প্রতিশ্রুতিই সার, ভরসা সেই সাঁকো
গ্নপ্রায় বাঁশের সাঁকো দিয়েই চলে নিত্য যাতায়াত। স্বাস্থ্যকেন্দ্র কিংবা স্কুলে যেতে গ্রামের মানুষের ভরসা সেই সাঁকোই। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় হরিহরপাড়া থেকে নওদার প্রধান পিচের রাস্তাটির মেরামতি হয়েছে। তবে বড় খালের উপরে সেতু নির্মান হয়নি। খালের উপরের ভগ্নপ্রায় এই সাঁকো দিয়ে প্রাণ হাতে নিয়ে যাতায়াত করেন এলাকার বাসিন্দারা।
এলাকার উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র অথবা স্থানীয় স্কুলে যেতে সাঁকো পেরিয়েই চলাচল করেন আসন্ন প্রসবা থেকে স্কুল পড়ুয়া। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সব থেকে বেশি সমস্যা হয় বর্ষায়। খালে জল বাড়ে। টলমলে সাঁকোর উপর দিয়ে খাল পেরোতে রীতিমত ভয় হয়। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, বছর চারেক আগে নওদা থেকে হরিহরপাড়া পর্যন্ত রাস্তাটি নির্মাণ করা হলেও খালের উপরে সিমেন্টের সেতু তৈরির কোনও উদ্যোগই নেয়নি প্রশাসন। সেই সময়ে সারা বছর পায়ে হেঁটেই মানুষ খাল পার হতেন। তবে বর্ষার সময়ে ভরা খাল পেরোতে ছোট ডিঙা নামানো হত। বেলডাঙার কালীতলা থেকে ঘোড়ামারা মহিষমারা উচ্চ বিদ্যাপীঠ কিংবা ঘোড়ামারা স্বাস্থ্যকেন্দ্র যাওয়ার এটাই প্রধান রাস্তা। রাত বিরেতে রোগীকে নিয়ে যেতে দুর্ভোগ পোহাতে হয় এলাকার বাসিন্দাদের। ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীদের বহু আবেদনেও সমস্যার কোনও সুরাহা হয়নি। বছর দুই আগে গ্রামবাসীরা সকলে মিলে চাঁদা তুলে নিজেরাই ওই সাঁকো তৈরি করেন।
এ ভাবেই চলে পারাপার। ছবি তুলেছেন সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়।
নওদার জেলা পরিষদের সদস্য আরএসপি-র বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, “চার বছর আগে ওই পিচের রাস্তা তৈরি করা হয়। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় ওই রাস্তা নির্মাণ করা হলেও সিমেন্টের সেতু তৈরি সম্ভব হয়নি। সেতু তৈরি ওই যোজনার আওতায় ছিল না। জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে সেতু তৈরির জন্য একাধিকবার জেলা পরিষদের বাস্তুকারদের নিয়ে আসা হয়। তাঁরা সেতু তৈরিতে ২৫ লক্ষ টাকার ব্যায়ের কথা জানান। কিন্তু গত বিধানসভা নির্বাচনের পরে জেলা পরিষদের বাজেট পেশ না হওয়ায় সেতু নির্মাণ আটকে যায়। আগামী দিনে বাজেট সঠিক ভাবে পাশ করা হলে আশা করছি সেতুর সমস্যা মিটে যাবে।” নওদা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আরএসপি-র আবদুল বারি মোল্লা বলেন, “সমস্যা মেটাতে একশো দিনের কাজ প্রকল্পের মাধ্যমে সেতু তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে।”
তবে স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, পঞ্চায়েত ওই সেতু নির্মানের কোনও উদ্যোগই করছে না। এলাকার বাসিন্দা মানজেত শেখ বলেন, “পঞ্চায়েত সেতু নির্মাণে কোনও উদ্যোগ করছে না। ওই সেতু পার হয়ে যাতায়াত করাটা খুবই সমস্যার ব্যাপার।” স্থানীয় বাসিন্দা রিন্টু শেখ বহরমপুর কলেজের ভূগোল অনার্সের ছাত্র। তিনি বলেন, “রোগী, চিকিৎসক, ছাত্র, শিক্ষক সকলেই দিনের পর দিন ওই সাঁকো পার হয়ে চলাচল করছেন। কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হচ্ছে না।” ঘোড়ামারা মহিষমারা স্কুলের ছাত্র সহেল রানার অভিজ্ঞতা, “এক দিন স্কুল যেতে খুব দেরী হয়ে গিয়েছিল। সাইকেল নিয়ে সাঁকো পার হতে গিয়ে হঠাৎ আটকে যায়। ভাগ্যিস বন্ধুরা সঙ্গে ছিল! না হলে সে দিন খুব বিপদ হত।” স্কুল শিক্ষক তপন ঘোষ বলেন, “আমাকে রোজ ওই সাঁকো পেরিয়ে বেলডাঙা থেকে আসতে হয়। দিনের বেলা কোনও রকমে সেতু পার হওয়া যায়, সমস্যা চরমে পৌঁছয় রাতের বেলা। এলাকায় বিদ্যুৎ থাকলেও ওই সাঁকোর আশপাশে সন্ধ্যার পর থেকে অন্ধকারই থাকে। সেই সময়ে রাত বিরেতে মরনাপন্ন রোগীকে নিয়ে সাঁকো পার হওয়া খুবই বিপজ্জনক।”
স্থানীয় গ্রামগুলো ছাড়াও হরিহরপাড়া আর ডোমকলের যোগসূত্রও ওই রাস্তা। আর সেই রাস্তায় কোনও সেতু নির্মাণ না হওয়ায় এলাকার মানুষকে প্রাণ হাতে করেই যাতায়াত করতে হচ্ছে দিনের পর দিন। যদিও পূর্ত প্রতিমন্ত্রী সুব্রত সাহা দ্রুত সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দিয়েছেন। প্রতিশ্রুতি আগেও মিলেছে। এ বার সমাধানের অপেক্ষায় গ্রামবাসীরা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.