বাঁধের বরাদ্দ পড়ে বছরভর
বাঁধ তৈরির টাকা এক বছর ধরে পড়ে রয়েছে। অথচ জমি অধিগ্রহণ নিয়ে টালবাহানার জেরে মালদহের রতুয়ায় ফুলহারের বাঁধ তৈরির কাজ থমকে রয়েছে। গত বছরই ওই বাঁধ ভেঙে যায়। চলতি বছরে বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে জল ঢোকায় এলাকার প্রায় দুই লক্ষাধিক মানুষ বানভাসি হন। তার পরেই উত্তর মালদহের সাংসদের হস্তক্ষেপে বাঁধ তৈরির টাকা বরাদ্দ হয়। ১৩০০ মিটার দীর্ঘ নতুন বাঁধ তৈরির সিদ্ধান্তও হয়। কিন্তু জমি অধিগ্রহণ না-হওয়ায় কাজে নামতে পারেনি সেচ দফতর। গত মঙ্গলবার এই ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বৈঠক হয়। সেখানে অবশ্য গ্রামের বাসিন্দারা জমি দিতে রাজি হয়েছেন। তাহলে এতদিন জমি সংগ্রহ করা নিয়ে ঢিলেমি হল কেন সেই প্রশ্ন উঠেছে। উত্তর মালদহের সাংসদ মৌসম বেনজির নূর বলেন, “রতুয়ার মানুষকে বন্যার হাত থেকে বাঁচাতে এক বছর আগে নাবার্ড থেকে ৭ কোটি টাকা নিয়ে এসেছিলাম। এতদিনেও বাঁধের জন্য জমি জোগাড়ই করতে পারল না সেচ দফতর। আসলে সেচ দফতর বাঁধ তৈরিতে ঢিলেমি করে বর্ষার আগে কাজ শুরু করতে চাইছে। আজ জেলা প্রশাসন যে উদ্যোগ নিয়েছে সেটা কয়েক মাস আগে নেওয়া হলে বাঁধের কাজ শুরু হয়ে যেত।” জেলাশাসক শ্রীমতি অর্চনা বলেন, “বাঁধের জন্য জমি দিতে রতুয়ার বাসিন্দারা রাজি হয়েছেন। দু’একদিনের মধ্যে রতুয়ার বিডিও, দুই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে বাঁধের জন্য জমি শনাক্ত করতে যাবেন। দ্রুত বাঁধের কাজ শুরু করা হবে।”
সেচ দফতরের সুপারিনটেনডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার বাসুদেব চৌধুরি বলেন, “জমির সমস্যার জন্যই রতুয়ায় ১৩০০ মিটার বাঁধের কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। তবে বাঁধের জন্য জমি দিতে ওই এলাকার মানুষ রাজি হয়েছেন। জমি পেলেই বাঁধের কাজ শুরু করে দেব।” রতুয়ার বিধায়ক রহিম বক্সি বলেন, “যেখান দিয়ে বাঁধ হবে মঙ্গলবার সেই জমির মলিকদের ডেকেছিল জেলা প্রশাসন ও সেচ দফতরের কর্তারা। বৈঠকে সব জমির মালিকরা আসেননি। যারা এসেছিলেন তাঁরা জমি দিতে রাজি হয়েছেন। ১৭ ডিসেম্বর ফের বৈঠক ডাকা হয়েছে।” গত বছরই বাঁধ ভেঙে গিয়েছিল। এ বছর জোড়াতালি দিয়ে সেই ভাঙা বাঁধ মেরামত করে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছিল সেচ দফতর। ফুলহার নদীর জলের তোড়ে এবার সেই বাঁধ ভেঙ্গে যায়। বাঁধের ১১০০ মিটার এলাকা জলের তোড়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। আর সেই ভেঙে যাওয়া বাঁধের ভিতর দিয়ে রতুয়া ও আশেপাশের বিস্তীর্ণ এলাকা এবার প্লাবিত হয়ে পড়ে। জলবন্দি হয়ে পড়েন ২ লক্ষাধিক মানুষ। এখনও বাঁধের সেই ভাঙা অংশ উন্মুক্ত হয়ে পড়ে আছে। জমি অধিগ্রহণে বিলম্বের জন্য নতুন সরকারি নিয়মকেই দায়ী করেছেন সেচ দফতরের একাংশ। বিগত বছরের নিয়ম মেনে জেলার স্পেশাল এলএ দফতর বাঁধ তৈরির জন্য কী পরিমাণ জমি লাগবে তা নির্ধারিত করে দু’মাস আগে রাজ্য সরকারের কাছে পাঠিয়ে দেয়। স্পেশাল এলএ-র পাঠানো জমি অধিগ্রহণের কাগজ রাজ্য সরকার ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছে। পাশাপাশি নতুন নির্দেশ পাঠিয়েছে, যে দফতরের জমি লাগবে সেই দফতরকেই জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট দফতরকেই জমি চেয়ে রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করতে হবে। সেটি মন্ত্রিসভায় পাশ হওয়ার পরে সংশ্লিষ্ট জেলার স্পেশাল এলআর জমি অধিগ্রহণ করে সেই দফতরের হাতে তুলে দেবে। নতুন নির্দেশিকার বেড়াজালে সেচ দফতর বাঁধের জমির মাপজোক শুরু করতে পারেনি বলে কয়েকজন আধিকারিক দাবি করেছেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.