শিলিগুড়ি থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরে মহানন্দা অভয়ারণ্যের বনবস্তি চমকডাঙি এলাকায় নতুন পর্যটন কেন্দ্র গড়ার কাজে নামলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। অ্যাসোসিয়েশন অব কনজারভেশন অ্যান্ড ট্যুরিজম-এর কর্মকর্তা রাজ বসুর মতো উৎসাহীদের প্রস্তাব মেনে ওই কাজ করার ভাবনাচিন্তা হয়েছে। তাতে প্রত্যন্ত ওই বনবস্তির বাসিন্দাদের সামিল করা হবে। গড়ে তোলা হবে ‘মডেল ভিলেজ’। বনবস্তির বাসিন্দাদের বাড়িতেই পর্যটকরা থাকতে পারবেন। শনিবার সেই উদ্যোগেরই অনুষ্ঠানিক সূচনা হল।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী, শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু, বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন, শিলিগুড়ির মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন বার্লিনের বাসিন্দা ভ্রমণ কাহিনির লেখক দম্পতি রেনাট লজ এবং স্টিফান লজ, বাংলাদেশের ইশতিয়াক শাহরিয়ার, রাজেন বালি, গৌরীশঙ্কর ভট্টাচার্যের মতো দেশ বিদেশের অতিথিরা। ওই এলাকাটি মহানন্দা অভয়ারণ্যের মধ্যে পড়ে। সেখানে পর্যটন কেন্দ্র গড়তে রাজ্য বন দফতর তো বটেই, কেন্দ্রের বন ও পরিবেশ মন্ত্রকের ছাড়পত্র দরকার। বনমন্ত্রী সেই অনুমতির ব্যাপারে উদ্যোগী হওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। বহু দেশ ভ্রমণে অভিজ্ঞ রেনাট এবং তাঁর স্বামী স্টিফান তো এমন জায়গা দেখে উচ্ছ্বসিত। গৌতমবাবু বলেন, “বনাঞ্চল এবং বন্যজন্তুদের বসবাসের পরিবেশ রক্ষা করেই এখানে পর্যটন হাব গড়ে তোলা হবে। স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়িতেই পর্যটকরা থাকতে পারবেন।” তিনি জানান প্রাথমিক ভাবে আড়াই কোটি টাকা খরচ করা হবে। বনমন্ত্রীও জানিয়েছেন, বনাঞ্চলের আইন কানুন মেনে কী ভাবে এই প্রকল্প করা হবে তা তারা বিস্তারিত আলোচনা করছেন।
শিলিগুড়ি থেকে সেবকগামী ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে ১৫ কিলোমিটার পথ। সেখান থেকেই শুরু শাল, শিশু, চিলৌনির বন। আরও ৫ কিলোমিটার বনপথ পেরিয়ে নদীর ধারে ডাবগ্রাম ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রত্যন্ত বনবস্তি চমকডাঙি। নীল আকাশ, বিস্তীর্ণ তিস্তার চর। ধানের খেত, নদীর চরে কাশের বন পেরিয়ে দূরে পাহাড় দেখা যায়। আকাশ পরিষ্কার থাকলে দূরের পাহাড়গুলির মাঝখান দিয়ে বরফে ঢাকা শৃঙ্গ উঁকি মারে।
কী ভাবে পর্যটন কেন্দ্র গড়া হবে? রাজ বাসু জানান, প্রাথমিক ভাবে গ্রামের ২০ টি বাড়িতে পর্যটকদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা হবে। এখানকার শিল্প সংস্কৃতির সঙ্গে পর্যটকরা পরিচিত হবেন। লাগোয়া লালটং গ্রামে একই ভাবে পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থা হবে। চমকডাঙির ৩ একর জায়গায় প্রাথমিক ভাবে টুরিস্ট রিট্রিট করার কথা ভাবা হয়েছে। বনাঞ্চলের পরিবেশ কঠোর ভাবে রক্ষা করা হবে। রেনাট লজ, স্টিফ্যান লজদের মতো অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। এখানে পর্যটকরা প্রকৃতির মধ্যে কাটাতে পারবেন। নৌকা বিহার, যোগ অভ্যাসের ব্যবস্থা থাকবে। |