আমাদের স্কুল
ইছাপুর গার্লস হাইস্কুল

প্রতিষ্ঠা - ১৯৩৬। ছাত্রীসংখ্যা প্রায় ১৬০০।
শিক্ষিকা- ৫৩ জন

অস্ত্র কারখানার পাশে চালাঘর বানিয়ে তৈরি হয়েছিল মেয়েদের স্কুল। কারখানার কর্মীদের পরিবারের মেয়েদের প্রাথমিক শিক্ষার কথা মাথায় রেখেই। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে কারখানার চারপাশে সতর্কতা জারি হল। সামরিক প্রয়োজনে পড়ুয়াদের ছাড়তে হল স্কুলবাড়িটিও। যুদ্ধ থেমে গেলে ১৯৪৫ সালে ফের বসল স্কুল। পাশের আরও একটি প্রাথমিক স্কুলও এই স্কুলের সঙ্গে এসে মিলল। ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াতে লাগলেন স্থানীয় শিক্ষানুরাগীরাই। যুদ্ধের বাধা অতিক্রম করেও টিকে যাওয়া সেই স্কুলই আজকের ইছাপুর গার্লস হাইস্কুল। আছে নিজস্ব পাঠাগার, ল্যাবরেটরি এবং ছাত্রীদের বয়ঃসন্ধিকালীন সমস্যা নিয়ে কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা।


পরিপূর্ণ শিক্ষাই
আমাদের উদ্দেশ্য

রেশমী ভট্টাচার্য
১৯৩৬ সালে অঙ্কুরিত চারাগাছটি আজ বিশাল মহীরুহে পরিণত। শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী, ছাত্রী-অভিভাবকদের মেলবন্ধনে যে কোনও জটিলতাকে খুব সহজেই সামলাতে পারি আমরা। ৭৫ বছরের পুরনো এই স্কুলটিতে আমি প্রধান শিক্ষিকা হিসাবে যোগ দিয়েছিলাম ২০০৮ সালে। ইছাপুরে মেয়েদের স্কুল হিসাবে আমাদের স্কুল যথেষ্ট সুনামের দাবি রাখে। পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত প্রতিটি ক্লাসেই কম্পিউটারকে সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ছাত্রীর সংখ্যাও ক্রমবর্ধমান। প্রতিটি বিষয়ের জন্য রয়েছেন একাধিক অভিজ্ঞ শিক্ষিকা। একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে কলা, বাণিজ্য ও বিজ্ঞান তিনটি বিষয়েই পড়ানো হয়। এখন আমাদের স্কুলে মোট ৫৩ জন শিক্ষিকা। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের ফলও যথেষ্ট ভাল। এ জন্য অবশ্য প্রাক্তন প্রধান শিক্ষিকা মৈত্রেয়ী ভট্টাচার্যের অবদান অনস্বীকার্য। শক্ত হাতে স্কুলের হাল ধরেছিলেন তিনি। গত কয়েক বছর ধরেই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে যথেষ্ট ভাল ফল হচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা, আমরা যা শেখাতে চাইছি, ছাত্রীরা তা সহজে নিতে পারছে কি? সেই দিক থেকে আমরা অবশ্যই সফল বলে দাবি করতে পারি।
শিক্ষিকারা শুধু অভিভাবকই নন, ছাত্রীদের বন্ধুও বটে। এই সহজ সত্যটা আমাদের ছাত্রীরা বোঝে। তাই, দেওয়া আর নেওয়ার মাঝখানে কোনও প্রতিবন্ধকতা নেই। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের আগে পুরনো প্রশ্নপত্র ও টেস্ট-পেপার থেকে প্রশ্ন ধরে ছাত্রীদের পড়ানো হয়। পড়াশোনার সঙ্গে সঙ্গে চলে মেধা পরীক্ষাও। পাঠাগারের জন্যেও সপ্তাহে নির্দিষ্ট ক্লাস থাকে। পড়াশোনা ও আচরণগত বিষয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হয়।
তবে, শুধু লেখাপড়া নয়, বিভিন্ন শিক্ষামূলক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়। তাতে ছাত্রীরা অংশগ্রহণ করে। আমি তো মাত্র তিন বছর এই স্কুলে এসেছি। স্কুল নিয়ে অনেক আশা, স্বপ্ন থাকলেও এই অল্প সময়ে সব করে উঠতে পারিনি। আগে আমাদের স্কুলে ক্লাসঘরের সংখ্যা খুবই কম ছিল। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি নতুন ক্লাসঘর তৈরি হয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তির পরিস্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বয়ঃসন্ধি কালের সমস্যাগুলি নিয়ে ছাত্রীরা যাতে খোলাখুলি আলোচনা করতে পারে, তার জন্য কাউন্সেলিংয়েরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আমার চোখে

নিশা কাঁড়ার
প্রথম দিন যখন স্কুলে আসি, তখন মনে একটা অজানা ভয় আর আশঙ্কা ছিল। কিন্তু তখন বুঝিনি, স্কুলটা এত আনন্দের জায়গা হয়ে উঠবে। পঞ্চম শ্রেণিতে এই স্কুলে ভর্তি হয়েছিলাম। রোজ স্কুলে আসাটাই ছিল আমার কাছে কষ্টের। কিন্তু কী ভাবে জানি না, অল্প দিনের মধ্যেই স্কুলে না এলে মন খারাপ হতে লাগল। ধীরে ধীরে দিদিমণি থেকে সহপাঠী সকলেই খুব কাছের হয়ে গেল। এখন দিনের একটা দীর্ঘ সময় স্কুলেই কাটে। এটাই আমার কাছে দ্বিতীয় বাড়ি। যে কোনও সমস্যায় দিদিমণিরা হাত বাড়িয়ে দেন। এর থেকে বড় আশ্রয় আর কী হতে পারে! পরীক্ষার আগে টেস্ট পেপার, পুরনো প্রশ্নপত্র সব কিছু তাঁরাই সমাধান করে দেন। স্কুলের পাঠাগারে অনেক বই রয়েছে। ইচ্ছামতো নিতে পারি। আমাদের স্কুলে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও খেলাও হয়। তাই ভবিষ্যতে এই স্কুলেই পড়তে চাই।

ছবি: বিতান ভট্টাচার্য।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.