ধরল না পুলিশ
তৃণমূলের সভামঞ্চে মন্ত্রীর পাশে খুনে অভিযুক্ত নেতা
পুলিশের দাবি, তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত সেই তৃণমূল নেতাকেই দলের প্রকাশ্য সভামঞ্চে দেখা গেল মন্ত্রী ও বিধায়কদের পাশে।
রবিবার বর্ধমানের কেতুগ্রামে পুলিশি ‘সন্ত্রাসের’ বিরুদ্ধে জনসভা ডেকেছিল তৃণমূল। ছিলেন রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা কেতুগ্রামের দলীয় পর্যবেক্ষক অনুব্রত মণ্ডল এবং দলের দুই বিধায়ক। সভামঞ্চে আগাগোড়া তাঁদের সঙ্গে ছিলেন খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত স্থানীয় তৃণমূল নেতা সাউদ মিঞা। বর্ধমানের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীরের কথায়, “সাউদ মিঞার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। পুলিশ তাঁকে খুঁজছে।” ওই সভায় পুলিশ থাকা সত্ত্বেও কেন গ্রেফতার করা হল না ওই তৃণমূল নেতাকে, সে প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপারের যুক্তি, “এ দিন সভায় ভিড়ের মধ্যে তাঁকে গ্রেফতার করা হলে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারত। তবে আমরা তাঁকে শীঘ্রই ধরব।”
এ দিন সভামঞ্চে সাউদ মিঞাকে দলীয় নেতাদের সঙ্গে বারবার আলাপচারিতা করতে দেখা গেলেও পঞ্চায়েত মন্ত্রীর দাবি, “ওই নামে কাউকে চিনি না। তাই এ ব্যাপারে কিছু বলতে পারব না।”
মঞ্চে মন্ত্রীর পাশে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা সাউদ মিঞা (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র
চন্দ্রনাথবাবু এই দাবি করলেও তাঁর উপস্থিতিতেই অনুব্রতবাবু সভামঞ্চ থেকে দলীয়-কর্মী সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, “প্রতি রাতে পুলিশ সাউদের বাড়ি যাচ্ছে। সাউদ কি দুষ্কৃতী? সিপিএম এবং পুলিশ মিথ্যা অভিযোগে ওকে ফাঁসিয়েছে।” তৃণমূল সূত্রেই জানা যাচ্ছে, সাউদ দলের কেতুগ্রাম ১ ব্লক সহ-সভাপতি। কেতুগ্রামের বাসিন্দা, সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য অচিন্ত্য মল্লিকের মন্তব্য, “দলতন্ত্র কোন পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে, তা এই ঘটনাতেই প্রমাণিত।” কেতুগ্রাম থানা সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের ২০ মে কেতুগ্রামের আমগোড়িয়া থেকে পাঁচুন্দির হাটে গরু বিক্রি করতে যাওয়ার সময়ে তুলে নিয়ে গিয়ে গুলি করে খুন করা হয় দুই সিপিএম কর্মী লক্ষ্মী হাজরা ও বাণেশ্বর হাজরাকে। জোড়া খুনের সেই ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত সাউদ মিঞা। ওই বছরেই ১৪ সেপ্টেম্বর কেতুগ্রামের বামুনডিহিতে ডিওয়াইএফ কর্মী মালেক শেখকে খুনের ঘটনাতেও তিনি অভিযুক্ত। এ ছাড়াও বেআইনি অস্ত্র রাখা ও এলাকায় গোলমাল পাকানোর অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
এ দিন কেতু্গ্রামের কান্দরায় ওই সভায় বিকেল পৌনে ৪টে নাগাদ মন্ত্রী ও দলীয় নেতাদের সঙ্গেই মঞ্চে ওঠেন সাউদ। সভা চলাকালীন অনুব্রতবাবুর সঙ্গে বারবার কথা বলতে দেখা যায় তাঁকে। কেতুগ্রামের বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজ, লাভপুরের বিধায়ক মনিরুল ইসলামরা সভায় পুলিশের বিরুদ্ধে এলাকায় সন্ত্রাসের অভিযোগে সরব হন। পুলিশের উদ্দেশে অনুব্রতবাবু বলেন, “তৃণমূলের কারও নামে অভিযোগ থাকলে স্থানীয় বিধায়ককে বলুন। সেখানে সহযোগিতা না পেলে আমাকে বলুন। কিন্তু পুলিশি সন্ত্রাস বন্ধ করতে হবে। আপনাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে আমাদের বাধ্য করাবেন না।” পুলিশি সন্ত্রাসের অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছেন পুলিশ সুপার।
সভা শেষে সাউদ মিঞা অভিযোগ করেন, “সিপিএম এবং পুলিশ আমার নামে বহু মিথ্যা অভিযোগ করেছে। আমি নিজেই জানি না, কতগুলো মামলা চলছে। খুনের অভিযোগগুলিতে এখনও জামিন হয়নি।” এ ভাবে প্রকাশ্যে মঞ্চে আসা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “নেতারা যা বলার বলবেন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.