|
|
|
|
যন্ত্রপাতি নষ্ট হচ্ছে, দেখে খেপে গেলেন সেচমন্ত্রী |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ি |
কোথাও আগাছায় ঢাকা পড়েছে পে-লোডার। ট্রলারের গায়েই গজিয়েছে বটগাছ। আবার কোথাও ডাম্পারের চাকা মাটিতে বসে গিয়েছে। সারি সার ট্রাক। চাকা নষ্ট হয়ে রয়েছে। ওয়ার্কশপের গায়ে বটগাছ এবং লতাপাতা। ভিতরে ভাঙা লোহালক্কড়ের গুদাম। শেষ কবে তাতে কেউ হাত দিয়েছিল জানা নেই। সেখানে যাতায়াতের রাস্তায় এক হাঁটু জল। চারদিকে কোমর সমান জঙ্গল, ঘাস। দফতরের ঘরে লাইট, ফ্যান, টেবিল আছে। কর্মী নেই। ধুলোয় ঢাকা ফাইল। তা কোথাও মাটিতে পড়ে নষ্ট হচ্ছে।
তিস্তা সেচ প্রকল্পের ফুলবাড়ির মহানন্দা ব্যারেজ ডিভিশনের মেকানিক্যাল বিভাগের এ হেন দশা দেখে স্তম্ভিত সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। প্রায় ১০০ কোটি টাকার সম্পত্তি পড়ে নষ্ট হচ্ছে কেন, সেই প্রশ্নে কঠোর ভাষায় ইঞ্জিনিয়ারদের ভর্ৎসনা করেন সেচমন্ত্রী। পরিদর্শনের সময়ে ক্ষুব্ধ মন্ত্রী একজন সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ারকে ডেকে বলেন, “গলায় বড় সোনার চেন পরে ঘুরছেন। কোনও কাজ করেন না। সময় মতো দফতরে বসেন না। এ বার এ সব বন্ধ করুন। না হলে কড়া ব্যবস্থা নেব।’’ এর পরেই সেচমন্ত্রীর তোপের মুখে পড়েন একজন এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার। যিনি কেন এই দশা তা বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন, তাঁকে সেচমন্ত্রী বলেন, “মন্ত্রীকে মিথ্যা কথা বলতে লজ্জা করে না। আজেবাজে কথা বলছেন। দীর্ঘদিন যে এখানে কাজকর্ম হয় না, তা স্পষ্ট। গত ৩৪ বছরে যা হওয়ার হয়েছে। আমি আর এ সব বরদাস্ত করব না।” |
|
তিস্তা ব্যারেজের ওয়ার্কশপ পরিদর্শনে সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। |
সেচ সচিবকে ডেকে এক মাসের মধ্যে তিস্তার মেকানিক্যাল বিভাগের সমস্ত দফতর, ওয়ার্কশপ ফুলবাড়ির ওই এলাকায় স্থানান্তরিত করার নির্দেশ দেন মন্ত্রী। সেই সঙ্গে ছবি তুলে ১৫ দিনের মধ্যে সমস্ত যন্ত্রপাতি, গাড়ি, মেশিনের অবস্থার বিস্তারিত রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দেন। মন্ত্রীর ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে এলাকার বাসিন্দারা হাততালি দিয়ে মন্ত্রীকে অভিবাদন জানান। বাসিন্দারা হাতের সামনে মন্ত্রীকে পেয়ে বলেন, “স্যার, এখানে কর্মীরা আসেন না। অনেকে দফতরে তাস খেলেন। কোটি কোটি টাকার জিনিস হেলায় নষ্ট হচ্ছে।” সেচমন্ত্রী বাসিন্দাদের বলেন, “পঞ্চায়েতের সাহায্যে ১০০ দিনের প্রকল্পে জঞ্জাল সাফাইয়ের কাজ হবে। এলাকাকে সুন্দর করে সাজানো হবে। আরও গার্ড নিয়োগ করতে হবে। ঠিক এক মাস পর আমি আবার আসব।” পরে সেচমন্ত্রী জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া রঙধামালির গৌড়িকোন এলাকায় তিস্তা নদীর ভাঙন ঘুরে দেখেন। তিস্তা নদী গতিপথ পরিবর্তন করাতেই ভাঙন বলে আধিকারিকরা সেচমন্ত্রীকে জানান। মন্ত্রী বলেন, “১৩ কোটি টাকার একটি পরিকল্পনা করা হয়েছে। নদী খাত থেকে পলি তুলে ৬টি স্পার তৈরি করে নদীর স্বাভাবিক গতিপথ ফেরানো হবে। ফলে, ভাঙন ঠেকানো সম্ভব হবে। এই পরিকল্পনাটি শীঘ্রই অনুমোদন করিয়ে আনব।” |
|
|
|
|
|