রাস্তায় মিছিল, ভূগর্ভে মেট্রোয় ‘ঝাঁপ’ দুইয়ে মিলে সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনে ভোগান্তি শহরে।
পুলিশ জানায়, সোমবার ধর্মতলার রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে বামফ্রন্টের সভা এবং আইন অমান্য কর্মসূচিতে যোগ দিতে দুপুর ১২টার আগে থেকেই কলকাতা ও আশপাশের কয়েকটি জেলা থেকে মিছিল করে লোক আসতে শুরু করে। যার জেরে যানবাহনের গতি কমে যায় মধ্য কলকাতায়। ছোট-বড় মিছিল এস এন ব্যানার্জি রোড, বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট, গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউ, এ পি সি রোড, জওহরলাল নেহরু রোড, স্ট্র্যান্ড রোড দিয়ে যাওয়ার সময়ে সেই সব রাস্তায় দফায় দফায় আটকে যায় যান চলাচল। বিভিন্ন দিক থেকে মিছিল ধর্মতলায় পৌঁছনোর সময়ে লেনিন সরণি, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, এসপ্ল্যানেড রো (ইস্ট)-এ সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখতে হয় যান চলাচল। দুপুর দেড়টা নাগাদ রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ের তিনটি রাস্তাই বন্ধ করে দেয় পুলিশ। তার জন্য ঘুরিয়ে দেওয়া হয় বিভিন্ন রুটের বাস এবং মিনিবাসের গতিপথ।
তবে কলকাতা ট্রাফিক পুলিশের দাবি, এ দিনের রাজনৈতিক সমাবেশের জন্য মধ্য কলকাতার কোনও রাস্তাতেই যান চলাচল একেবারে বন্ধ হয়নি। ট্রাফিক-কর্তারা জানিয়েছেন, ধর্মতলা চত্বরে বিকেল সাড়ে তিনটের মধ্যে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে যায়।
অন্য দিকে, মেট্রো রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকাল ১০টা ২৩ মিনিট নাগাদ শোভাবাজার-সুতানুটি মেট্রো স্টেশনে দমদমমুখী ট্রেন ঢুকতেই তার সামনে ঝাঁপ দেন এক তরুণী। মেট্রো রেলের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রত্যুষকুমার ঘোষ বলেন, “চালক ট্রেন থামানোর পরে দেখা যায়, ওই তরুণী ‘ট্র্যাকবেড’ (লাইনের মাঝখানের অংশ)-এ পড়ে রয়েছেন।” ওই তরুণীর মাথায় গুরুতর আঘাত লেগেছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই তরুণী শ্যামপুকুর থানার রাজা কালীকৃষ্ণ টেগোর স্ট্রিটের বস্তির বাসিন্দা। তাঁর ব্যাগ থেকে পাওয়া একটি সচিত্র পরিচয়পত্রে বাড়ির ঠিকানা মেলে। পাওয়া গিয়েছে একটি সুইসাইড নোটও। ওই তরুণীর মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, ওই তরুণী প্রাইভেট টিউশন দেন। মূলত তাঁর রোজগারেই সংসার চলে। প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসা করে পুলিশ জেনেছে, ঘটনার সময়ে প্ল্যাটফর্মের মাঝামাঝি দাঁড়িয়ে ছিলেন ওই তরুণী। ট্রেনটির প্রথম কয়েকটি কামরা স্টেশনে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গেই লাইনে ঝাঁপ দেন তিনি। স্টেশনে তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার সময়ে খবর যায় স্থানীয় শ্যামপুকুর থানায়। পুলিশ এলে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এই ঘটনার জেরে কবি সুভাষ থেকে দমদম পর্যন্ত প্রায় আধ ঘণ্টা ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়। সকালের ওই ব্যস্ত সময়ে মেট্রো বন্ধ থাকায় সমস্যায় পড়েন বহু অফিসযাত্রী। তবে মেট্রো-কর্তৃপক্ষের দাবি, ঘটনার কিছুক্ষণ পরেই ফের চালু করে দেওয়া হয় কবি সুভাষমুখী ট্রেন। সকাল ১০টা ৫১ মিনিট নাগাদ দমদমমুখী লাইনেও শুরু হয় ট্রেন চলাচল। |