জঙ্গলমহলে উন্নয়নমূলক কাজের পাশাপাশি ‘রাজনৈতিক কার্যকলাপ’ জোরদার করতে চাইছে তৃণমূল। শনিবার হাওড়ার বাগনানে জেলা তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভায় তমলুকের সাংসদ তথা দলের রাজ্য যুব সভাপতি শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “ওখানে উন্নয়নমূলক কাজকর্ম চলবে। পাশাপাশি, জোরদার করা হবে তৃণমূলের রাজনৈতিক কার্যকলাপ।”
বিধানসভা নির্বাচনের আগে লাগাতার যৌথ বাহিনী প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে এসেছেন তৃণমূল নেত্রী। কিন্তু গোটা বিষয়টিকে কার্যত ‘রটনা’ বলে উড়িয়ে দেন শুভেন্দু। তাঁর বক্তব্য, “তৃণমূল না কি বলেছিল, রাজ্যে ক্ষমতায় এলে জঙ্গলমহল থেকে যৌথ বাহিনী প্রত্যাহার করা হবে! কোনও কোনও মহল থেকে এমনই রটনা করা হচ্ছে। কিন্তু তৃণমূলের ইস্তাহারে পরিস্কার বলা হয়েছিল, ক্ষমতায় এলে যৌথ বাহিনীর অত্যাচার বন্ধ করা হবে। উন্নয়নে জোর দেওয়া হবে।”
পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরে ক্ষুদিরাম বসুর জন্মস্থান মোহবনিতে এ দিন স্মরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছিল। দুপুরে সেখানে গিয়েও শুভেন্দু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জঙ্গলমহলের উন্নয়নে বিশেষ ভাবে উদ্যোগী হয়েছেন। কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে। ওরা (মাওবাদীরা) জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।” কিষেণজির মৃত্যুর প্রতিবাদে রবি ও সোমবার মাওবাদীরা যে বন্ধের ডাক দিয়েছে, শনিবার বিকেলে তার বিরুদ্ধে ঝাড়গ্রাম শহরে মিছিল করে তৃণমূল। আজ, রবিবার পুরুলিয়ার বলরামপুরে এবং কাল, সোমবার জামবনিতে শান্তিমিছিল এবং সমাবেশের ডাকও দেওয়া হয়েছে। তৃণমূল প্রভাবিত ‘জনজাগরণ মঞ্চ’ও বন্ধ ব্যর্থ করতে ওই দু’দিন বিভিন্ন এলাকায় মোটরবাইক মিছিল করবে বলে জানিয়েছে।
দলনেত্রীর সুরে এ দিন ফের সিপিএম-মাওবাদী আঁতাঁতের অভিযোগও তোলেন তৃণমূলের যুব নেতা। শুভেন্দুর বক্তব্য, “সিপিএমের হার্মাদ বাহিনীর মদতে পুষ্ট মাওবাদীরা জঙ্গলমহলে পোস্টার মেরেছে। কিন্তু ওদের কথা মানুষ শুনছে না। জিতু সিংহ সর্দার, বাবু বসুর মতো ৬ জন তৃণমূল নেতা যেখানে মাওবাদীদের হাতে খুন হয়েছেন, সেই সব এলাকায় আমাদের সমাবেশে মানুষের ঢল নেমেছে। মাওবাদীরা পশ্চিমবঙ্গের জঙ্গলমহল ছেড়ে ছত্তীসগঢ়, ঝাড়খণ্ড এবং ওড়িশায় পালিয়েছে। জাগরী বাস্কে, রবি মাণ্ডির মতো মাওবাদী স্কোয়াড সদস্যেরা বন্দুক জমা দিয়ে বলছে, আমরা আর খুন চাই না।”
রাজনৈতিক প্রভাবের প্রশ্নে কংগ্রেসকেও এক হাত নিয়েছেন শুভেন্দু। অধীর চৌধুরীর ‘খাসতালুক’ বহরমপুরে তৃণমূলের সভার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, “ওখানে ৬০-৭০ হাজার মানুষ হাজির হয়েছিলেন। তাঁরা বলেন, এ রাজ্যে একটি মাত্র দল আছে, সেটি তৃণমূল। এক জনই নেত্রী আছেন, তিনি মমতা।” এই সমাবেশেই বাগনান ২ পঞ্চায়েত সমিতির কংগ্রেস সভাপতি অলোক গঙ্গোপাধ্যায় এক কর্মাধ্যক্ষ এবং এক সদস্যকে নিয়ে তৃণমূলে যোগ দেন।
পাশাপাশি, বাগনান বিধানসভা কেন্দ্রের বহু কংগ্রেস নেতা-কর্মীও এ দিন তৃণমূলে যোগ দেন। তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের কৃষি বিপণণ মন্ত্রী অরূপ রায়, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুলতান আহমেদ, বাগনানের বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূল যুব সভাপতি রাজা সেন প্রমুখ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন। |