সল্টলেক
গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে স্থগিত সিপিএম সম্মেলন
লের মধ্যে ঐকমত্য তৈরির দলীয় নির্দেশ যে এখনও কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ, তার ফের প্রমাণ মিলল সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনার সল্টলেক আঞ্চলিক কমিটির সম্মেলনে। ‘গোষ্ঠী-কোন্দলের’ জেরে নতুন কমিটি তৈরি হওয়া দূর অস্ত্, সম্মেলনই স্থগিত করে দিতে বাধ্য হন জেলা নেতৃত্ব। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার বিধাননগরের বিডি প্রেক্ষাগৃহে।
যদিও জেলা নেতৃত্বের দাবি, সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত প্রেক্ষাগৃহ ভাড়া করা ছিল। কিন্তু প্রতিনিধিদের আলোচনা, খাবারের বিরতি-সহ নানা কারণে সম্মেলন তার মধ্যে শেষ করা যায়নি। তাই এ দিন সম্মেলন স্থগিত হয়ে যায়। পরবর্তী একটি দিনে সম্মেলন শেষ করা হবে।
দলীয় সূত্রে খবর, রবিবার সম্মেলনের শেষ পর্বে নতুন কমিটি গঠনের সময় গোলমাল বাধে। পূর্বতন কমিটি নতুন কমিটির তালিকা পেশ করতেই প্রতিবাদ ওঠে সম্মেলন কক্ষে। তালিকায় প্রয়াত প্রাক্তন ক্রীড়ামন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তীর শ্যালকের ছেলে গৌরবদীপ ভট্টাচার্যের নাম শুনেই আপত্তি জানান প্রতিনিধিদের একাংশ। শুরু হয় তালিকা-পাল্টা তালিকা পেশের পালা। মঞ্চে হাজির অমিতাভ নন্দী, রমলা চক্রবর্তী, পল্টু দাশগুপ্ত, রবি সরকার-সহ জেলা নেতারা ঐকমত্যের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। ভোটাভুটি ছাড়া সমস্যা মিটবে না, এমন অবস্থা তৈরি হয়। কিন্তু ততক্ষণে নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে যায়। ফলে সম্মেলন স্থগিত রাখা হয়।
এ বছর সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনার জেলায় বিভিন্ন আঞ্চলিক কমিটির সম্মেলনে ইতিমধ্যেই এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। আটটি ক্ষেত্রে সম্মেলনে গোলমাল হয়েছে। নিমতায় রীতিমতো হাতাহাতিও হয়। ‘গোষ্ঠী-কোন্দলে’ খড়দহ সম্মেলন হয়নি। ব্যারাকপুরে এক দিনে সম্মেলন শেষ করা যায়নি। সল্টলেকেও তার পুনরাবৃত্তি হল।
দলীয় সূত্রে খবর, প্রয়াত সুভাষ চক্রবর্তী, অমিতাভ নন্দী, পল্টু দাশগুপ্তের অনুগামীরা ‘বিভেদ’ ভুলে একত্রিত হলেও পাল্টা গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে বেশ কয়েক বছর আগে। চার বছর আগে এই আঞ্চলিক কমিটির সম্মেলনেই সুভাষ-নন্দী গোষ্ঠী পর্যুদস্ত হয়েছিল। এমনকী, জেলায় দলের অবস্থা খারাপ হওয়ার জন্য অমিতাভ নন্দীকে রীতিমতো কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিলেন স্থানীয় নেতৃত্বের একাংশ। সম্মেলনের মঞ্চে দাঁড়িয়ে কর্মীদের সামনে অমিতাভবাবুকে কার্যত অপদস্থ হতে হয়েছিল। আঞ্চলিক কমিটিতে অধিকাংশ জেলা নেতা রবি সরকারের অনুগামী বলেই পরিচিত।
সল্টলেক আঞ্চলিক কমিটির এটি অষ্টম সম্মেলন ছিল। ইতিমধ্যে এই কমিটির আওতায় থাকা এলাকায় পুরসভা নির্বাচনে একটি ওয়ার্ড দখলে রাখতে পারলেও বিধানসভা ও লোকসভা নির্বাচনে পুরোপুরি পর্যুদস্ত হয়েছে বামেরা। হারের কারণ পর্যালোচনায় উঠে এসেছে এই আঞ্চলিক কমিটির গোষ্ঠীকোন্দলের কথা। তাই সব গোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের নিয়ে নতুন কমিটি তৈরির জন্য জেলা নেতৃত্ব থেকে বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর উপর ‘চাপ’ ছিল। সে অনুযায়ী নতুন কমিটির তালিকায় গৌরবদীপের নাম রেখে ঐকমত্যের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু প্রতিনিধিদের একাংশ তা মানতে না চাওয়াতেই শুরু হয় গোলমাল। এক পক্ষের অভিযোগ, ক্ষমতা ধরে রাখতে ‘পরিকল্পনা মাফিক’ এটা করা হয়েছে। অন্য পক্ষের পাল্টা দাবি, দলীয় নির্দেশ মেনেই তালিকা হয়েছিল। কিন্তু কমিটি পুরোপুরি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনতেই গোলমাল করা হল।
অভিযোগ অস্বীকার করে সিপিএম নেতা অমিতাভ নন্দী বলেন, “অনেক জায়গাতেই সম্মেলন একদিনে শেষ করা যায়নি। কয়েকটি নামে আপত্তি থাকতেই পারে। তা ছাড়া, ভোটাভুটি নিষিদ্ধ নয়। এই কারণে সম্মেলন স্থগিত হয়ে যায়নি। সে অভিযোগ ঠিক নয়। পরে একটি দিনে সম্মেলন শেষ হবে এবং তা ঐকমত্যের ভিত্তিতেই হবে।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.