জেলার হিমঘরগুলিতে আলু মজুত রাখার মেয়াদ শেষ হচ্ছে কাল, ৩০ নভেম্বর। কিন্তু জেলার মোট ১০৭টি হিমঘরে ১১ লক্ষ ৮৪ হাজার ৭৯৯ মেট্রিক টন আলুর মধ্যে প্রায় ২০ শতাংশ এখনও হিমঘরে রয়েছে। মজুত আলুর পরিমাণ প্রায় ২.৩ লক্ষ মেট্রিক টন। ফলে হিমঘরগুলি ভাড়া বৃদ্ধি ও হিমঘরে আলু মজুতের দিন বাড়ানোর আবেদন করেছে রাজ্য কৃষি বিপণন দফতরের কাছে। কিন্তু ওই দফতর এখনও এ বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত জানাতে পারেনি।
জেলা কৃষি বিপণন দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর প্রিয়দর্শী সেন বলেন, “নতুন আলু এখনও না ওঠায় বাজারে পুরনো আলুর যথেষ্ট চাহিদা আছে। বর্তমানে হিমঘরে যে আলু মজুত রয়েছে তার বড় অংশই ব্যবসায়ীদের। তবে আলু মজুতের সময়ে বন্ডের দাম ছিল ৩৭০-৩৮০ টাকা কুইন্ট্যাল। বর্তমানে তা নেমে দাঁড়িয়েছে ৩৫০ টাকায়। আলুর দাম আচমকা পড়ে যাওয়ার সম্ভবনাও নেই।” |
২০০৯ সালে জেলার ১০৫টি হিমঘরে মজুত হয়েছিল ৭ লক্ষ ৬২ হাজার ৪২২ মেট্রিক টন আলু। পরের বছর জেলার ১০৬টি হিমঘরে মজুত আলুর পরিমাণ ছিল ১১ লক্ষ ৪ হাজার ৪৫৬ মেট্রিক টন। সে বার জেলার প্রচুর আলুর উৎপাদন হওয়ায় বেনফেড, কনফেড ইসিএসসি-র মত সরকারি এজেন্সিগুলি আলু কিনতে নামে। কিন্তু সরকারি এজেন্সির কেনা প্রায় দু’লক্ষ টন আলুই সে বার ফেলা যায়। এ বার কী পরিস্থিতি দাঁড়াবে? জেলা কৃষি বিপনন দফতর সূত্রে বলা হয়েছে, এই পরিস্থিতিতে হিমঘরের মালিকেরা বলছেন, ১৫ দিনের অতিরিক্ত সময় হিমঘরে আলু মজুত করতে হলে তাঁদের ১৫ টাকা অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হবে মজুতকারীকে। সাধারণত ১ মার্চ থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত হিমঘরে আলু মজুত রাখার ভাড়া ১০১ টাকা প্রতি কুইন্ট্যাল। তার জায়গায় ১১৬ টাকা ভাড়া চাইছেন তাঁরা। কিন্তু এই অতিরিক্ত ভাড়া মঞ্জুর করতে এখনও নারাজ সরকার। প্রিয়দর্শীবাবু বলেন, “শুক্রবার আমাদের দফতরের অতিরিক্ত সচিব রাজেশ সিংহের সভাপতিত্বে মহাকরণে একটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হলেও নির্দিষ্ট কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি। ফলে আলু মজুতের অতিরিক্ত সময় বা ভাড়া বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে কি না, তা এখনও আমাদের জানা নেই।” মেমারির হিমঘর মালিক রমেশ হাজরার দাবি, “যা শুনছি, সরকার ডিসেম্বর পর্যন্ত হিমঘরে আলু মজুত রাখতে চায়। এই অতিরিক্ত এক মাসের জন্য কুইন্ট্যালে মাত্র আট টাকা অতিরিক্ত ভাড়া দেওয়া হবে। এই ভাড়া দিলে আমাদের ওই এক মাস আলু রাখার বিদ্যুৎ খরচও উঠবে না।” |