খেতমজুরদের মজুরি বৃদ্ধির দাবি ও দলের এক শিক্ষক নেতাকে পুলিশি হেনস্থার অভিযোগে সোমবার কালনার সুলতানপুর পঞ্চায়েতের উপলতি গ্রামে মিছিল করে সিপিএম। তৃণমূলের অভিযোগ, লাঠিসোটা নিয়ে বিশৃঙ্খল মিছিল করে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায় সিপিএম। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে গ্রামে পুলিশি টহল চলছে।
এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ গ্রামের কালীতলা এলাকায় জমায়েত হয় খেতমজুরেরা। সিপিএমের নেতৃত্বে শুরু হয় মিছিল। ওই গ্রামের পানপাড়া, বামুনপাড়া, আদিবাসীপাড়া-সহ বিভিন্ন এলাকা পরিক্রমা করে মিছিলটি। সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের অভিযোগ, কোনও নির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়াই কাঁদন হেমব্রম নামে তাঁদের এক শিক্ষক নেতার বাড়িতে রবিবার রাতে চড়াও হয় বুলবুলিতলা ফাঁড়ির পুলিশ। তাঁর বাড়িও ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। তাঁদের দাবি, তৃণমূলের মদতেই ঘটনাটি ঘটেছে। যদিও কিষাণ তৃণমূলের নেতা রাজকুমার পান্ডের দাবি, “গত ২৫ নভেম্বর আমাদের এক কর্মীকে হেনস্থা করেছিলেন ওই শিক্ষক নেতা। ওই কর্মী ফাঁড়িতে অভিযোগ জানালে পুলিশ তার তদন্তে যায়।” |
ঘটনার সূত্রপাত খেতমজুরদের মজুরি বৃদ্ধির দাবিকে কেন্দ্র করে। শনিবার এ নিয়ে গ্রামে খেতমজুর ও চাষিরা আলোচনায় বসেন। চাষিদের পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়, খেতমজুরদের মজুরি ৬৮ টাকা ও ২ কেজি চাল থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা ও ২ কেজি চাল করা হবে। কিন্তু সেই প্রস্তাবে রাজি হননি খেতমজুরেরা। তাঁরা প্রতি দিন ৯০ টাকা মজুরি ও ২ কেজি চাল দাবি করেন। দু’পক্ষই তাদের দাবিতে অনড় থাকায় সভাটি ভেস্তে যায়। রাজকুমারবাবুর অভিযোগ, “আশপাশের এলাকার খেতমজুরদের মজুরি ৮০ টাকা ও ২ কেজি চাল। কিন্তু ওই সভায় খেতমজুরেরা ৯০ টাকা মজুরি দাবি করলে চাষিদের কাছে তা বেশি বলে মনে হয়। কিন্তু কাঁদনবাবুর লোকজনেরা ৯০ টাকাতেই অনড় থাকেন। এমনকী দাবি না মানা হলে খেতমজুর বয়কট করা হবে বলেও জানান তাঁরা।” তাঁর দাবি, “এর পরে সিপিএমের নেতাদের ফোন করা হয়। ঠিক হয়, বিষয়টি পঞ্চায়েত অফিসেই মিটিয়ে ফেলা হবে। তবে তার আগেই খেতমজুরদের উস্কে সিপিএম মিছিল করায় উত্তেজনা ছড়ায়। এই ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার দলের তরফে স্থানীয় বেলেরহাট এলাকা থেকে মিছিল করা হবে।”
সিপিএমের কালনা পূর্ব লোকাল কমিটির সম্পাদক সুকুল শিকদারের দাবি, “রবিবার চাষি ও খেতমজুরদের বৈঠকে ওই শিক্ষক নেতা হাজির ছিলেন না। তবুও তৃণমূলের মদতে পুলিশ তাঁকে বাড়ি গিয়ে হেনস্থা করে। সোমবার মিছিল করে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।” সুলতানপুর পঞ্চায়েতটি পূর্বস্থলী দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। ওই কেন্দ্রের বিধায়ক স্বপন দেবনাথ বলেন, “আমরা খেতমজুরদের মজুরি বৃদ্ধির বিপক্ষে নই। আমরা শান্তিপূর্ণভাবেই এই ঘটনার প্রতিবাদ করব।”
বুলবুলিতলা ফাঁড়িটি কালনা থানার নিয়ন্ত্রাধীন। কালনা থানার এক আধিকারিকের দাবি, “একটি ঘটনার তদন্ত করতে ওই শিক্ষক নেতার বাড়িতে যাওয়া হয়। তাঁকে হেনস্থা করা হয়নি।” |