|
|
|
|
জোড়া ‘ফাঁসে’ সুশান্তের ভাই |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক ও চন্দ্রকোনা রোড |
২০০৭-এ সিপিএমের ‘পুনর্দখল’ অভিযানের সময়ে নন্দীগ্রাম থেকে ‘নিখোঁজ’ ভূমি-উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি-র সমর্থকদের ব্যাপারে শনিবার সিআইডি তদন্ত চালাল দিঘা, খেজুরি ও নন্দীগ্রামে।
ডিএসপি শিশির রায়ের নেতৃত্বে সিআইডি-র একটি দল এ দিন সকালে প্রথমে তল্লাশি চালায় দিঘার একটি হোটেলে। হোটেলটির মালিক প্রাক্তন সিপিএম মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষের ভাই প্রশান্ত ঘোষ। অভিযোগ, চার বছর আগের সেই নভেম্বরে সিপিএমের তরফে পশ্চিম মেদিনীপুর-সহ রাজ্যের অন্য কয়েকটি জেলা থেকে দুষ্কৃতী ও দলের বেশ কয়েক জন নেতা-কর্মীকে নন্দীগ্রাম ও তার আশপাশের অঞ্চলে জড়ো করা হয়েছিল। সেই ‘বহিরাগত’দের একাংশ প্রশান্তবাবুর দিঘার হোটেলেও আশ্রয় নিয়েছিল। এ দিন হোটেলের সেই সময়ের রেজিস্টারটি বাজেয়াপ্ত করে সিআইডি। সেই সময়েও কাজ করতেন, হোটেলের এমন কয়েক জন কর্মীকেও জেরা করেন তদন্তকারীরা।
এ দিনই আবার দাসেরবাঁধের কঙ্কাল-কাণ্ডে ‘ফেরার’ অভিযুক্ত প্রশান্তবাবুর পশ্চিম মেদিনীপুরের বেনাচাপড়ার বাড়িতেও হানা দেয় পুলিশ ও সিআইডি। |
|
বাড়িতে বাজেয়াপ্ত সম্পত্তি। ছবি-রামপ্রসাদ সাউ। |
প্রশান্তবাবু-সহ এই মামলায় ‘ফেরার’ ৩৯ জনের অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দিয়েছে মেদিনীপুর আদালত। সেই নির্দেশ মতোই এ দিন বেনাচাপড়ার ঘোষবাড়িতে হানা দিয়ে প্রশান্তবাবুর ঘর থেকে খাট, বিছানা, ড্রেসিং টেবিল, পাখা বাজেয়াপ্ত করে সিআইডি ও গড়বেতা থানার পুলিশ। সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের নির্দেশ জারির আগেই গত ২১ নভেম্বর এক বার বেনাচাপড়ার বাড়িতে হানা দিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছিল পুলিশ-সিআইডি। তবে আদালতের নির্দেশ দেখিয়েই এ দিন প্রশান্তবাবুর ঘরের তালা খোলায় পুলিশ।
অন্য দিকে, নন্দীগ্রাম-কাণ্ডে সিআইডি-র দল দিঘার পরে যায় খেজুরিতে। অভিযোগ, ২০০৭-এর ১০ নভেম্বর গোকুলনগরের করপাড়ায় ভূমি-কমিটির মিছিলে হামলার পরে আহতদের এবং নিহতদের দেহ সিপিএমের লোকজন খেজুরিতে নিয়ে গিয়েছিল। পরে দেহগুলি ভুটভুটিতে চাপিয়ে রসুলপুর ঘাট থেকে কটকা খাল, পেটুয়াঘাট, হিজলি শরিফ হয়ে বঙ্গোপসাগরে নিয়ে গিয়ে ফেলা হয়। সেই ঘটনায় ভুটভুটির মাঝি-মিস্ত্রি মিলিয়ে তিন জনের জবানবন্দিও আদালতে নথিভুক্ত করানো হয়েছে। জবানবন্দি দেওয়া এমনই এক ভুটভুটি-মিস্ত্রি মানিকলাল দাসকে নিয়ে রসুলপুর ঘাট থেকে ভুটভুটিতে চেপেই বঙ্গোপসাগরে ৯ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত যায় সিআইডি-র দল। ১০ নভেম্বর নিহতদের দেহ খেজুরির কুঞ্জপুর, শেরখাঁচকের মতো বেশ কয়েকটি জায়গায় রেখে পর দিন সাগরে নিয়ে গিয়ে ফেলা হয়েছিল বলে তদন্তে জানা গিয়েছে বলে দাবি সিআইডি-র। সাগরে দেহ ফেলার জায়গা পরিদর্শনের সময়েই সিআইডি-র একটি দল নন্দীগ্রামের গোকুলনগরে গিয়ে শ্রীহরি মণ্ডল, শঙ্কর সাউ, কানাইলাল দাসের মতো ভূমি-কমিটির বেশ কয়েক জনের সঙ্গে কথা বলে। কমিটির মিছিলে সিপিএমের হামলায় শ্রীহরিবাবুরা আহত হয়েছিলেন এবং তাঁদের খেজুরিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরে পুলিশ উদ্ধার করে। সিপিএমের কারা সে দিন খেজুরিতে ছিলেন, মিছিলে ঠিক কখন, কী ভাবে হামলা হয়েছিলসে সবই জানতে চাওয়া হয় শ্রীহরিবাবুদের কাছে। |
|
|
|
|
|