বেশ কিছু গাছের পাতার পরিচর্যার অভাবে হলদে হয়ে ঝরে পড়েছে। বহু গাছের চারা আবার বেড়েছে সামান্য। বহু গাছের চারাগাছ আবার নষ্ট হয়ে গিয়েছে। শহর সবুজায়নের জন্য ‘কোচবিহার গ্রিনিং’ প্রকল্পে তিন বছর আগে লাগানো চারা গাছগুলির রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এমনই অবস্থা। গাছগুলি দেখভালের দায়িত্ব কার তা নিয়ে বন দফতর ও কোচবিহার পুরসভার মধ্যে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। রাজ্যের বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন বলেন, “ওই প্রকল্পের সময়সীমা শেষ হয়েছে। তা ছাড়া যে সব চারা গাছ নষ্ট হয়েছে সেগুলি আমরা দায়িত্ব নেওয়ার আগে হয়েছে। যেহেতু কোচবিহার পুরসভা এলাকায় ওই প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল। তাই নিয়মমতো পুরসভার উচিত সেগুলির দেখভাল করা।” কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান বীরেন কুণ্ডু বলেন, “ওরকম কোনও নিয়মের কথা আমাদের জানা নেই। যারা গাছ লাগিয়েছেন তারাই দায়িত্ব নিন।” উদ্যান ও কানন শাখার উত্তরবঙ্গের ডিএফও রানা দত্ত বলেন, “প্রথম দু’বছর আমরা পরিচর্যার দায়িত্ব পালন করেছি। বহু গাছ বেড়ে উঠেছে। কিছু ক্ষেত্রে চারা বদলে দেওয়া হয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণের জ্য সেগুলি বিপন্ন বলে অভিযোগ আমাদের কাছে নেই। অবশ্যই বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।” বাসিন্দাদের অভিযোগ, ২০০৮ সালে রাজ্যের প্রাক্তন বনমন্ত্রী অনন্ত রায়ের উদ্যোগে ‘কোচবিহার গ্রিনিং’ প্রকল্প হাতে নেয় বন দফতরের উদ্যান ও কানন শাখা। সুনীতি রোড, বিশ্বসিংহ রোড, কেশব রোড, গুঞ্জবাড়ি, রেলঘুমটি, জেলখানা মোড়, দেবীবাড়ি লাগোয়া রাস্তার দু’ধারে রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া, মরসুমী ফুল, ফলের প্রায় পাঁচ হাজার চারা গাছ লাগানো হয়। সাগরদিঘি পাড়ে ওই প্রকল্পের সূচনা করেন তৎকালিন বনমন্ত্রী অনন্ত রায়। পরিচর্যার অভাবে ওই সব চারাগাছের ৪০ শতাংশ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। প্রাক্তন বনমন্ত্রী অনন্ত রায় বলেন, “তিন বছর আগে কোচবিহার সবুজায়নের জন্য লাগানো চারাগাছগুলির মধ্যে ৬০ শতাংশের মতো এখনও বেঁচে রয়েছে। সেগুলির মধ্যে বেশ কিছু গাছের খারাপ অবস্থা। গাছগুলির যাতে একটিও না কমে যায় সেদিকে এমনই যত্ন নেওয়া দরকার। প্রয়োজনে বিষয়টি নিয়ে বর্তমান বনমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব।” গাছগুলির ওই অবস্থায় ক্ষুব্ধ পরিবেশ প্রেমী বিভিন্ন সংগঠন। কোচবিহার হেরিটেজ সোসাইটির কর্মকর্তা অরূপজ্যোতি মজুমদার বলেন, “গাছ বাঁচাতে রক্ষণাবেক্ষণের চাপানউতোর দুর্ভাগ্যজনক। পুরসভা, বন দফতর থেকে স্থানী।য় বাসিন্দা সবাইকে মিলে ওই কাজে নামতে হবে।” কোচবিহার নাগরিক অধিকার সুরক্ষা মঞ্চের সভাপতি রাজু রায় বলেন, “যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়াতেই প্রকল্পের বহু গাছ মরে নষ্ট হয়েছে। সরকারি টাকা খরচ করে লাগানো গাছ বাঁচাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।” |