আমাদের স্কুল
ব্রাহ্মণপাড়া চিন্তামণি ইনস্টিটিউশন

প্রতিষ্ঠা: ১৯২৩।
ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা- ১৫১৯ জন।
শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা- ২৯ জন
পার্শ্বশিক্ষক- ৫ জন। চুক্তিভিত্তিক শিক্ষিকা-১ জন।
শিক্ষাকর্মী-২ জন। ২০১১ সালে মাধ্যমিকে পরীক্ষার্থী ছিলেন ১১৭ জন।
উত্তীর্ণ ৯৬ জন। উচ্চ মাধ্যমিকে পরীক্ষার্থী ছিলেন ১৩৯ জন। উত্তীর্ণ ১১৭ জন

 

স্কুলের উন্নতির সঙ্গে জড়িয়ে
রয়েছেন অভিভাবকেরাও

চিন্ময় কুমার
১৯২৩ সালে হাওড়া জেলার মুন্সিরহাটের ব্রাহ্মণপাড়া এলাকার বাসিন্দা সাতকড়ি কুণ্ডুর নেতৃত্বে স্থানীয় মানুষেরা গড়ে তোলেন ব্রাহ্মণপাড়া চিন্তামণি ইন্সটিটিউশন। পরের বছর অর্থাৎ ১৯২৪ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্কুলটিতে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পঠন-পাঠনের জন্য অনুমোদন মেলে। স্কুলের পথ চলা শুরু হয়েছিল মাত্র ৩৭ জন শিক্ষার্থী এবং ৭ জন শিক্ষককে নিয়ে। স্কুলটির প্রসারে আরও এগিয়ে আসেন মুন্সিরহাটেরই বাসিন্দা হাজি বাঁকাউল্লা মল্লিক এবং কৃষ্ণমোহন সিট। সাতকড়িবাবু, বাঁকাউল্লাসাহেব এবং কৃষ্ণমোহনবাবুরা তিন জনে একলপ্তে মোট ৬ বিঘা জমি দান করেন। পরবর্তীকালে জমি দিতে এগিয়ে আসেন খোদনময়ী বেজ। গ্রামের ছেলেমেয়েদের শিক্ষার প্রসারের জন্য তিনি আরও ৭২ শতক জমি দান করেন। এ ছাড়াও তিনি ৩টি শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ করেন। স্কুলের প্রথম ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছিলেন আব্দুল আজিম মোল্লা। পরবর্তীকালে এই পদে যোগ দেন শিবরাম বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রত্যকেই স্কুলের উন্নতির জন্য পরিশ্রম করেন। স্কুলে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৫৯৯ জন। পঠন-পাঠনের ক্ষেত্রে আমাদের স্কুলের একটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তা হল হল প্রতিটি শিক্ষার্থীর উপরে আলাদা করে নজর রাখা। স্কুলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকেই পরবর্তীকালে দেশে-বিদেশে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। এ ছাড়া স্কুলের সাংস্কৃতিক ও খেলাধুলা চর্চার উপরে জোর দেওয়া হয়। তবে স্কুলের কিছু অসুবিধাও রয়েছে। কিন্তু পরিচালন সমিতির সদস্য, গ্রামবাসী এবং অভিভাবকদের সহায়তায় সেইসব প্রতিকূলতা অতিক্রম করে ঐতিহ্যবাহী এই প্রতিষ্ঠানটি এগিয়ে চলেছে নিজের গতিতে। সামাজিক চাহিদা পূরণ করে চলেছে নিজের যোগ্যতায়।
শিক্ষিকারা শুধু অভিভাবকই নন, ছাত্রীদের বন্ধুও বটে। এই সহজ সত্যটা আমাদের ছাত্রীরা বোঝে। তাই, দেওয়া আর নেওয়ার মাঝখানে কোনও প্রতিবন্ধকতা নেই। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের আগে পুরনো প্রশ্নপত্র ও টেস্ট-পেপার থেকে প্রশ্ন ধরে ছাত্রীদের পড়ানো হয়। পড়াশোনার সঙ্গে সঙ্গে চলে মেধা পরীক্ষাও। পাঠাগারের জন্যেও সপ্তাহে নির্দিষ্ট ক্লাস থাকে। পড়াশোনা ও আচরণগত বিষয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হয়।
তবে, শুধু লেখাপড়া নয়, বিভিন্ন শিক্ষামূলক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়। তাতে ছাত্রীরা অংশগ্রহণ করে। আমি তো মাত্র তিন বছর এই স্কুলে এসেছি। স্কুল নিয়ে অনেক আশা, স্বপ্ন থাকলেও এই অল্প সময়ে সব করে উঠতে পারিনি। আগে আমাদের স্কুলে ক্লাসঘরের সংখ্যা খুবই কম ছিল। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি নতুন ক্লাসঘর তৈরি হয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তির পরিস্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বয়ঃসন্ধি কালের সমস্যাগুলি নিয়ে ছাত্রীরা যাতে খোলাখুলি আলোচনা করতে পারে, তার জন্য কাউন্সেলিংয়েরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আমার চোখে

সায়ন্তন গুছাইত।
পঞ্চম শ্রেণি থেকে আমি এই স্কুলে পড়াশোনা করে আসছি। ফলে এই স্কুলের প্রতি আমার একটা আলাদা ভালোবাসা রয়েছে। এই স্কুলে ভর্তি হওয়ার পরেই আমার যে বিষয়টি ভালো লাগে তা হল প্রধান শিক্ষক-সহ অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পঠন-পাঠনের দক্ষতা। তাঁরা আমাদের এমনভাবে পড়িয়ে দেন যে এর বাইরে গৃহশিক্ষক নেওয়ার খুব একটা প্রয়োজন পড়ে না। অতিরিক্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময়ে শিক্ষক-শিক্ষিকারা বিরক্ত হন না। এমনকী স্কুলে ছুটি হয়ে যাওয়ার পরেও তাঁরা আমাদের প্রয়োজন হলে সহায়তা দেন। শুধু পঠন-পাঠনই বা কেন। খেলাধুলা বা সাংস্কৃতিক চর্চাও আমরা স্কুলে বেশ ভালোভাবে করতে পারি। এতে শিক্ষক-শিক্ষিরা আমাদের বেশ উৎসাহ দেন। স্কুলের পরিবেশ একজন ছাত্রের ব্যক্তিত্ব বিকাশে অনেকটাই সাহায্য করতে পারে। নিজের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বলতে পারি আমাদের স্কুলের ক্ষেত্রে কথাটা পুরোপুরি সত্যি। একদিন আমাকে এই স্কুল ছেড়ে চলে যেতে হবে। কিন্ত স্কুলের স্মৃতি আমাকে ছেড়ে কোনওদিনই যাবে না। এ কথা হলফ করে বলতে পারি।

ছবি: রমাপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.