাগ এ দিন সকালে চেন্নাই না পৌঁছনোয় প্র্যাক্টিস করেননি। কিন্তু ইনদওরে কোন মেজাজে তিনি ব্যাটিং করেছিলেন, তা বোঝা যাচ্ছে তাঁর সঙ্গীর কথা থেকে। বীরুর ২১৯ রানের ইনিংসের অনেকটা সময়ই তাঁর সঙ্গী ছিলেন সুরেশ রায়না। আজ সেই রায়না চেন্নাইয়ে এক অনুষ্ঠানে বলেন, “বীরুর সে দিন কোনও টেনশনই ছিল না। ও তো ব্যাট করতে করতে কিশোরকুমারের গান গাইছিল।” আপনিও কি সেই গানে গলা মিলিয়েছিলেন? রায়নার চটজলদি জবাব, “না, না। আমি তো তখন মাত্র ৩০ রানে ছিলাম।” অনুষ্ঠানে হাজির থাকা নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্ত বলেন, “আমাদের টিম এখন খুব ভাল খেলছে। অস্ট্রেলিয়াতেও ভাল করব।”
চেন্নাইয়েই এ দিন ছিল বোর্ডের বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। যেখানে পলি উমরিগড় পুরস্কার পেলেন রাহুল দ্রাবিড়। আর সারাজীবনের স্বীকৃতি হিসাবে সি কে নাইডু পুরস্কার পেলেন অজিত ওয়াড়েকর। অস্ট্রেলিয়া থেকে এক ভিডিও বার্তায় দ্রাবিড় বলেন, “আমার ভাল পারফরম্যান্সের পিছনে রয়েছে কঠোর পরিশ্রম। বছরের পর বছর ধরে যে পরিশ্রম করে চলেছি, তার ফল পেলাম।” দ্রাবিড় না থাকায় তাঁর বাবা-মা পুরস্কার নিলেন।
ওয়াড়েকর আবার পুরস্কার নিয়ে বলেন, “আমি অভিভূত। কলেজ টিমে তো আমি স্রেফ টুয়েলফথ ম্যান থাকতাম আর মাঠে জল বয়ে নিয়ে যেতাম।” আর এক ভিডিও বার্তার মাধ্যমে ওয়াড়েকরকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়া থেকে সচিন তেন্ডুলকর বলেছেন, “উনি ক্রিকেটারদের মানসিকতাটা খুব ভাল বুঝতেন। সেরাটা বার করে আনতে পারতেন।” ম্যাকগিল আবার নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া টেস্টের রির্পোটের শুরুতেই সহবাগকে টেনে এনেছেন। লিখেছেন, “টেস্টের প্রথম দিন ৪৫.৫ ওভারে গোটা নিউজিল্যান্ড দল করেছিল ১৫০। আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ৪৭ ওভারে সহবাগের রান ছিল ২১৯। ৪৫.৫ ওভারের শেষে সহবাগ একাই তোলে ২১৫।” |
এর পরই অতীত অভিজ্ঞতা টেনে এনে ম্যাকগিল লিখছেন, “ওয়ান ডে হোক বা টেস্ট, সহবাগ কিন্তু একই স্টাইলে ব্যাট করে। নতুন বোলার বলে একটু দেখে-টেখে মারব, এমন ভাবনা ওর মধ্যে থাকে না। মেলবোর্নে আমার প্রথম বলটাই ও মিডউইকেটের উপর দিয়ে গ্যালারিতে পাঠিয়েছিল। ও আমাকে সে বার যত দূর পাঠিয়েছিল, অত দূর ব্রায়ান লারাও কখনও পাঠাতে পারেনি।” অস্ট্রেলীয় তরুণ পেস আক্রমণকে সতর্ক করে দিয়ে ম্যাকগিল বলছেন, নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে বল করা আর ভারতীয়দের বিরুদ্ধে বল করাটা মোটেই এক কাজ হবে না।
ভারতীয়দের, বিশেষ করে সহবাগকে বল করাটা যে কী জিনিস, তা এখন টের পাচ্ছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলাররা। ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজের নিয়মরক্ষার শেষ এক দিনের ম্যাচের আগে সহবাগ-দুঃস্বপ্ন যে তাড়া করছে ক্যারিবিয়ানদের, তা নিয়ে প্রশ্ন নেই।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে শেষ এক দিনের ম্যাচ নয়। নজরটা এখন ঘুরে গিয়েছে আসন্ন অস্ট্রেলিয়া সফরের দিকে। অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছে দ্রাবিড়-সচিনরা প্র্যাক্টিস শুরু করে দিয়েছেন ইতিমধ্যেই। বাকি টিমও চেন্নাইয়ে ম্যাচ খেলে উড়ে যাবে ক্যাঙারুদের দেশে। তার আগে নিয়মরক্ষার ম্যাচে কয়েকটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট। যেমন মনোজ তিওয়ারি বা ইরফান পাঠানকে এক বার সুযোগ দেওয়া হতে পারে।
|
ক্রিকেট থেকে ছুটি নিয়ে রাঁচির কাছে সিল্লিতে
আদিবাসীদের সঙ্গে ফুটবল খেললেন ধোনি। ছবি: পিটিআই |
সুযোগ পেয়েই আগের ম্যাচে ভাল বল করা লেগ স্পিনার রাহুল শর্মা এ দিন বলেছেন, “আমাদের বোলিং কোচ এরিক সিমন্সের কাছ থেকে আমি অনেক সাহায্য পেয়েছি। আমার বোলিংয়ে কী বৈচিত্র আনা যেতে পারে, তা নিয়ে আমি ওর সঙ্গে আলোচনা করেছি। ওর টিপস আমাকে খুব সাহায্য করেছে।” গত দু’মাস ধরে টিমের সঙ্গে ঘুরেই যাচ্ছিলেন রাহুল। কিন্তু সুযোগ পাচ্ছিলেন না এই লেগ স্পিনার। তখন কি ভেঙে পড়েছিলেন? রাহুলের জবাব, “একদমই ভেঙে পড়িনি। নেটে প্র্যাক্টিস করে গিয়েছি আর নিজের বোলিংকে আরও ভাল করার চেষ্টা করেছি।” |