১৫ অগস্টের আগেই মুক্তি ৫০ জনের
মাওবাদী দুই বন্দিকে এখনই মুক্তি দেবে না রাজ্য
কেন্দ্রীয় সরকারের আপত্তি মেনে নিয়ে দুই মাওবাদী জেলবন্দিকে আপাতত মুক্তি না দেওয়ার সিদ্ধান্তই নিল রাজ্য সরকার।
সরকারি সূত্রে খবর, যে ৫২ জন রাজনৈতিক বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তার মধ্যে ৫০ জনকে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে ১৫ অগস্টের আগে। রাজনৈতিক বন্দি হিসাবে তাঁদের মুক্তির প্রস্তাবে শনিবার সরকারি সিলমোহর পড়েছে। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “স্বাধীনতা দিবসের আগেই ওঁদের স্বাধীন করে দিলাম।”
গত ২০ মে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেওয়ার দিনেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলে থাকা রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মমতা। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তিনি একটি কমিটিও গড়েন। সেই কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ৫২ জন বিচারাধীন জেলবন্দিকে মুক্তি দেওয়া হবে বলে জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। সরকারের পক্ষ থেকে সে দিন যে নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়, তাতে দু’জন মাওবাদীর নাম ছিল। এঁরা হলেন চণ্ডী সরকার ও প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়। দু’জনেই কৃষ্ণনগর জেলে বন্দি রয়েছেন।
সরকারের এই ঘোষণার পরেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে আপত্তি জানানো হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের যুক্তি হল, সিপিআই (মাওবাদী) একটি সর্বভারতীয় দল। তারা বিশেষ একটি রাজ্যে আলাদা করে হিংসা ছেড়ে আলোচনায় বসার সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। পশ্চিমবঙ্গে যে সব মাওবাদী হিংসা ছেড়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেবে, তারা অন্য রাজ্যে গিয়ে নাশকতা চালাবে না, তারই বা নিশ্চয়তা কী? তা ছাড়া কেন্দ্রীয় সরকারও মাওবাদীদের অস্ত্র ছেড়ে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু মাওবাদীদের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তাতে সাড়া দেয়নি। শুধু পশ্চিমবঙ্গে তারা শান্তি আলোচনার পথে যাওয়ার কথা ভাবছে, এমন কোনও গোয়েন্দা রিপোর্টও নেই। বরং জঙ্গলমহলে তারা ফের প্রভাব বাড়ানোর চেষ্টা করছে বলেই খবর মিলেছে। যৌথ বাহিনীর অভিযানে ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়া সংগঠনকে ফের গুছিয়ে নিয়ে নতুন ক্যাডারদের প্রশিক্ষণ দেওয়ারও চেষ্টা করছে মাওবাদী নেতৃত্ব।
কেন্দ্রের এই সতর্ক বার্তা চলতি সপ্তাহে লিখিত ভাবেও রাজ্য সরকারকে জানিয়ে দেওয়া হয়। তাতে বলা হয়, পশ্চিমবঙ্গের মাওবাদীদের সঙ্গে সরকারের আলোচনায় বসার পরিস্থিতি তৈরি করতে যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, তা অবশ্যই সমর্থনযোগ্য। বস্তুত, গত কয়েক মাস ধরে জঙ্গলমহলের তিন জেলায় মাওবাদী উপদ্রব প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানও কার্যত বন্ধ রয়েছে। কিন্তু চিঠিতে বলা হয়েছে, মাওবাদীদের মুক্তি দেওয়ার আগে যেন কেন্দ্রের সঙ্গে পরামর্শ করে নেয় রাজ্য।
কেন্দ্রের এই বার বার সতর্কতার কারণেই দুই মাওবাদী জেলবন্দিকে এখনই মুক্তি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের এক মুখপাত্র জানান, চণ্ডী সরকার ও প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় মাওবাদী দলের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও তাঁদের ব্যাপারে সরকার খোঁজখবর নিয়েই মুক্তির প্রস্তাব বিবেচনা করছিল। সরকারের যুক্তি হল, ধরা পড়ার সময় চণ্ডী সরকার সিপিআই (মাওবাদী) দলের রাজ্য কমিটির সদস্য থাকলেও এখন তাঁর বয়স ৬০ পেরিয়েছে। এ রাজ্যে মাওবাদী সন্ত্রাস শুরুর অনেক আগেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় বয়সে অপেক্ষাকৃত তরুণ হলেও দলের এক জন সাধারণ কর্মী ছিলেন। রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের এক মুখপাত্র জানান, ওই দু’জনের ব্যাপারে কেন্দ্র তদন্ত করছে। তাই এখনই তাঁদের ছাড়া হচ্ছে না। তবে বাকি ৫০ জনকে কয়েক দিনের মধ্যেই মুক্তি দেওয়া হবে। জানা গিয়েছে, মুক্তির তালিকায় থাকাদের মধ্যে ৪৩ জনই বর্তমানে কোচবিহার জেলে বন্দি রয়েছেন।
Previous Story Next Story


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.