|
|
|
|
ঘূর্ণাবর্তে সক্রিয় মৌসুমি বায়ু, বৃষ্টি পেল দক্ষিণবঙ্গ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
পুরো জুলাই মাসটা ভুগিয়েছে আকাশ। ভ্যাপসা গরমে হাঁসফাঁস করেছে মানুষ। জলের জন্য আকাশের দিকে তৃষ্ণার্ত চোখে তাকিয়ে থেকেছেন দক্ষিণবঙ্গের চাষিরা। আবহাওয়া দফতরের ইঙ্গিত ছিল, জুলাইয়ের রেশ ধরে ভোগাতে পারে অগস্টও। কিন্তু তা শেষ পর্যন্ত হল না।
বাংলাদেশ ও সন্নিহিত দক্ষিণবঙ্গের উপরে আবির্ভূত হল এক জোরালো ঘূর্ণাবর্ত। যা গোটা জুলাই মাস ধরে মিইয়ে থাকা মৌসুমি বায়ুকে হঠাৎ সক্রিয় করে তুলল। আর তার জেরে ফের বৃষ্টি পেল দক্ষিণবঙ্গ। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, শ্রাবণের এই ধারা দক্ষিণবঙ্গে আরও অন্তত দু’দিন চলবে।
১৫ জুন দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা ঢুকেছিল। তার পর থেকে মৌসুমি বায়ু কিন্তু এক বারের জন্যও দক্ষিণবঙ্গ ছাড়েনি। তা হলে জুলাই মাসে বৃষ্টি হল না কেন?
আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, পরিমণ্ডলে মৌসুমি বায়ু হাজির থাকলেই যে জোর বৃষ্টি হবে, তা নয়। মৌসুমি বায়ু সক্রিয় হলে তবেই অঝোর ধারায় বৃষ্টি নামে। আর মৌসুমি বায়ুর সক্রিয় হতে প্রয়োজন হয় প্রাকৃতিক অনুঘটকের। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া কোনও নিম্নচাপ বা স্থলভূমিতে তৈরি হওয়া কোনও ঘূর্ণাবর্ত এই অনুঘটকের কাজ করে।
দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা সাত দিন দেরিতে এলেও জুনের শেষ ১৫ দিনে ঘনঘন নিম্নচাপ বা ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে। তাই অতিরিক্ত বৃষ্টি হয়ে জুনের শেষে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল দক্ষিণবঙ্গের কোনও কোনও জেলায়। দক্ষিণবঙ্গে জুনে বৃষ্টি হয়েছিল স্বাভাবিকের থেকে ৪০ শতাংশ বেশি।
কিন্তু জুলাইয়ে একটি মাত্র ঘূণাবর্ত তৈরি হয়েছিল দক্ষিণবঙ্গে। তার স্থায়িত্ব ছিল সংক্ষিপ্ত। তাই গোটা জুলাইয়েই মৌসুমি বায়ু সক্রিয় হয়ে ওঠেনি। জুলাইয়ে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির পরিমাণ ছিল এই সময়ে স্বাভাবিকের থেকে ৩২ শতাংশ কম। সাধারণত জুলাই-অগস্ট মাসের বৃষ্টির উপরেই চাষবাস সব থেকে বেশি নির্ভরশীল।
তাই জুলাই মাসে একেবারে বৃষ্টি না-হওয়ায় গত বছরের মতো এ বারেও খরার আশঙ্কা থাকছে কি না, সেই প্রশ্ন কিন্তু উঠেছিল।
তবে বাংলাদেশ ও সন্নিহিত দক্ষিণবঙ্গের উপর তৈরি হওয়া ঘূর্ণাবর্তটি আপাতত মুখ রক্ষা করল বর্ষার। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ বলেছেন, “ওই ঘূর্ণাবর্তটি আরও শক্তিশালী হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। বায়ুপ্রবাহের গতি এমনটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে। এর ফলে মৌসুমি অক্ষরেখা আরও শক্তিশালী হয়ে দক্ষিণবঙ্গের কোনও কোনও জেলায় ভারী বর্ষণ নামাতে পারে।”
ঘূণাবর্তটির উপরেই এখন নির্ভর করছে দক্ষিণবঙ্গের বর্ষাভাগ্য। |
|
|
|
|
|