পুরনো ব্যর্থতা ঝেড়ে ফেলে, নতুন করে অসমে নিজেদের অস্তিত্ব মজবুত করতে চায় তৃণমূল কংগ্রেস। সেই উদ্দেশ্যে গত বারের রাজ্য কমিটি ভেঙে দিয়ে আজ অসম প্রদেশ তৃণমূলের নতুন কর্মসমিতি গঠন করা হল। রাজ্যে দলের একমাত্র বিধায়ক, দীপেন পাঠককে কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে। দীপেনবাবু জানান, আগামী দু’মাসের মধ্যেই নতুন রাজ্য কমিটি গড়া হবে।
বিধানসভা নির্বাচনের মাস ছয়েক আগে রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস তৈরি করা হয়। প্রথম বার ১০৩টি আসনে লড়ে মাত্র একটি আসন পায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। কেবল সাংগঠনিক ব্যর্থতাই নয়, আর্থিক নয়ছয়ের অভিযোগে জেরবার হয়ে যায় রাজ্য তৃণমূল। সরে যান সভাপতি দেবেশ্বর বরা। আগের আহ্বায়ক অলোক ঘোষও আজকের সভা তথা কার্যনির্বাহী কমিটিতে অনুপস্থিত। দীপেন পাঠক বলেন, “গত বার বহু ভুলভ্রান্তি হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকায় মমতাদেবীও আসতে পারেননি। এ বার তিনি নিজে রাজ্যে এসে হালহকিকৎ দেখে সিদ্ধান্ত নেবেন। তাঁর নির্দেশ মতোই, আপাতত ৯ সদস্যের কার্যনির্বাহী কমিটি গড়া হল।”
নবগঠিত কমিটিতে দীপেনবাবু ছাড়াও রয়েছেন কৈলাশ শর্মা, আব্দুল কালাম ওয়ারশি, দেবাশিস দত্ত, জাহানারা বেগম ভট্টাচার্য, বীরেন্দ্র নাথ ডেকা, হরিকৃষ্ণ গগৈ, প্রদীপ ব্রহ্ম ও অসিত সরকার।
কার্যনির্বাহী সমিতির প্রথম সাংবাদিক সম্মেলনে দীপেনবাবুরা আজ অসমের জন্য একগুচ্ছ রেল প্রকল্পের আশ্বাস দিলেন। এর মধ্যে রয়েছে, গুয়াহাটি-পলাশবাড়ি-নলবাড়ি-মির্জা-চন্দ্রপুর-আজারা-রঙিয়া হয়ে চক্ররেল প্রকল্প, কোচ কারখানা, আমিনগাঁও-হাজো-সর্থিবাড়ি রেলপথ ও অসমে রেলের চতুর্থ শ্রেণির পদে ৯০ শতাংশ ভূমিপুত্র নিয়োগ। কৈলাশ শর্মা বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেবল প্রতিশ্রুতি দেন না, তা রক্ষাও করেন। স্বাধীনতা পরবর্তী কোনও রেলমন্ত্রীর আমলে এক সঙ্গে এত রেলপ্রকল্প অসমে আসেনি। তাঁর আমলে, অসমে মোট ১৩টি প্রকল্প এসেছে। যার মধ্যে কবিগুরু এক্সপ্রেস, বিবেক এক্সপ্রেস, দৈনিক গুয়াহাটি-এক্সপ্রেস, শিলঘাট-চাপরমুখ প্যাসেঞ্জার, ডিব্রুগড়-দিল্লি দৈনিক রাজধানী চালু হয়েছে। আশা করি আমাদের বাকি দাবিও তিনি পূরণ করবেন।”
বৃহৎ নদীবাঁধ প্রসঙ্গে, তৃণমূলের বক্তব্য, “আমাদের বিদ্যুৎ প্রয়োজন। তবে বড় বাঁধ থেকে বিরাট ধ্বংসের সম্ভাবনা থাকলে পিছিয়ে যাওয়াই মঙ্গল। সরকার পক্ষ একতরফা বিশেষজ্ঞ কমিটি না গড়ে, বিরোধীদের থেকেও বিশেষজ্ঞ আহ্বান করুক। নিরপেক্ষ ও বৃহত্তর দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ দল বিজ্ঞানসম্মতভাবে সমীক্ষা চালাক। তার পরেই নামনি সুবনসিরি বাঁধ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। মমতাদেবী বার বার বলেছেন, কৃষকদের ক্ষতি করে কোনও প্রকল্প গড়া হলে আমরা তার বিরোধিতা করব।” |