তরজা বাম-তৃণমূলে
বেলঘরিয়ায় স্কুলের ভোট নিয়ে ঝামেলা, স্থগিত হল গণনা
পালাবদলের পরেও স্কুল-কলেজের পরিচালন সমিতির নির্বাচনে রাজনীতির দাপট মোটেই কমেনি। ওই নির্বাচনকে ঘিরে আশপাশের পরিবেশ আগের মতোই অস্থির হয়ে উঠছে। অন্তত এই ক্ষেত্রে বাম আমলের ধারাবাহিকতা যে বজায় রয়েছে, রবিবার বেলঘরিয়ার হরদয়াল নাগ আদর্শ বিদ্যালয় ফর গার্লস-এর পরিচালন সমিতির নির্বাচনে তা স্পষ্ট হল। রবিবারই উত্তর চব্বিশ পরগনার হাবরার লক্ষ্মীপুরে একটি স্কুলে ও শ্যামনগরের মুলাজোড়ের একটি গ্রন্থাগারের পরিচালন সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৃণমূল এবং সিপিএম সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। বেলঘরিয়ায় সংঘর্ষ হয়নি, রাত পর্যন্ত উত্তেজনার জেরে শিক্ষিকাদের স্কুলে আটকে থাকতে হয়েছে!
পরিচালন সমিতির নির্বাচনকে ঘিরে বেলঘরিয়ার ওই স্কুলে পরিস্থিতি এমনই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে, ভোট গণনা মাঝ পথে বন্ধ করে দিতে হয়। নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা অফিসার তাপস সিংহরায় সোমবার বলেন, “নিরাপত্তার অভাবে গণনা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তা না হলে ব্যালট ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটতে পারত। এখন ব্যালট বাক্স পুলিশ হেফাজতে রাখা আছে।” স্কুল সূত্রের খবর, রবিবার ওই স্কুলে পরিচালন সমিতির ভোট ছিল। বিকেলে ভোটদান পর্ব নির্বিঘ্নেই শেষ হয়। সন্ধ্যার পরে শুরু হয় গণনা। ইলেকশন অফিসার তাপসবাবু জানান, ভোটার ছিল ১২০৭। ভোট পড়ে ৭৪০টি। রাত ন’টা পর্যন্ত গোনা হয় ৫৬৮টি ব্যালট। তাতে এগিয়ে ছিলেন বামপন্থী প্রার্থীরা। ফলাফলের ইঙ্গিত পেয়ে এক দল উত্তেজিত হয়ে ওঠে। অ-বাম প্রার্থীদের পক্ষ থেকে বলা হয়, ভোট গোনার পদ্ধতিতে ত্রুটি আছে। পুলিশ জানায়, এর পরে গণনা বন্ধ রাখার দাবিতে হইচই শুরু হয়।
স্কুলের পরিচালন সমিতির বিদায়ী সম্পাদক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “ভোটে হারের আভাস পেয়ে তৃণমূল আশ্রিত এক দল দুষ্কৃতী স্কুলের বাইরে তাণ্ডব শুরু করে। শিক্ষিকাদের গালিগালাজ করতে থাকে। তবে স্কুলে ঢোকার সব গেট বন্ধ থাকায় তারা ভিতরে ঢুকতে পারেনি।” স্থানীয় বিধায়ক তথা তৃণমূল নেত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, “ভোট শান্তিপূর্ণ হলেও ভোট গণনায় কারচুপি হয়েছে। নিয়মনীতি মানা হয়নি। ভোট গণনা বন্ধ রাখার দাবি তুলেছি।”
স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা স্বাতী কাঞ্জিলাল বলেন, “বাইরে দু’পক্ষের সমর্থকেরা ছিলেন। সেখানে গণ্ডগোলের জেরে আমি ও অন্য শিক্ষিকারা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি।” ওই স্কুলেরই এক শিক্ষিকা বলেন, “রাত প্রায় সাড়ে ১২টা পর্যন্ত স্কুলের ভিতরে আটকে ছিলাম। বাইরে থেকে আমাদের উদ্দেশে অশালীন মন্তব্য করা হয়।” পরিস্থিতি ঘোরালো হওয়ায় পুলিশের পদস্থ কর্তারা ঘটনাস্থলে যান। প্রধান শিক্ষিকা-সহ সকলকেই পুলিশের গাড়িতে করে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়।
অসমাপ্ত গণনার কাজ কোথায়, কী ভাবে হবে, তা জানা যায়নি। বরং ওই ব্যাপারে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। সোমবার স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা-সহ এক প্রতিনিধি দল ডিআই (সেকেন্ডারি) সুকুমার দাসের কাছে বিষয়টি লিখিত ভাবে জানান। মহকুমাশাসক অজয় পাল বলেন, “কী হবে, তার সিদ্ধান্ত নেবেন ইলেকশন অফিসার।” তাপসবাবু বলেন, “গণনার কাজ শেষ করতে পারিনি। ব্যালট বাক্স তুলে দিয়েছি পুলিশের কাছে। এ বার সিদ্ধান্ত নেবে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।” মধ্যশিক্ষা পষর্দের সচিব শান্তিপ্রসাদ সিংহ বলেন, “বিষয়টি এখনও জানি না। ডিআইয়ের কাছ থেকে রিপোর্ট পাওয়ার পরেই পর্ষদ সিদ্ধান্ত নেবে।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.