কোচ-খেলোয়াড়দের সঙ্গে বিবাদে জড়ালেন অ্যাথলেটিক্স সম্পাদক
ভিন্ জেলায় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে গিয়ে নিজের শহরের একটি ক্লাবের কোচ-খেলোয়াড়দের সঙ্গেই ঝামেলায় জড়ালেন হুগলির শ্রীরামপুর মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাথলেটিক্স সম্পাদক। এই নিয়ে শোরগোল বেধেছে মহকুমার অ্যাথলেটিক্স মহলে। সম্প্রতি বীরভূমের সিউড়িতে একটি দৌড় প্রতিযোগিতায় শ্রীরামপুর মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার (এসএসএ) অ্যাথলেটিক সম্পাদকের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক দানা বেধেছে। পরিস্থিতি এতটাই ঘোরাল হয়ে ওঠে যে, ওই সম্পাদককে মার খেতে হয় সংশ্লিষ্ট ক্লাবের খেলোয়াড়দের হাতে। বিষয়টি থানা-পুলিশ পর্যন্ত গড়ায়।
বেঙ্গল রোড রেস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হিরালাল মণ্ডল বলেন, “সিউড়ির ওই প্রতিযোগিতায় শ্রীরামপুরের দু’পক্ষের মধ্যে তর্কাতর্কি, মারামারি হয় বলে জানতে পারি। খেলাধুলোয় এমন ঘটনা নিন্দনীয়। প্রয়োজনে প্রশাসন বিষয়টি দেখতে পারে।” তবে, এ নিয়ে চুপচাপ মহকুমার কর্মকর্তারা।
সম্প্রতি সিউড়িতে ৪৪ তম রাজ্য ক্রস কান্ট্রি চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজিত হয়। এসএসএ তাতে নাম দেয়। শ্রীরামপুর অ্যাথলেটিক ফোরামও (স্যাফ) নাম দেয়। ক্রীড়া সংস্থার ১১ জন এবং ফোরামের ১৭ জনের নাম নথিভুক্ত হয়। অভিযোগ, নির্দিষ্ট দিনে স্যাফের খেলোয়াড় ও কোচ সিউড়িতে পৌঁছে দেখেন, তাঁদের ‘চেষ্ট নম্বর’ (খেলার সময় প্রতিযোগীদের চিহ্নিতকরণের নম্বর) তুলে নিয়েছেন ক্রীড়া সংস্থার অ্যাথলেটিক সম্পাদক জগবন্ধু লাহা।
সংশ্লিষ্ট ক্লাবগুলির বক্তব্য, এসএসএ-র অ্যাথলেটিক সম্পাদক হওয়ায় জগবন্ধুবাবুর দায়িত্ব ছিল সংস্থার অধীনে থাকা সমস্ত ক্লাবকে জানানো। অভিযোগ, তিনি তা করেননি। আবার, স্যাফের (স্যাফ অবশ্য এসএসএ-র অধীনস্থ নয়) ছেলেমেয়েদের চেস্ট নম্বর, গেঞ্জি থেকে শুরু করে খাবারের কুপন বীরভূম জেলা সংস্থার অফিস থেকে তুলে নেন তাদের প্রতিনিধি পরিচয় দিয়ে। বিষয়টি জানতে পেরে স্যাফের প্রতিনিধিরা সেগুলি ফেরৎ চাইলে তিনি তা অস্বীকার করেন। এই সময় ফোরামের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন জগবন্ধুবাবু। ফোরামের ক্ষিপ্ত প্রতিনিধিরা একসময় তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন জগবন্ধুবাবুর উপর। বীরভূমের দু’একজন কর্তার সামনেই ওই ঘটনা ঘটে। সেখানে উপস্থিত দু’এক জনের হস্তক্ষেপে জগবন্ধুবাবু রেহাই পান।
সাফ কোচ শ্রীজয় দাসের বক্তব্য, “ছেলেমেয়েরা মাঠে নামতে পারল না ওদের কোচের খারাপ মানসিকতার জন্য। সারা রাত না খেয়েই কাটাতে হয় আমাদের।” যদিও, লিখিত কোনও অভিযোগ ফোরামের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট সংস্থায় জানানো হয়নি। শ্রীরামপুর স্পোর্টিং ক্লাবের অ্যাথলেটিক্স সম্পাদক শুভময় দাসের অভিযোগ, “প্রতিযোগিতা শেষ হওয়ার পরে আমরা জানতে পারি। বারে বারেই এসএসএ-র কিছু লোক আমাদের অপদস্ত করছেন। প্রতিভাবান ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হচ্ছে। আমি এসএসএ-র অ্যাথলেটিক সাব-কমিটির সদস্য। কিন্তু আমার কোনও কথা শোনা হয় না।” ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে স্পোর্টিংয়ের তরফে এসএসএ-কে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে শুভময়বাবু জানান।
তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জগবন্ধুবাবু। তাঁর দাবি, “আমি অন্য কোনও ক্লাবের চেস্ট নম্বর গেঞ্জি, খাবারের কুপন তুলেছি এটা মিথ্যে কথা। আমি যে সত্যি বলছি, সেই প্রমাণ আমার কাছে রয়েছে। আমাকেই বরং অকারণে মারধর করা হয়েছে। পুলিশ ও ক্রীড়া সংস্থাকে ঘটনার কথা জানিয়েছি।”
ক্রীড়া সংস্থার যুগ্ম সম্পাদক সৌমেন ঘোষ বলেন, “বিষয়টি আমি ভাল জানি না। নিশ্চয়ই খোঁজ নেব। বুধবার এক্সিকিউটিভ কমিটির বৈঠক রয়েছে। সেখানে বিষয়টি উত্থাপন করব।” বিশেষ কোনও ক্লাবকে অপদস্থ করার অভিযোগ অবশ্য মানেনি এসএসএ-র কর্তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, “ফোরামের কোচের সঙ্গে এসএসএ-র কোচের সম্পর্ক খুব খারাপ। দু’জনেই নানা কারণে ঝগড়ার জন্য দায়ী। এ নিয়ে ভাবার সময় এসেছে।” বেঙ্গল রোড রেস অ্যাসোসিয়েশনের এক কর্তা বলেন, “এক শ্রেণির নিম্নমানের কোচের জন্য সমস্যা বাড়ছে। এর প্রভাব পড়ছে খেলায়। সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলি এ ব্যাপারে কড়া পদক্ষেপ করুক।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.