সমস্যায় সিপিএম
বিতণ্ডা, হেনস্থায় তপ্ত শিল্পাঞ্চলের দলীয় সম্মেলন
কোথাও সম্মেলন ভণ্ডুল। কোথাও আবার সম্মেলন শুরু করেও শেষ করা যাচ্ছে না। রাজ্যে সরকার পরিবর্তনের পরে দলের নেতৃত্ব সাংগঠনিক ভাবে ঘুরে দাঁড়ানো এবং সর্ব স্তরের নেতা-কর্মীদের ‘শুদ্ধকরণে’র কথা মুখে বললেও লোকাল কমিটি স্তরের সম্মেলনে আগের মতোই ‘বিতণ্ডা’ দেখা দিচ্ছে সিপিএমে। নিচু তলার কর্মী এবং নেতাদের মধ্যে ‘দূরত্ব’ এবং বিবাদও প্রকট হচ্ছে। সম্মেলনের মধ্যেই নেতা-কর্মীদের হেনস্থা, নিগ্রহের অভিযোগও আসছে।
বিধানসভা নির্বাচনের আগেই দলের ভাবমূর্তির স্বার্থে এক শ্রেণির নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, গৌতম দেবেরা। কিন্তু বিধানসভা ভোটে সিপিএমের ভরাডুবির পরেও সেই সব নেতারা বহাল তবিয়তে থেকে গিয়েছেন বলে দলেরই কর্মীদের অভিযোগ। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের লোকাল সম্মেলনগুলিতে প্রশ্ন উঠছে, যে নেতারা দুর্নীতিগ্রস্ত বলে অভিযোগ, তাঁরা এখন শাসক দলের কিছু নেতা-মন্ত্রীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে দলে ‘কর্তৃত্ব’ জারি রেখেছেন কী করে? তা হলে আর ‘শুদ্ধকরণে’র কথা বলা হচ্ছে কেন?
সম্মেলন ঘিরে দলীয় বিবাদের এই ছবিই ধরা পড়েছে উত্তর ২৪ পরগনার শিল্পাঞ্চলে নিমতা-২ লোকাল কমিটির সম্মেলনে। বিরাটির তরুণ সেনগুপ্ত হলে শনিবার সম্মেলন চলাকালীন মঞ্চে-বসা নেতাদের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সাধারণ কর্মীরা। চার বছর পরে যে হেতু সম্মেলন হচ্ছে, তাই স্বাভাবিক ভাবেই গত তিন বছরে রাজ্যে একের পর এক নির্বাচনে সিপিএমের পরাজয়ের প্রসঙ্গ আলোচনায় ওঠে। লোকাল কমিটির অধীনে থাকা শাখা কমিটিগুলিকে ৭ মিনিট করে বলার সুযোগ দেওয়াকে কেন্দ্র করে গন্ডগোল চরমে ওঠে। শেষ পর্যন্ত সময় বাড়িয়ে ১০ মিনিট করা হলেও নিজেদের ‘সমস্যা’র কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না, এই অভিযোগে হইচই শুরু করেন এক দল প্রতিনিধি। নতুন কমিটি গঠনের প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে সম্মেলনের মধ্যেই এক কর্মী নিগৃহীত হন বলে অভিযোগ। সমীরণ মিস্ত্রি নামে ওই সিপিএম কর্মী বলেন, “নতুন কমিটি গঠনের জন্য মনোনয়ন দেওয়াকে কেন্দ্র করে গন্ডগোল হচ্ছিল। আমি মনোনয়ন জমা দিতে গেলে আমাকে হেনস্থা করা হয়। জেলা ও জোনাল কমিটির নেতাদের উপস্থিতিতেই আমাদের কয়েক জন কমরেড আমার ও অন্য কয়েক জনের উপর চড়াও হয়ে মনোনয়নের কাগজ ছিঁড়ে ফেলেন। আমাদের শাসানো হয়। নেতারা চুপ করে বসে দেখেন। শেষ পর্যন্ত সেই পুরনো কমিটিই থেকে যায়।”
‘নিগৃহীত’ কর্মীর প্রশ্ন, “যেখানে আমাদের কন্ঠরোধ করা হয়, দুর্নীতিকে ধামাচাপা দেওয়া হয়, সেখানে শুদ্ধকরণ কী করে হবে?” ওই সম্মেলনে হাজির সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য সুরঞ্জন ত্রিপাঠী অবশ্য এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “গোটা সম্মেলনটাই খুব শান্তিপূর্ণ ভাবে হয়েছে। দলের নিয়ম-নীতি অনুযায়ী সদস্যদের বলার সময়টা নির্ধারিত থাকে। এ ক্ষেত্রেও তা-ই ছিল। অসন্তোষ বা হেনস্থার অভিযোগ ঠিক নয়।”
এর আগে খড়দহ-২ লোকাল কমিটির সম্মেলন শুরু হওয়ার মুখেই নেতা ও কর্মীদের গোলমালের জেরে ভেস্তে গিয়েছিল। নিমতার ওই ঘটনার দিনই ব্যারাকপুর পানপাড়াতেও একটি সম্মেলন ছিল। সেখানেও প্যানেল তৈরি ও ভোটাভুটি নিয়ে গন্ডগোল বাধে। কাঁচরাপাড়ার একটি সম্মেলনেও নিচু তলার কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ প্রকট হয়েছে। তবে তা গন্ডগোল বা ধস্তাধস্তির জায়গায় যায়নি। সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক অমিতাভ বসু অবশ্য বলেন, “প্রতিদিনই বিভিন্ন জায়গায় সম্মেলন হচ্ছে। কর্মীদের ক্ষোভ অসন্তোষ থাকতেই পারে। নিমতার ঘটনাটি আমার জানা নেই। তবে এমন কোনও ঘটনা ঘটে থাকলে তা অনভিপ্রেত। আমি খোঁজ নেব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.