বিদ্যুৎ চুরি ঠেকাতে অভিযান আপাতত তো বন্ধই, ভবিষ্যতে যদিও বা শুরু হয়, তখন পুলিশের সহযোগিতা কতটা পাওয়া যাবে, তা নিয়ে সংশয়ে বিদ্যুৎ-কর্তারা। তাঁরা মনে করছেন মগরাহাটের ঘটনায় যে ভাবে পুলিশ সমালোচিত হচ্ছে, তাতে ভবিষ্যতে ওই কাজে তারা পুরোদস্তুর সহযোগিতা না-ও করতে পারে।
বণ্টন সংস্থার কর্তাদের বক্তব্য, এমনিতেই পুলিশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যস্ত থাকে বলে হুকিং-বিরোধী অভিযানে চট করে তাদের সাহায্য মেলে না। অনেক সময় এই সব অভিযানে গণ্ডগোলের জেরে স্থানীয় মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হয় বলে পুলিশ এই কাজে জড়াতে চায় না। তবুও থানাগুলিতে বারবার বলে মাঝেমধ্যে পুলিশ পাওয়া যেত। মগরাহাটের ঘটনার পরে তাদের পাওয়া সহজ হবে না বলে মনে করছেন বিদ্যুৎ-কর্তারা।
পুলিশ-কর্তাদের একাংশও এখন বলতে শুরু করেছেন, এর পর থেকে লিখিত আবেদন ছাড়া কোনও পরিস্থিতিতেই চট করে বাহিনী পাঠানো হবে না। লিখিত আবেদন পেলে পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এত দিন অধিকাংশ ক্ষেত্রে শুধু মৌখিক অনুরোধের ভিত্তিতেই বিদ্যুৎ চুরি বন্ধের অভিযানে বণ্টন সংস্থার কর্মীদের সঙ্গে পুলিশ পাঠিয়ে দেওয়া হত বলে ওই কর্তারা দাবি করেছেন।
বণ্টন সংস্থার ক্ষতির বহর কমাতে সরকারের নির্দেশেই পয়লা ডিসেম্বর থেকে লাগাতার হুকিং-বিরোধী অভিযান শুরুর কর্মসূচি নেওয়া হয়। ওই কাজে বণ্টন সংস্থার কর্মী এবং ইঞ্জিনিয়ারদের নিরাপত্তার জন্য যাতে পুলিশ পাওয়া যায়, তার জন্য অনেক আগেই কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরকে চিঠি পাঠানো হয়। এ বার বেশ আটঘাট বেঁধেই হুকিং বন্ধের অভিযান চালানো হবে বলে পরিকল্পনা করা হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল, বিদ্যুৎ চুরি যতটা সম্ভব কমিয়ে সংস্থার লোকসান কিছুটা হলেও কমিয়ে আনা। কিন্তু মগরাহাট-কাণ্ডের জেরে কার্যত উল্টো ফল হল।
তবে মগরাহাটের ঘটনায় বিদ্যুৎ-কর্তাদের অনেকেই বিস্মিত। কারণ ওই অঞ্চলে এর আগেও বহু বার অভিযান চালানো হয়েছে। অনেক সময় পুলিশ ছাড়াই বণ্টন সংস্থার কর্মী-ইঞ্জিনিয়াররা হুকিং লাইন কেটেছেন। সংস্থা সূত্রে খবর, গত ২৯ নভেম্বরও মগরাহাট বাজারে প্রায় ১৫টি বেআইনি লাইন কাটা হয়। কোনও বাধার সম্মুখীন হতে হয়নি। বৃহস্পতিবার নৈনান গ্রামে পরিস্থিতি কেন যে এমন হল, তা তাঁরা এখনও বুঝতেই পারছেন না। সেই কারণেই মগরাহাটের ঘটনার ব্যাপারে মুখ্য ভিজিল্যান্স অফিসার সুজয় সরকারকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন সংস্থা কর্তৃপক্ষ। সুজয়বাবু শনিবারই মগরাহাটে গিয়ে তদন্তের কাজ শুরু করে দিয়েছেন বলে সংস্থা সূত্রের খবর। |