দলবিরোধী কাজের অভিযোগে তাঁকে সতর্ক করা হয়েছিল। গোষ্ঠী কোন্দলে তিনি দলে অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে পড়েন। এনজেপি এলাকায় দলের মাটি ফের মজবুত করতে সেই সিটু নেতা দিবস চৌবেকে এনজেপি-ফুলবাড়ি জোনাল কমিটির সম্পাদক পদে বসাল সিপিএম। রবিবার সূর্যসেন কলোনির বাল্মীকি বিদ্যাপীঠে ওই কমিটির জোনাল সম্মেলনে সম্পাদক উদয় দাসকে সরিয়ে দিয়ে শুধুমাত্র কমিটির সদস্য করা হয়েছে। টানা তিনবার উদয়বাবু ওই পদে ছিলেন। ২০০৭ সালে জোনালের শেষ সম্মেলন হয়েছিল। সিপিএম সূত্রের খবর, এলাকায় দলের একের পর এক ভরাডুবি, দুটি গোষ্ঠীর টানা দ্বন্দ্বের পর এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। তার উপরে দলের একাংশ নেতার বিরুদ্ধে তোলাবাজি থেকে দাদাগিরি মত অভিযোগ ওঠায় অস্বস্তিতে পড়তে হয় সিপিএমকে। একসময় সিপিএমের দূর্গ বলে পরিচিত ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি বিধানসভায় জিতে রাজ্যের উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী হন তৃণমূল কংগ্রেসের দার্জিলিং জেলা সভাপতি গৌতম দেব। শুধু তাই নয়, তৃণমূল এবং কংগ্রেস জোটের দাপটে এনজেপি’র শ্রমিক সংগঠন থেকে পুরসভার ওয়ার্ড, পঞ্চায়েত সব কিছুতেই কতৃর্ত্ব হারায় সিপিএম। তাই এলাকায় ‘প্রভাবশালী’ বলে পরিচিত দিবসবাবুকে জোনাল সম্পাদক করে দলকে ফের চাঙ্গা করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। শুধু সম্পাদক বদল নয়। পুরানো কমিটির পাঁচ জনকে সরিয়ে জোনালের আমন্ত্রিত সদস্য করা হয়েছে। এর মধ্যে দিগেন্দ্র নাথ সরকার, প্রাক্তন কাউন্সিলর গোলাপ রায়ও আছেন। ১৯ জনের নতুন কমিটিতে পাঁচটি নতুন মুখও আনা হয়েছে। দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য জীবেশ সরকার শুধু বলেছেন, “এনজেপি এলাকায় পার্টি এখন অনেক ঐক্যবদ্ধ। পুরানো সব কিছুই এখন অতীত। আগের সম্পাদকের বয়স হয়েছে। তাই দিবস চৌবেকে নতুন সম্পাদক করা হয়েছে।” উল্লেখ্য, জেলা হিসাবে এই জোনাল কমিটি জলপাইগুড়ির মধ্যে পড়লেও পার্টিগত ভাবে কমিটির দায়িত্বে দার্জিলিং জেলা সিপিএম। সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে, এনজেপি-ফুলবাড়ি এলাকায় দলের অবস্থা যে সত্যিই শোচনীয় তা জোনাল কমিটির সম্মেলনে আলোচনা হয়েছে। এনজেপি এলাকায় গোষ্ঠী কোন্দল মেটাতে জেলা নেতৃত্ব থেকে শুরু করে রাজ্য নেতৃত্ব সদর্থক ভূমিকা পালন করেনি বলা হয়েছে। নিরপেক্ষ ভাবে সমস্যার সমাধানের বদলে পক্ষপাত করা হয় বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। রাজ্যে ক্ষমতা হারানোর পর ওই নেতারা পার্টির কাজে অনীহা দেখাচ্ছেন। ডাবগ্রাম-১, ২ পঞ্চায়েত ও পুরসভার ৫টি ওয়ার্ডগুলি একসময় রেকর্ড ভোটে জিতে দলের জেলা কমিটির পুরস্কার পেলেও বর্তমানে একটিতেই দল ক্ষমতায় না থাকায় জোনালের নেতাদের ব্যর্থতাকেই দায়ী করা হয়েছে। এনজেপি, ফুলবাড়ি, ডাবগ্রামের মত এলাকায় শ্রমিক সংগঠনকে সামনে রেখেই একসময় সিপিএম এলাকায় শক্ত সংগঠন গড়ে। এখন আর সেই অবস্থা নেই। শ্রমিকেরা অনেকেই তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনে নাম লিখিয়েছেন। দলের শ্রমিক সংগঠনও দ্বিধা বিভক্ত। এনজেপির এক সিপিএম নেতা জানান, ফের শক্ত সংগঠন গড়তেই দিবসবাবুকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। |