অভূতর্পূব দ্বন্দ্ব সিপিএমে
ভোটাভুটিতে অপসৃত জোনাল সম্পাদক, তীব্র দ্বন্দ্ব সিপিএমে
‘অফিসিয়াল প্যানেলে’র বিরুদ্ধে পেশ হল পাল্টা প্যানেল। ভোটাভুটিতে অপসৃত হলেন জোনাল সম্পাদক। নতুন কমিটিতেও রাখা হল না তাঁকে। সোমবার সিপিএমের খড়্গপুর গ্রামীণ জোনাল সম্মেলনে এ সবই ঘটল দলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক তথা রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য দীপক সরকারের উপস্থিতিতেই। দু’বারের জোনাল সম্পাদক, পার্টির সর্বক্ষণের কর্মী মিহির পাহাড়িকে এ ভাবে অপসারণের পিছনে জেলা নেতৃত্বের ‘হাত’ রয়েছে বলে মনে করছেন সিপিএমেরই একাংশ। দলের একাংশ নেতার চাল-চলন, জীবনযাপনের ধরন, দুর্নীতি, উপদলীয় আচরণ, পঞ্চায়েত পরিচালনায় ব্যর্থতা নিয়ে এমনকী জোনাল সম্মেলনের খসড়া সম্পাদকীয় প্রতিবেদনেও সরব হয়েছিলেন মিহিরবাবু। তার জেরেই তাঁকে সরতে হল বলে মনে করছেন দলেরই কেউ কেউ।
লোকাল-জোনাল স্তরের সম্মেলন শুরু হতেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা জুড়েই সিপিএমের অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসে পড়েছে। নেতৃত্বের সমালোচনা, বিশৃঙ্খলা, চেয়ার ছোড়ার মতো ঘটনাও ঘটছে। তবে সোমবার খড়্গপুর গ্রামীণ জোনালের ঘটনা ছাপিয়ে গিয়েছে অন্য সব নজিরকেও। এক সময়ে দীপক সরকারের ‘ঘনিষ্ঠ’ হিসেবেই পরিচিত ছিলেন মিহিরবাবু। সেই দীপকবাবু সম্মেলনে উপস্থিত থেকেও কেন ভোটাভুটি এড়ানোর ব্যবস্থা করতে পারলেন না, সে প্রশ্ন উঠেছে। দলের একাংশ আবার ইদানীং মিহিরবাবুর সঙ্গে দীপকবাবুর সম্পর্কের ‘সমীকরণ বদলে যাওয়া’র দিকেও ইঙ্গিত করছেন।
জোনাল কমিটির সম্মেলনের আগে ঝাড়গ্রাম শহরে সিপিএমের মিছিল। ছবি তুলেছেন দেবরাজ ঘোষ।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্মেলনের শুরুতে পেশ করা ‘অফিসিয়াল প্যানেলে’ সম্পাদক হিসেবে মিহিরবাবুরই নাম ছিল। কিন্তু সদস্য-প্রতিনিধিদের একাংশ ওই প্যানেলের বিরোধিতা করেন। ডিওয়াইএফ নেতা কমল পলমলকে সম্পাদক পদ-প্রার্থী করে তাঁরা পাল্টা প্যানেল জমা দেন। দু’টো প্যানেল নিয়ে প্রথমে তর্কাতর্কি, শেষে ভোটাভুটি হয়। ৯২ জন প্রতিনিধি ভোট দেন। ২ ভোটের ব্যবধানে জিতে যায় কমলবাবুর নাম সম্বলিত প্যানেল। যে প্যানেলে মিহিরবাবুকে এমনকী জোনাল সদস্য হিসাবেও রাখা হয়নি। ভোটাভুটি নিয়ে দীপকবাবু, কমলবাবু বা মিহিরবাবুকেউই অবশ্য সংবাদমাধ্যমে কিছু বলতে চাননি।
খড়্গপুর গ্রামীণ জোনের এলাকাতেই শিল্পতালুক। সেই শিল্পতালুক থেকে পার্টি-তহবিলে নিয়মিত ভাল পরিমাণ ‘চাঁদা’ই সংগৃহীত হয়। ভোটাভুটির পিছনে সেই অর্থই অনর্থের কারণ হল কি নাসে প্রশ্নও উঠেছে। ওই ‘তহবিল’ নিয়ে ইদানীং জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে জোনাল নেতৃত্বের একাংশের বিরোধ শুরু হয়েছিল। মিহিরবাবুর সমান্তরাল ভাবে আরও কয়েক জন সিপিএম নেতা জেলা নেতৃত্বের প্রচ্ছন্ন মদতে আলাদা গোষ্ঠী হিসাবে শিল্পতালুকের নিয়ন্ত্রণ পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন বলেও দলীয় সূত্রের খবর। তার উপর মিহিরবাবু যে ভাবে দলের ‘উপরতলার নেতা’দের একাংশের ‘কমিউনিস্ট নৈতিকতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খসড়া সম্পাদকীয় প্রতিবেদনেতাতেও বিড়ম্বনায় পড়েন জেলা নেতৃত্ব। এ সবের সম্মিলিত পরিণতিতেই মিহিরবাবুকে সরতে হয়েছে বলে দলের একাংশ মনে করছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.