কাজ মাত্র ৯ দিন
হাওড়ায় ১০০ দিনের কাজে বাধা কী, প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রীর
কশো দিনের কাজে হাওড়া কেন এত পিছিয়ে, জেলার আধিকারিকদের কাছে কার্যত সেই কৈফিয়তই চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সরকারি হিসেব বলছে, চলতি অর্থবর্ষে একশো দিনের কাজ প্রকল্পে হাওড়া জেলায় ‘কাজ’ হয়েছে সাকুল্যে ৯ দিন! গোটা রাজ্যে যার নিরিখে হাওড়ার অবস্থান ১৯ নম্বরে। জেলায় জেলায় সফরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যেখানে উন্নয়নে গতি আনতে বলছেন, প্রশাসনের উপর থেকে নিচুতলা পর্যম্ত সঠিক সমন্বয় গড়ে কর্মসংস্কৃতি ফিরিয়ে আনায় জোর দিচ্ছেন, সেখানে হাওড়ার এই হাল দেখে তিনি যে কিছুটা বিরক্ত, জেলার অফিসারদের একাংশও তা মানছেন।
সোমবার হাওড়ার নিউ কালেক্টোরেট ভবনের ‘পথের দাবি’ সভাগৃহে আয়োজিত প্রশাসনিক বৈঠকে একশো দিনের কাজ সম্পর্কে এই তথ্য জানার পরে অফিসারদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন ছুড়ে দেন, “কেন এত সময় নষ্ট হল? কেন সময়ে শেষ হল না? উলুবেড়িয়ায় সুযোগ থাকলেও কাজ হল না কেন? কোথায় অসুবিধে?”
প্রশাসনিক বৈঠকের পথে মমতা। নিজস্ব চিত্র
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন আধিকারিকদের মূলত যে বার্তা দিয়েছেন, তা হল: বসে থাকলে চলবে না। তবে প্রকল্প বাস্তবায়নে অফিসারদের যাবতীয় সাহায্যেরও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। আর সেই আশ্বাস পেয়ে আধিকারিকেরাও আগামী চার মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার পাল্টা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীকে। এক অফিসারের কথায়, “দু’ঘণ্টার বৈঠকে একশো দিনের কাজ নিয়েই বেশি কথাবার্তা হল। আলোচনা সন্তোষজনক। আমরা খুশি।”
হাওড়ায় এ দিনের প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুলতান আহমেদ-সহ রাজ্যের ১১টি দফতরের মন্ত্রী, ১৮টি দফতরের সচিব, মুখ্যসচিব সমর ঘোষ ও স্বরাষ্ট্র-সচিব জিডি গৌতম। একশো দিনের কাজের সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ, রাস্তাঘাট ও স্বাস্থ্য পরিষেবার উপরে গুরুত্ব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ-ও জানিয়েছেন, উলুবেড়িয়ায় তিনশো শয্যার একটা ইএসআই হাসপাতাল খোলা হবে। আর বালিটিকুরি ইএসআই হাসপাতালকে রূপান্তরিত করা হবে মেডিক্যাল কলেজে। স্বাস্থ্য পরিষেবা চাঙ্গা করতে বিডিও-দের মাঝেমাঝে সরকারি হাসপাতাল পরিদর্শনের পরামর্শও দেন তিনি।
পরে সংক্ষিপ্ত সাংবাদিক সম্মেলনেও মুখ্যমন্ত্রী হাওড়ার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। বলেন, “হাওড়ায় আরও ব্যাঙ্ক হওয়া প্রয়োজন। সেই চেষ্টা করছি। রাস্তাঘাটের উন্নতি দরকার। বিশেষত কোনা এক্সপ্রেসওয়ের। এটির ব্যাপারে ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটির সঙ্গে কথা বলছি।” হাওড়া জেলা হাসপাতালের উন্নতিসাধনের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পাশাপাশি মমতা জানান, ডোমজুড়, সাঁকরাইল, উদয়নারায়ণপুর-সহ জেলার মোট ছ’জায়গায় শিল্পতালুক গড়ে তোলার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে।
হাওড়ায় প্রশাসনিক কাজে কপ্টার ব্যবহারের জন্য হেলিপ্যাড এবং ডোমজুড়ে স্টেডিয়াম নির্মাণের ঘোষণা ছাড়াও জেলায় বন্যা মোকাবিলার প্রসঙ্গও তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “হাওড়ায় বন্যা একটা সমস্যা। বিশেষত আমতা ও উদয়নারায়ণপুরে। এ জন্য ডিভিসি-র সঙ্গে কথা বলছি। ওরা বলেছে, সংস্থার আধুনিকীকরণ করা হচ্ছে, যাতে বর্ষায় জল ছাড়া নিয়ন্ত্রণ করা যায়।”
তৃণমূলনেত্রী এ দিন জানান, খুচরো ব্যবসায় বিদেশি বিনিয়োগের বিরুদ্ধে আন্দোলনের কথা তাঁর দল আগেই ঘোষণা করেছে। “খুচরো ব্যবসায় বিদেশি বিনিয়োগ হলে গোটা রাজ্যের সঙ্গে সর্বনাশ হবে হাওড়া জেলারও বহু মানুষের, যাঁরা খুচরো ব্যবসা করে পেট চালান। আমরা বলেছি, খুচরো বাজার দোকানদার ও খুচরো ব্যবসায়ীদের হাতে থাকাই উচিত।” মন্তব্য মমতার।
হাওড়ায় পাঁচ মিনিটের ওই সাংবাদিক সম্মেলন সেরেই মুখ্যমন্ত্রী রওনা হয়ে যান কলকাতা বিমানবন্দরের উদ্দেশে, রাষ্টপতি প্রতিভা পাটিলকে স্বাগত জানাতে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.