আজ সাফ ফাইনাল
ভাইচুং-যুগোত্তর প্রথম ট্রফি জিততে মরিয়া নবিরা
ঞ্চ তৈরি। শেষ কামড় দেওয়ার জন্য সুনীল-জেজে-নবিরাও প্রস্তুত। সাফ কাপ নিজেদের আলমারিতে রেখে দেওয়ার জন্য মরিয়া ভারত। আর সেই কাজে সফল হলে একটা নতুন দিগন্তও খুলে যাবে ভারতীয় ফুটবলে ভাইচুং ভুটিয়া-যুগোত্তর প্রথম আন্তর্জাতিক খেতাব।
এই টুর্নামেন্টে ছ’টা দেশের কোচ বিদেশি। কিন্তু যে দু’টো মাত্র দলের স্বদেশীয় কোচ, রবিবার জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে ফাইনালে তারাই মুখোমুখি ভারত ও আফগানিস্তান। যে-ই শেষ হাসি হাসুক, ইতিমধ্যেই প্রমাণ হয়ে গেছে, সাফের সংসারে এখনও দেশি কোচেদেরই রমরমা।
স্যাভিও মেদেইরা বনাম ইউসেফ কারগারের পাশাপাশি ফাইনালে আরও একটা শ্রেষ্ঠত্বের জন্য লড়াই হবে। দু’দলের দুই সেরা স্ট্রাইকার সুনীল ছেত্রী বনাম বলাল অ্যারেজোর মধ্যে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার লড়াই। দু’জনেরই এখনও পর্যন্ত ৬টা করে গোল ঝুলিতে।
দু’জনেই অবশ্য সেটা মানতে চাইছেন না। সুনীল যেমন এ দিন বলে দিলেন “ফাইনালটা দু’দলের কাছেই ‘বিগ’ ম্যাচ। দক্ষিণ এশীয় ফুটবলে শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের লড়াই। সে জন্য নিজের গোল সংখ্যা বাড়ানোর থেকে আমার নজর বেশি থাকবে দলকে জেতানোর দিকেই।” অ্যারেজোও প্রায় অনুরূপ কথা বললেন। বাড়তির মধ্যে অবশ্য একটা তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করলেন আফগান ফুটবলার। “যুদ্ধগ্রস্ত দেশবাসীর মুখে হাসি ফোটাতে আমরা কাপটা নিজেদের দেশে নিয়ে যেতে চাই। তাই আমি ফাইনালে গোল পাই বা না-পাই, আফগানিস্তান যেন কাল জেতে।”
সুনীলকে মার্ক করার কথা কী ভাবছেন? প্রশ্ন হলে আফগান কোচ বললেন, “সুনীলের উপর তো নজর রাখা হবেই। তবে আমার ছেলেদের বলেছি, নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটাই খেলবে। কারণ শুধু সুনীল একা তো নয়, ভারতের অন্য অনেক ফুটবলারও এই টুর্নামেন্টে ধারাবাহিক ভাল খেলছে। সে জন্য আমাদের টিমগেমের উপর ভরসা রেখেই জিততে হবে, প্রতিদ্বন্দ্বী দলের বিশেষ কোনও প্লেয়ারের কথা না ভেবে।”
সুনীল-নবি: ভারতের জোড়া ফলা।
ঠিকই বলেছেন তিনি। সুনীল ছেত্রী রোজ-রোজ গোল করে এই টুর্নামেন্টে ভারতের চারটে ম্যাচেই সেরা-র পুরস্কার যতই পান না কেন, স্যাভিওর দলের সেরা ফুটবলটা খেলছেন কিন্তু সুনীল নন তাঁর নাম রহিম নবি। ফাইনালের চব্বিশ ঘণ্টা আগে যিনি শান্ত ভঙ্গিতে বললেন, “ফাইনালটাও জিততে হবে আমাদের। নইলে পরপর এত ম্যাচ জিতে ভারতের ফাইনালে ওঠাকে কেউ মনে রাখবে না। রানার্সকে কেউ মনে রাখে না। চ্যাম্পিয়নই সব নিয়ে যায়। সে জন্য কাল সুনীল গোল করল, না আমি গোল করলাম সেটা বড় কথা নয়। দরকার টিমের জয়।”
ঘরের মাঠে ভারতীয় দলকে ফাইনালে চাপে রাখতে প্রতিদ্বন্দ্বী কোচ অবশ্য কোনও চেষ্টার ত্রুটি রাখছেন না। এ দিন ভারতকে সটান ‘ফাইনালে ফেভারিট’ বলে দিয়ে কারগার স্যাভিওর ছেলেদের উপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে রাখলেন। বললেন, “কোনও সন্দেহই নেই যে, ফাইনালে ওরাই ফেভারিট। নিজেদের মাঠে খেলছে। গোটা স্টেডিয়াম সমর্থন করবে। আমরা এমনিতেই আন্ডারডগ। তার উপর এই প্রথম বার আমরা ফাইনাল খেলছি। চাপ আমাদের উপরই বেশি।”
স্যাভিও প্রতিদ্বন্দ্বী কোচের গেমসম্যানশিপ ধরে ফেলেছেন বলেই মনে হল। কারণ ভারতীয় কোচ বললেন, “ফাইনালের আগে ওরা যতই আমাদের উপর মানসিক চাপ তৈরির চেষ্টা করুক, আমার ছেলেরা কিন্তু কোনও রকম চাপে নেই। ওরা নিজেদের কাজ কী সেটা ভাল মতোই জানে। এই টুর্নামেন্টে প্রায় কোনও প্র্যাক্সিস ছাড়াই আমরা খেলছি। তা সত্ত্বেও একটার পর একটা ম্যাচ জিতে ফাইনালে উঠেছি। এখান থেকে আর খালি হাতে ফিরতে চাই না আমরা কেউ। নিজেদের সেরাটা দিয়েই ছেলেরা টিমকে ফাইনালে তুলেছে। দারুণ প্রশংসনীয়। আশা করি, কাল ফাইনালেও ওরা প্রত্যেকে মাঠে একশো ভাগ উজাড় করে দিয়ে কাপও জিতবে।”
সুনীল-গাউলি-ক্লাইম্যাক্স-নবিদের প্রশংসা করার পাশপাশি ভারতীয় কোচ অবশ্য এত ঘনঘন ম্যাচ খেলতে হওয়ার জন্য নিজের ক্ষোভও উগরে দিলেন। এমনও বলে দিলেন, সিনিয়র ফুটবলারদের কঠিন সূচির কথা মাথায় রেখে কর্তাদের উচিত সাফ টুর্নামেন্ট অনূর্ধ্ব তেইশদের জন্য করা। “গোটা টুর্নামেন্টে এক দিন অন্তর ম্যাচ খেলতে হচ্ছে আমাদের। সাফ কাপের আগে-পরে আই লিগ চলছে। ফুটবলারদের এখান থেকে ফিরেই ক্লাবের হয়ে সেখানে খেলতে হবে। সে জন্য সাফ কাপকে আমার মতে তেইশের কম বয়সিদের টুর্নামেন্ট করে দেওয়া উচিত। তা হলে সিনিয়ররা আরও ভাল খেলবে এর চেয়ে আরও বড়মাপের টুর্নামেন্টে। তাতে জাতীয় দলেরই লাভ।”
তা হলে কি সাফের সংসারে কাল শ্রেষ্ঠত্ব পেলেও সুনীল-নবিদের আসল শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ হবে না?




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.