চিকিৎসকের অপহরণের পর এ বার অপহৃত শিশু। চিকিৎসককে উদ্ধার করা হলেও, অপহরণের পর শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে। এই সব ঘটনায় উত্তপ্ত শিলচর, হাইলাকান্দি ও করিমগঞ্জ। শিলচর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক-অধ্যাপক, বিদ্যুৎ নাথকে রবিবার রাতে হাইলাকান্দির নারায়ণপুর থেকে অপহরণ করা হয়েছিল। আজ তাঁকে উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যেই শিলচরের চামড়াগুদাম এলাকা থেকে উধাও হয় তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র, সাহাদাত হুসেন। পরে জানা যায়, টালি লাগাতে আসা এক মজুর সাহাদাতকে মুক্তিপণের লোভে অপহরণ করেছিল। গত রাতে নাগাটিলা এলাকার একটি হোটেল মালিকের বাড়িতে সাহাদাতকে হত্যা করা হয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত তিন মাসের মধ্যে হাইলাকান্দি ও করিমগঞ্জ থেকে অন্তত ৮ জনকে অপহরণ করা হয়েছে। ঘটনার প্রতিবাদে আজ দিনভর শিলচর, হাইলাকান্দি, করিমগঞ্জে বিক্ষোভ দেখানো হয়। যে হোটেল মালিকের বাড়িতে সাহাদাতকে হত্যা করা হয়েছিল, দুলু রায় নামে ওই ব্যক্তির হোটেলেও আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ তদন্ত চালিয়ে, করিমগঞ্জের বদরপুর থেকে রাজীবউদ্দিন নামে অপহরণকারী ওই টালি মিস্ত্রিকে গ্রেফতার করেছে।
অপহরণ ও হত্যা কাণ্ডের প্রতিবাদে আজ সকালে শিলচরের সোনাই রোড অবরোধ করে উত্তেজিত জনতা। শহরের চামড়াগুদাম এলাকা থেকেও আরও একটি প্রতিবাদ মিছিল বের হয়। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা রাস্তার দু’পাশের সব দোকানপাট বন্ধ করে দেয়। পরে পুলিশি ব্যর্থতার প্রতিবাদে কাছারের এডিসি এস কে দাসের হাতে একটি স্মারকলিপিও দেওয়া হয়।
পাশাপাশি, রবিবার রাতে অপহৃত চিকিৎসক-অধ্যাপক বিদ্যুৎ নাথকে আজ শিলচরের কাছে হাতিরহাড় এলাকা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। ডিআইজি বিনোদ কুমার জানান, শ্রীকোণা ফাঁড়ির কাছেই একটি বাড়িতে বিদ্যুৎবাবুকে আটকে রাখা হয়েছিল। ঘটনার দুই পাণ্ডা, স্থানীয় ডাকাত ইমামি ও গাড়িচালক মইনুল হককে পুলিশ গ্রেফতার করে। তারা জানায়, মুক্তিপণের জন্যই চিকিৎসককে অপহরণ করা হয়েছিল। এ দিকে, কলেজ ছাত্র আজহার আহমেদের অপহরণ কাণ্ডের মূল মাথা সেলিমউদ্দিনকে গত কাল দক্ষিণ ত্রিপুরার বিলোনিয়া থেকে ধরা হয়েছে। ১৯ নভেম্বর করিমগঞ্জের ভাঙা এলাকা থেকে, আজহারকে অপহরণ করা হয়েছিল। তিনদিন পরে তাকে হত্যা করে অপহরণকারীরা। তার বাবা, পেট্রোল পাম্পের মালিক তোফাইল আহামেদ দাবি করেন, ছেলের মুক্তি পণ বাবদ তিনি অপহরণকারীদের ১২ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। সেলিম ও তার সঙ্গী, সুলতানের কাছ থেকে আট লক্ষ টাকা পুলিশ উদ্ধার করেছে। |