নিরাপত্তা বাড়াতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা বসানো-সহ বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। সোমবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে। রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব এ ব্যাপারে উদ্যোগী হন। উপস্থিত ছিলেন মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির বিধায়ক শঙ্কর মালাকারও। কোথায় ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরাগুলি বসানো হবে তা পুলিশ প্রশাসনের কর্তারা খতিয়ে দেখে জায়গাগুলি চিহ্নিত করবেন। এ ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও তারা কথা বলবেন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের যে সব জায়গায় সীমানা প্রাচীর নেই তা দ্রুত করা হবে। বহিরাগতরা যাতে অবাধে মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে প্রবেশ করতে না পারে সে কারণে নির্দিষ্ট সময় পর হাসপাতালের গেট বন্ধ করা হবে। এর পর কেউ ঢুকলে কী প্রয়োজনে ঢুকবেন তা তদারকি করবেন গেটে দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তা রক্ষী। নিরাপত্তায় ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানো হবে।” হাসপাতালের কর্মী আবাসন থেকে দখলদারদের ওঠাতে পুলিশকে নির্দেশ দেন তিনি। বৈঠক থেকেই পুলিশ সুপারকে ফোন করে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেন। রোগী কল্যাণ সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিনের আলোচনায় ঠিক হয়েছে, বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স বা কোনও গাড়ি মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে রাখা যাবে না। রোগী নামিয়ে বা নিয়ে তারা চলে যাবে। |
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠক। |
মেডিক্যাল কলেজের পার্কিং জোনে বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স রাখতে চাইলে ফি দিতে হবে। হাসপাতালের কর্মী আবাসনগুলির একাংশ দীর্ঘ দিন ধরে দখল করে রাখার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ৬৫টি পরিবারের বিরুদ্ধে। তাদের সরে যেতে নোটিসও দেওয়া হয়। কাজ না হওয়ায় দখলকারীদের সরিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব এ দিন তুলে দেওয়া হয়েছে পুলিশ ও প্রশাসনের হাতে। এমনকী মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে থাকা অস্থায়ী দোকানগুলিকে তুলে দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে কর্মী সংগঠনগুলিও সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে। কর্মীদের একাংশ মাসে অনেক দিন কাজ না করে পুরো বেতন তোলেন। তা বন্ধ করতে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন মন্ত্রী। পাশাপাশি হাসপাতালের পরিষেবার মান উন্নয়নে এ দিন বৈঠকে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। আগের বৈঠকের সিদ্ধান্ত কতটা কার্যকর হয়েছে সে ব্যাপারে সঠিক তথ্য না মেলায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন মন্ত্রী। পরবর্তীতে প্রতিটি বৈঠকে সে ব্যাপারে আলাদা করে জানাতে নির্দেশ দেন তিনি। পরিষেবার মান উন্নয়নে ইউরোলজির বহির্বিভাগ এক দিনের পরিবর্তে ২ দিন খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে ওই বিভাগে একজন সিনিয়র চিকিৎসক পড়াশেনার প্রয়োজনে ছুটিতে থাকায় বড় ধরনের অস্ত্রোপচার সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখতে হচ্ছে। বেলা ৪ টা পর্যন্ত খোলা থাকবে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগ। রেডিওলজি বিভাগ ২৪ ঘন্টা খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হলেও কর্মীর অভাবে এখনই তা কার্যকর করা সম্ভব হচ্ছে না। চিকিৎসকের অভাব মেটাতে ইতিমধ্যেই ১৮ জন রেসিডেন্সিয়াল মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) কাজে যোগ দিয়েছেন। শীঘ্রই আরও ৭ জন যোগ দেবেন। শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে চিকিৎসকের সমস্যা মেটাতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে মেডিক্যাল অফিসার (এমও) সেখানে পাঠানো হবে। নষ্ট সিটি স্ক্যান যন্ত্র মেরামত করা হচ্ছে। শীঘ্রই তা চালু করা হবে বলে জানানো হয়েছে। বিজন বাড়িতে সেতু দুর্ঘটনা, বাস দুর্ঘটনায় জখমদের চিকিৎসা খরচের জন্য ১০ লক্ষ টাকা রোগী ক্যলাণ সমিতির তরফে দেওয়া হচ্ছে। |