শূন্য বাগান
মন্ত্রী আশ্বাস দিলেও চা বেরচ্ছে না বাগান থেকে
ত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবের কাছ থেকে আশ্বাস পেলেও মজুরি বৃদ্ধি না-হওয়া পর্যন্ত বাগান থেকে চা বের হতে দেওয়া হবে না বলে ফের জানিয়ে দিল তরাই-ডুয়ার্সের শ্রমিক সংগঠনগুলি। পূর্ব ঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শনিবারও কোনও বাগান থেকে চা পাতা বার করতে দেননি আন্দোলনকারী শ্রমিকেরা। পাশাপাশি, চা শ্রমিকদের ডিফেন্স কমিটি এবং কোঅর্ডিনেশন কমিটির উদ্যোগে ২৬টি শ্রমিক সংগঠন ১০ থেকে ১২ অগস্ট বাগানগুলিতে ধর্মঘটেও অনড়। এ দিন আদিবাসী বিকাশ পরিষদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মাটিগাড়ায় মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গের সচিবালয়ে আলোচনা করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী। সচিবালয় সূত্রের খবর, আগামী ৯ অগস্ট ফের কলকাতায় বৈঠকের প্রস্তুতি নিচ্ছে রাজ্য শ্রম দফতর।
ওই বৈঠকের পরে গৌতমবাবু বলেন, “আশা করছি শীঘ্রই সমস্যা মিটবে। বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতা এবং মালিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলছি। শ্রমমন্ত্রী, শিল্পমন্ত্রীও বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগী। মুখ্যমন্ত্রী সমস্ত কিছু জানেন। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটবে বলেই আমি বিশ্বাসী। যাতে শ্রমিক সংগঠনগুলিকে ধর্মঘট করতে না হয় সরকারের তরফে যা করণীয়, সেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” পাশাপাশি পুজোর আগে বাগানে যাতে উৎসবের মেজাজ ফিরে আসে তার জন্য বন্ধ বাগানগুলি খোলানোর ব্যবস্থাও সরকারের তরফে নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
শুক্রবার রাতে শামুকতলার ফাঁসখোয়া চা-বাগান বন্ধ করে চলে গিয়েছে মালিক। রাজু সাহার তোলা ছবি।
আদিবাসী বিকাশ পরিষদের নেতা জন বার্লা, তাঁদের চা শ্রমিক সংগঠনের নেতা সুকরা মুণ্ডারা জানান, গৌতমবাবু আশ্বাস দেওয়ায় তাঁরা খুশি। তবে সমস্যা না মেটা পর্যন্ত তাঁরা চা অবরোধ তুলছেন না। আজ, রবিবার তাঁরা সাংগঠনিক বৈঠকে বসবেন বলে সুকরা মুণ্ডা জানান।
দার্জিলিঙে মোর্চা চা পাতা আটকে চাপ বাড়িয়ে এক ধাপে ৬৭ টাকা থেকে ৯০ টাকা করিয়েছে। তার পর থেকেই আন্দোলন শুরু হয়েছে ডুয়ার্স ও তরাইয়ে। সম্প্রতি মালিকেরা প্রতি বছর ৮ টাকা করে মজুরি বাড়িয়ে ৩ বছরে ৯১ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে। শ্রমিক পক্ষ তা মানতে নারাজ। চার দফা বৈঠকেও এ ব্যাপারে সমাধানসূত্র পাওয়া যায়নি।
মালিক পক্ষের দাবি, এক ধাপে ৬৭ টাকা থেকে ৯১ টাকা মজুরি বৃদ্ধি সম্ভব নয়। শ্রমিকেরা তার থেকে বেশি টাকা দাবি করছে। ২৪ টাকা বাড়ালে প্রতি কেজি সিটিসি চায়ের উৎপাদন খরচ বেড়ে দাঁড়াবে ১১০ টাকা থেকে ১২০ টাকা। চা মালিকদের যৌথ সংগঠন কনসাল্টেটিভ কমিটি অব প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (সিসিপিএ)-এর সচিব মনোজিৎ দাশগুপ্তের কথায়, “শ্রমিকেরা যে দাবি করছেন তা মানা যায় না। আমরা ধাপে ধাপে মজুরি বৃদ্ধির পক্ষে। লাগামছাড়া মজুরি বৃদ্ধি করা হলে বাগানগুলি আর্থিক সঙ্কটের শিকার হবে।” সিসিপিএ-র সচিব জানান, দার্জিলিঙের চায়ের দাম তরাই-ডুয়ার্সের থেকে অনেক বেশি। সমতলের চা রফতানি হয় না। দেশের বাজারেই সীমাবদ্ধ। এটা বুঝতে হবে।
শ্রমিকদের যৌথ সংগঠন ডিফেন্স কমিটির আহ্বায়ক সমীর রায়ের কথায়, “দার্জিলিঙের ও সমতলের চা উৎপাদনের নিরিখে ডুয়ার্স-তরাইয়ের মজুরি অনেকটাই বৃদ্ধি করা উচিত বলে আমরা মনে করি। কিন্তু মালিকরা তা মানতে চাইছেন না। তাই আমরা ধর্মঘটে যেতে বাধ্য হয়েছি।” আরএসপি-র শ্রমিক সংগঠন ইউটিইউসি-র সাধারণ সম্পাদক অশোক ঘোষ জানান, দেশের মধ্যে এই রাজ্যের চা শ্রমিকেরা মজুরি সবচেয়ে কম পান। তাতে সংসার চলে না। ধর্মঘটের দায় মালিকদের নিতেই হবে বলে দাবি জানিয়েছেন তিনি।
Previous Story Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.