তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ন্যাটোর হানায় পাক সেনাদের মৃত্যুর জন্য পাক কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষমা চাওয়ার কথা ভাবছে না ওবামা প্রশাসন। আমেরিকা পাকিস্তানকে ওই তদন্ত প্রক্রিয়ায় যোগ দিতে বললেও পাকিস্তান তাতে রাজি হয়নি। বরং আইনসভার কমিটির বৈঠকে আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক ‘পর্যালোচনা’র কথা বলেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি। আমেরিকা পাকিস্তানের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার উপরে জোর দিয়েও ন্যাটোর হামলাকে ‘সামরিক সংঘর্ষ’ বলে ব্যাখ্যা করেছে। পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কার্বি বলেন, “সীমান্তের দু’পার থেকে গুলি চলেছে, তাতে ২৪ জন পাক সেনা নিহত হন। কোনও গ্রামবাসী বা সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়নি। কী ভাবে ওই সেনারা নিহত হলেন, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”
পাক কর্তৃপক্ষের শুধুমাত্র একটি পদক্ষেপ নিয়েই ঈষৎ উষ্মা জানিয়েছে পেন্টাগন। গত কাল শোনা গিয়েছিল, ভবিষ্যতে কখনও আক্রান্ত হলে পাক সেনাকে সর্বশক্তি দিয়ে প্রত্যাঘাত করার সবুজ সংকেত দিয়েছেন সেনাপ্রধান আশফাক কিয়ানি। সেই প্রসঙ্গেই আজ পেন্টাগনের মুখপাত্র বলেন, “কাউকে উদ্দেশ করে বলছি না, কিন্তু আমাদেরও আত্মরক্ষার অধিকার আছে।” বস্তুত, পাক প্রধানমন্ত্রী এখনও চড়া সুরে বিঁধে চলেছেন ন্যাটো তথা আমেরিকাকে। আইনসভার কমিটির বৈঠকে তিনি বলেছেন, “আমাদেরও সহ্যের সীমা আছে। সহযোগিতা কখনও একতরফা হতে পারে না।” আমেরিকা অবশ্য সৌহার্দের বার্তা দিতে কসুর করছে না। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যৌথ লড়াইয়ের পাশাপাশি পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মজবুত করার কথা বলেছেন একাধিক মার্কিন কর্তা। বন-এ আফগানিস্তান বিষয়ক সম্মেলনে যোগ দিতে আমেরিকা পাকিস্তানকে বারবার আর্জি জানাচ্ছে। এমনকী বরফ গলাতে আফগানিস্তানে মোতায়েন ন্যাটো বাহিনীকে পাক সীমান্তের ‘নিরপেক্ষ অঞ্চল’ পেরোতে বারণ করা হয়েছে। পাকিস্তানকে ন্যাটোর রসদবাহী ট্রাক চলাচলের রাস্তা ফের খুলে দেওয়ার অনুরোধ জানানো হবে বলেও জানিয়েছেন মার্কিন কর্তারা। পাশাপাশি, পাক সেনাদের মৃত্যুর তদন্তে পাকিস্তানের অংশগ্রহণ যে জরুরি, সে কথাও বলেছেন তাঁরা। ওবামা প্রশাসনের যুক্তি, সুষ্ঠু তদন্ত হলে গোটা বিষয়টি পরিষ্কার হবে। ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তিও এড়ানো যাবে। |