লাতেহার ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণের ঘটনায় ঝাড়খণ্ড পুলিশকেই পরোক্ষে কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন ওই বিস্ফোরণের মূল লক্ষ্য, চাতরার নির্দল সাংসদ তথা রাজ্যের প্রথম স্পিকার ইন্দর সিংহ নামধারী। একই সঙ্গে ওই দিনের ঘটনা সম্পর্কে রাজ্য পুলিশের ডিজি-র বক্তব্যকে ‘ডাহা মিথ্যা’ বলে বর্ণনা করেছেন তিনি।
রাজ্যপুলিশের ডিজি গৌরীশঙ্কর রথ গত কাল বলেন, “মাওবাদীদের ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণের ‘টার্গেট সাংসদ নামধারী ছিলেন না।” পাশাপাশি রাজ্য পুলিশ প্রধান জানান, ওই দিন বেলা সাড়ে ১২ টার মধ্যেই নামধারীর অনুষ্ঠান শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। নির্ধারিত সময়ে অনুষ্ঠান শেষ হলে বিকেলের আগেই তিনি মহুয়াটাঁড় পার হয়ে যেতেন। বিস্ফোরণে এ ভাবে অতগুলি পুলিশকর্মীর প্রাণ যেত না।
রাজ্য পুলিশের ডিজির ওই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে আজ তাঁর দিল্লি যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল করে রাঁচি বিমানবন্দরের কাছেই, একটি হোটেল তড়িঘড়ি সাংবাদিক বৈঠক ডাকেন নামধারী। ঝাড়খণ্ড পুলিশের কড়া সমালোচনা করে তিনি বলেন, “সাধারণ মানুষ-সহ জনপ্রতিনিধিদের নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ রাজ্য পুলিশ যাবতীয় শিষ্টাচারের সীমাও ছাড়িয়ে গিয়েছে। নিজেদের পিঠ বাঁচাতে মিথ্যা কথা বলে জনপ্রতিনিধিদের ঘাড়ে দোষ চাপাতেও দ্বিধা করছে না।” এর পরই গত ৩ ডিসেম্বরের কলেজ উদ্বোধনের অনুষ্ঠানসূচি-সহ আমন্ত্রণপত্রের কপি সাংবাদিকদের হাতে তুলে দিয়ে নামধারী বলেন, “ডিজি কোথা থেকে জানলেন সে দিন বেলা সাড়ে ১২ টার মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার কথা ছিল! আমন্ত্রণপত্রে তো স্পষ্ট লেখা রয়েছে অনুষ্ঠান শুরুই হবে দুপুর একটায়। পুলিশের কাছে আমার অনুষ্ঠানসূচি অনেক দিন আগেই নিয়ম মাফিক জমাও দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়াও ২ ডিসেম্বর সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বার তিনেক ফোন করেও লাতেহার জেলার পুলিশ সুপারকে ওই অনুষ্ঠানের কথা মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
নামধারী বলেন, “এ সত্ত্বেও গারু থানার এসকর্ট ভ্যান আসতে দেরি করেছে প্রায় ১৫ মিনিট। যার জন্য এসকর্ট ছাড়াই আমি প্রথমে রওনা দিয়েছিলাম। পরে পুলিশের একটি এসকর্ট ভ্যান আসে। তবে তা চলছিল খুবই ধীর গতিতে। তাই বিরক্ত হয়েই আমার গাড়ির চালক দ্রুত গাড়ি চালিয়ে জঙ্গল এলাকা অতিক্রম করার চেষ্টা করে।” নামধারী জানান, মাওবাদী উপদ্রুত এলাকায় পথের নিরাপত্তা দেখভালের জন্য পুলিশের একটি বিশেষ সেল (আরওপি) রয়েছে। ওই সেলের কাজ নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, “তিন দিন ধরে গারু থানার জঙ্গল লাগোয়া রাস্তার ধারে প্রায় আড়াইশো মাওবাদী ঘোরাফেরা করেছে। তার কোনও খবরই পুলিশ পেল না কেন?” তাঁর প্রশ্ন, রাস্তার নিরাপত্তায় পুলিশ যদি সজাগই থাকত, তবে মাওবাদীরা রাস্তা খুঁড়ে ল্যান্ডমাইন পুঁতল কী ভাবে?
এ দিকে, বিহারের ঔরঙ্গাবাদ জেলার ডিবড়া থানায় রাতে প্রায় ৪০০ জন মাওবাদীর একটি দল হামলা চালায়। রাজ্য পুলিশ, সিআইএসএফ এবং কোবরা বাহিনীর কর্মীদের সঙ্গে তাদের গুলির লড়াই চলে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কেউ হতাহত হননি। |