তৃণমূল ও কংগ্রেস জোট পরিচালিত পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে পথে নামল তৃণমূলেরই শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি! সংগঠনের দাবি, মেদিনীপুর বাসস্ট্যান্ডের দোকানঘর বিলি নিয়ে অযথা গড়িমসি করছে পুরসভা। বাসস্ট্যান্ড সংস্কারের ব্যাপারেও পুর-কর্তৃপক্ষ উদাসীন। আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত বাস পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃত্বে সোমবার শহরে মিছিল হয়। পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে সরব হন নেতৃত্ব। ঘটনায় শহরের রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়েছে। ইউনিয়ন নেতৃত্বের বক্তব্য, ন্যায্য দাবিতেই তাঁদের আন্দোলন।
মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড চত্বরে তৈরি হওয়া দোকানঘর কী ভাবে বিলি করা হবে, সে নিয়ে এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি পুরসভা। এ নিয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিতে গত বছর ডিসেম্বরে ৫ সদস্যের কমিটি তৈরি হয়েছিল। কমিটির আহ্বায়ক হয়েছিলেন পূর্ত-বিভাগীয় পুরপ্রধান-পারিষদ দেবী চক্রবর্তী। সেই সময়ে বোর্ড মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, বাসস্ট্যান্ড চত্বরে দোকানঘর তৈরি করতে মোট কত টাকা খরচ হয়েছে, কী ভাবেই বা এগুলি বিলি করা হবে, সে নিয়ে নির্দিষ্ট প্রস্তাব দেবে ৫ সদস্যের ওই কমিটি। সেই প্রস্তাব নিয়ে বোর্ড মিটিংয়ে আলোচনা করা হবে। তার পরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কিন্তু, গত ডিসেম্বরে কমিটি তৈরি হওয়ার পরে এক বছর হতে চলল, কমিটির বিপোর্ট আর জমা পড়েনি। |
পুরসভা সূত্রে খবর, বাসস্ট্যান্ড-চত্বরে সব মিলিয়ে ৮৪টি নতুন দোকানঘর তৈরি হয়েছে। এই দোকানঘরগুলি কাদের বিলি করা হবে, কী ভাবেই বা বিলি করা হবে, সেই নিয়ে দাবি-পাল্টা দাবি রয়েছে। আইএনটিটিইউসি-র দাবি, বাসস্ট্যান্ড-চত্বরে ব্যবসার জন্য যাঁদের লাইসেন্স রয়েছে, দোকানঘরগুলি তাঁদেরই বিলি করতে হবে। সংগঠনের বক্তব্য, এখানে ১১৪ জনের লাইসেন্স রয়েছে। তবে, তাঁদের সবার স্থায়ী দোকান নেই। দোকানঘর বিলির ক্ষেত্রে লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যবসায়ীদেরই অগ্রাধিকার দিতে হবে। শুধু এই দাবিই নয়, বাসস্ট্যান্ড সংস্কারের কাজ ঠিক মতো হচ্ছে না বলেও অভিযোগ তৃণমূলের এই শ্রমিক সংগঠনের। সংগঠনের নেতাদের বক্তব্য, এখানে মহিলাদের জন্য পৃথক কোনও শৌচাগার নেই। পুরসভার কাছে বহুবার এই দাবি জানিয়েও সুরাহা হয়নি। ফলে, মহিলা যাত্রীদের সমস্যায় পড়তে হয়। আইএনটিটিইউসি-র নেতা স্বাধীন দাস বলেন, “তৈরি হয়ে পড়ে থাকলেও দোকানঘরগুলি বিলি হচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়েই আমরা পথে নেমেছি। দোকানঘর বিলির ক্ষেত্রে লাইসেন্সপ্রাপ্তদেরই অগ্রাধিকার দিতে হবে।” পুরসভা সূত্রে খবর, আজ, মঙ্গলবারই পুরসভায় বোর্ড মিটিং রয়েছে। এই মিটিংয়েই দোকানঘর বিলি সংক্রান্ত রিপোর্ট পেশ হওয়ার কথা। তার পর এ নিয়ে আলোচনা হবে। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এর আগে নিজেদের দাবি তুলে ধরতেই সোমবার পথে নেমেছে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন। কেন এত দিন দোকানঘর বিলি হয়নি? মেদিনীপুরের পুরপ্রধান প্রণব বসু বলেন, “কমিটির রিপোর্ট জমা পড়েনি বলেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়নি। মঙ্গলবারই রিপোর্ট জমা পড়বে।” তাঁর কথায়, “বোর্ড মিটিংয়ে আলোচনার প্রেক্ষিতেই দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” |