অনায়াসে পেরিয়ে সাইকেল, মোটরবাইক। তবে সামান্য ভারি যানবাহন গেলেই বিপজ্জনকভাবে কাঁপতে থাকে সেতুটি। দীর্ঘ দিন সংস্কারের অভাবে আউশগ্রাম থেকে মানকর কলেজ যাওয়ার পথে সেচখালের উপরে সেতুটির এমনই হাল। ভেঙে পড়েছে কংক্রিটের রেলিং। অবিলম্বে সেতুটি সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন বাসিন্দারা। গলসি ১ ব্লকের বিডিও নিরঞ্জন কর জানান, সংশ্লিষ্ট দফতরকে বাসিন্দাদের সমস্যার কথা জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানানো হবে।
মানকর থেকে ভাতকুণ্ডাগামী রাস্তার উপরে রয়েছে সেতুটি। এটিই গলসি ১ ব্লক ও আউশগ্রাম ২ ব্লকের মধ্যে অন্যতম প্রধান যোগাযোগকারী রাস্তা। জাতীয় সড়ক থেকে মানকর পেরিয়ে আউশগ্রাম ২ ব্লকের সাহেবডাঙা যাওয়ার আগে একটি সেচখাল রয়েছে। সেই সেচখালের উপরেই রয়েছে ওই সেতুটি। |
গলসি থেকে আউশগ্রাম যাওয়ার রাস্তায় বেহাল সেতু। নিজস্ব চিত্র। |
সেতুটি বেশ কয়েক দশকের পুরনো। সেচ দফতর সেটি তৈরি করেছিল। কিন্তু দীর্ঘ দিন সংস্কারের অভাবে সেটি ব্যবহারের প্রায় অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বছর তিনেক আগে সেতুটির দু’দিকের মাটি সরে যায়। রেলিংও ভেঙে গিয়েছিল। কংক্রিট উঠে গিয়ে এবড়ো খেবড়ো হয়ে গিয়েছিল মেঝে। শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতির চাপে সেচ দফতর ‘বিপজ্জনক সেতু’ লিখে বোর্ড ঝুলিয়ে দেয়। পরে সাময়িক সংস্কারের জন্য অর্থ বরাদ্দও করে সেচ দফতর। সেই টাকায় সেতুটির আপাতত সংস্কার করা হয়। সতর্কতা জ্ঞাপক বোর্ডটিও সরিয়ে নেওয়া হয়। সম্প্রতি ফের সেতুটি বেহাল হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
স্থানীয় বাসিন্দা আনন্দমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়, শিবলাল মুর্মুরা জানান, যেভাবে দিন দিন সেতুটির রেলিং ধসে পড়ছে, মেঝেতে ফাটল চওড়া হচ্ছে তাতে যে কোনও দিন বিপদ ঘটতে পারে। তাঁরা বলেন, “সেতুটি ভেঙে পড়লে বড় বিপদ ঘটতে পারে। তাছাড়া সেতুটি ভেঙে গেলে দূরত্বও বেড়ে যাবে অন্তঃত ১০ কিলোমিটার।” অবিলম্বে সেতুটি মেরামত করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জন বাসিন্দার অভিযোগ, রাতের অন্ধকারে বালি চোরেরা অজয় নদ থেকে বালি তুলে বালিভর্তি লরি নিয়ে যায় ওই সেতু দিয়েই। তাই সেতুটি দিন দিন আরও বেহাল হয়ে পড়ছে। বুদবুদ থানার পুলিশ জানিয়েছে, সম্প্রতি কয়েকটি লরি আটক করা হয়েছে। তারপর থেকে সেতুতে নজরদারি চলছে। গলসি ১ ব্লকের বিডিও নিরঞ্জন কর বলেন, “সেতুটি অবিলম্বে সংস্কারের আর্জি জানিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরে যোগাযোগ করব।” অন্য দিকে, সেচ দফতরের সহকারী বাস্তুকারের দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি তাঁরা জানাবেন। |