সম্পাদক সমীপেষু...
বহুমাত্রিক ভূপেন হাজারিকা
ভূপেন হাজারিকা প্রয়াত’ সংবাদ (৬-১১) প্রসঙ্গে আমার কয়েকটি সংযোজন।
আপনারা ভূপেনবাবুর নিজের উক্তি ঠিকই তুলেছেন “নিজেই বলতেন, মায়ের মুখের ঘুমপাড়ানি গানই তাঁর গানের প্রথম পাঠ”। এ পাঠ তাঁর সুরকার জীবনে চিরস্থায়ী হয়। মায়ের মুখে শোনা শৈশবের ঘুমপাড়ানি অসমিয়া গানের সুরেই তিনি লতা মঙ্গেশকরের পুজোর হিট বাংলা গান ‘রঙ্গিলা বাঁশিতে কে ডাকে’, সুরারোপিত করেন।
আপনারা তাঁর বহুমুখী প্রতিভা ও কর্মকৃতিত্বের পরিচায়নে লিখেছেন “তিনি কবি-গায়ক-সংগীত পরিচালক। আবার চিত্রপরিচালক, প্রযোজক, অভিনেতাও বটে”। এর সঙ্গে তিনি গুয়াহাটির একটি কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপনা করতেন। ক্লাসে ছাত্রছাত্রীরা তাঁকে পড়ানোর বদলে কেবল গান গাওয়ার আবদার করায়, অধ্যাপনা ছেড়ে দেন।
তিনি বাংলা ভাষায় তোলা ‘মাহুত বন্ধু রে’ ছায়াছবির পরিচালক, সংগীত পরিচালক ও নেপথ্য গায়ক ছিলেন। এই ছবিটিতেই ছিল প্রতিমা বড়ুয়ার কণ্ঠে গাওয়া বিখ্যাত লোকগীতিটি তোমরা গেইলে কি আসিবেন
মোর মাহুত বন্ধু রে।

উত্তম-সুচিত্রা অভিনীত ‘জীবনতৃষ্ণা’ ছায়াচিত্রে উত্তমের লিপে তাঁর নিজের সুরে গাওয়া গান
সাগরসঙ্গমে সাঁতার কেটেছি কত
কখনও তো হই নাই ক্লান্ত
’।
এককালে দর্শক-শ্রোতাদের বিপুল সমাদর পেয়েছিল।
আপনারা তাঁর ‘দোলা’র মতো কালজয়ী গানের উল্লেখ করেছেন। এই গানটি একক কণ্ঠে ক্যাসেটে গাইবার আগে তিনি হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে ৭৮ আর পি এম কলম্বিয়া রেকর্ডে গেয়েছিলেন দ্বৈতকণ্ঠে। রেকর্ডের এক পিঠে ছিল ‘এই আঁকাবাঁকা পথের দু’ধারে... দোলা।’ আর এক পিঠে ছিল ‘গুমগুম গুমগুম মেঘ ওই গরজায়।’
হিন্দি ‘রুদালি’ ছবির গানের সুরকার হিসেবে তিনি রাষ্ট্রীয় এবং আন্তর্জাতিক এশিয়া প্যাসিফিক পুরস্কার পান। এর অধিকাংশ গান অসমিয়া ‘বিহু’-র সুরে বাঁধা।
বাজার না রাস্তা!
বঙ্কিম সেতুতে বসতে ফের হকার-বিক্ষোভ’ (২-১১) শীর্ষক সংবাদটি পড়ে একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করতে চাই। কর্মসূত্রে প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড সংলগ্ন ই এম বাইপাস কানেক্টর প্রায় রোজই আমাকে ব্যবহার করতে হয়। গত প্রায় এক বছর ধরে বেড়ে-চলা গাড়ি, বাস, অটো, রিকশা আর মানুষ নিয়ে এই রাস্তায় হালতুর মোড় ক্রমশ একটি ব্যস্ত জায়গায় পরিণত হচ্ছে। আর, সেই মোড়ের ঠিক ওপরেই একফালি ডিভাইডারে ধীরে ধীরে গজিয়ে উঠছে একটি বাজার। যেখানে মুরগি (একটি খাঁচাও প্রতিষ্ঠিত), মাছ, শাক-সবজি সবই পাওয়া যায়। এই বাজার অদূর বা সুদূর ভবিষ্যতে একদিন এমন আকার ধারণ করবে যে, ব্যস্ততর হতে থাকা এই রাস্তার ওই অঞ্চলে যানবাহন চলাচলে বিপুল সমস্যা দেখা দেবে। তখন প্রশাসন তাদের পুনর্বাসনের চেষ্টা করবে। রাস্তা অবরোধ করে তার প্রতিবাদ হবে, ইত্যাদি।
কেউ ভোলে না
আমরা ভুলেই থাকলাম’ (১৭-১০) শীর্ষক পত্র নিয়ে আরও দু’চারটে কথা মনে করিয়ে দেওয়া যায়। বঙ্গীয় জাতীয় শিক্ষা পরিষৎ প্রতি বছর কমবেশি আটচল্লিশটি ‘রবিসন্ধ্যা’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আসছে সূচনা থেকেই। এই বক্তৃতা সভাগুলির মধ্যে স্মরণীয় ব্যক্তির জীবনী নিয়েও আলোচনা হয়ে থাকে। এই বছর ১৮ সেপ্টেম্বর ডা. নীলরতন সরকার এবং প্রথম মহিলা চিকিৎসক ডা. কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়ের স্মৃতিচারণের আয়োজন করা হয়েছিল।
বক্তা ছিলেন প্রতিষ্ঠানের সম্পাদক ডা. আনন্দদেব মুখোপাধ্যায়। কেবলমাত্র এই দু’জনের স্মৃতিচারণ নয়, রবিসন্ধ্যার বিষয় তালিকায় একটি বক্তৃতার শিরোনাম ‘অখ্যাত মানুষ অজ্ঞাত কৃতিত্ব’। বাংলার বিভিন্ন শহরে এবং গ্রামে এমন অনেক মানুষ ছিলেন যাঁরা প্রচারবিমুখ কিন্তু বিভিন্ন বিষয়ে অসাধারণ কাজ করে গিয়েছেন। হুগলি জেলার সিঙ্গুর অঞ্চলে একটি গ্রাম আছে যার নাম খাসের ভেড়ি, অনেকে বলে সিংহলপাঠান। এখানেই জন্মেছিলেন লঙ্কাজয়ী বিজয় সিংহ। রবিসন্ধ্যায় বিজয় সিংহের স্মৃতিচারণ করা হয়েছিল। কাটোয়া থেকে প্রকাশিত ধূলামন্দির (পাক্ষিক) পত্রিকা গত কয়েক বছর যাবৎ ‘বরণীয় যাঁরা’ শিরোনামে স্থানীয় অখ্যাত মানুষের জীবনী প্রকাশ করছে।
গুয়াহাটি অসম থেকে প্রকাশিত বাংলা দৈনিক ‘সংবাদ লহরি’তে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়কে শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনটি প্রবন্ধ ও ডা. নীলরতন সরকার এবং ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়কে শ্রদ্ধা জানিয়ে একটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
জন্মসার্ধশতবর্ষে ডা. নীলরতন সরকার প্রায় বিস্মৃত। বালির একটি প্রতিষ্ঠান (এপেক্স ক্লাব, বালি) মনীষীদের জন্ম সার্ধশতবর্ষ স্মরণে গত অগস্ট ২০১১ যে-স্মরণিকা প্রকাশ করেছে, সেই স্মরণিকায় তারা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়, ডা. চুনীলাল বসু ও অক্ষয়কুমার মৈত্র এঁদের যথোচিত শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.