মাওবাদীদের ঘনিষ্ঠ সন্দেহে ঝাড়খণ্ডের পটমডা থানার বেলাটাঁড়ের এক চিকিৎসককে আটক করেছে যৌথ বাহিনী। গত কাল সন্ধ্যায় তাঁকে আটক করা হয় বলে সিআরপি সূত্রের খবর। পশ্চিম মেদিনীপুরে বুড়িশোলের জঙ্গলে কিষেণজির শেষ যুদ্ধের সঙ্গী সুচিত্রা মাহাতোর চিকিৎসার জন্যই ওই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বলে পুলিশের সন্দেহ। পুলিশ সূত্রের খবর, মোটরবাইক আরোহী ওই চিকিৎসকের পথ আটকানো হলে ঝাড়খণ্ডের পূর্ব সিংভূম জেলার স্থানীয় পুলিশ ও সিআরপি-র উপরে অন্য একটি মোটরবাইক থেকে গুলি চালানো হয়। কিষেণজির হত্যার বদলা নিতে একই দিনে সাঁওতাল পরগনার পাকুড়ে মাওবাদীরা তিনটি ডাম্পার পুড়িয়ে দিয়েছে বলে সন্দেহ করছে পুলিশ।
গত ২৬ নভেম্বর বুড়িশোলে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে মাওবাদী শীর্ষ নেতা কিষেণজি নিহত হওয়ার পর থেকেই সুচিত্রার খোঁজে তল্লাশি চলছে। সুচিত্রাকে পালাতে সাহায্য করার অভিযোগে পশ্চিমবঙ্গেও কয়েক জন ‘সন্দেহভাজন’কে ধরেছে পুলিশ। সুচিত্রা জঙ্গল ধরে পালিয়ে ঝাড়খণ্ডে ঢুকে পড়েছেন বলে সন্দেহ করে পূর্ব সিংভূম জেলায় পশ্চিমবঙ্গ লাগোয়া এলাকায় তল্লাশি-অভিযান চালাচ্ছে সিআরপি-র দু’টি ব্যাটালিয়ন ও জেলা পুলিশ।
সিআরপি-র ডিআইজি (চাইবাসা) ভানুপ্রতাপ সিংহ জানিয়েছেন, আটক চিকিৎসকের নাম পরমেশ্বর মুর্মু। সুচিত্রার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন কি না, জিজ্ঞাসাবাদ করা চলছে। পটমডার সার্কেল ইন্সপেক্টর এস এন রজক বলেন, “পরমেশ্বরবাবু পুরুলিয়া জেলার বড়বাজার এলাকার বাসিন্দা। ২০০৪ সাল থেকে পটমডার নেগজুরি এলাকায় তাঁর এক আত্মীয়ের বাড়িতে থেকে গ্রামে চিকিৎসা করছেন।”
পুলিশ সূত্রের খবর, গত কাল সন্ধ্যায় একটি মোটরবাইকে যাচ্ছিলেন পরমেশ্বরবাবু। তাঁর পিছনে যাচ্ছিল আরও একটি মোটরবাইক। পরমেশরবাবুর মোটরবাইকটিকে বেলাটাঁড়ের কাছে যৌথ বাহিনী দাঁড় করায়। সঙ্গে সঙ্গে পরমেশ্বরবাবুর পিছনে আসা মোটরবাইকটি থেকে বাহিনীর দিকে গুলি চালানো হয়। পাল্টা গুলি ছোড়ে বাহিনীও। অল্প সময় গুলির লড়াই চলার পরে ওই মোটরবাইকটির আরোহীরা অন্ধকারে গা-ঢাকা দেয়। এ দিন পূর্ব সিংভূম জেলার পুলিশকর্তারা জানান, এখনও ওই চিকিৎসককে গ্রেফতার করা হয়নি। তিনি মাওবাদী-ঘনিষ্ঠ, এই সন্দেহ থেকেই পরমেশ্বরবাবুকে আটক করে জেরা চলছে। জেরায় নিশ্চিত কোনও প্রমাণ মিললে তাঁকে গ্রেফতার করা হবে। পাকুড় জেলার আমরাপাড়া থানা এলাকায় গত রাতেই তিনটি ডাম্পার পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। আমরাপাড়ার কেওয়াটতলায় ওই ঘটনাটি ঘটে। পাকুড়ের এসপি অমরনাথ খন্না এ খবর জানিয়ে বলেন, “পুড়ে যাওয়া ডাম্পারগুলির কাছে কয়েকটি পোস্টার মিলেছে। তাতে কিষেণজির হত্যার প্রতিবাদে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে মাওবাদীদের নাম করে দাবি করা হয়েছে।” |