১ চৈত্র ১৪১৮ বৃহস্পতিবার ১৫ মার্চ ২০১২


একই পদ এক এক জনের হাতে এক এক রকম। শুধু যে হাত বদলের কারণে স্বাদ বদল হয়, তা ঠিক নয়, পাল্টায় রেসিপির কারণেও।
উপকরণ ও প্রণালীতে সামান্য ‘চেঞ্জ’ মানেই রান্নাটাও গেল কিছুটা বদলে। একই দই ইলিশ, কুমড়োর ছক্কা অথচ রাঙা পিসিমা আর মেজ মাসির
দু’ বাড়িতে দু’রকম স্বাদ। আবার কখনও রান্নার প্রতি গভীর ‘প্যাশন’ থেকেও নতুন নতুন ‘মেনু’ উদ্ভাবিত হয়। গৃহিনীর কাছে রান্নাঘরটা আসলে এক মজার
‘ল্যাবরেটরি’। যদিও পুরুষরাও এই ব্যাপারে এক্কেবারে পিছিয়ে নেই। রান্না সংক্রান্ত আপনার সমস্ত ‘এক্সপেরিমেন্ট’ ‘শেয়ার’ করার জন্য ‘আপনার রান্নাঘর’।


  কানাডা থেকে শ্রীমতি সঞ্চিতা মহান্তি (সামন্ত)
ছানা পালং

উপকরণ

• পনির বা ছানা • আলু • ফুলকপি • পালং শাক বাটা • মটরশুঁটি • টোম্যাটো কুচি: ১টা মাঝারি মাপের • বারিস্তা (পেঁয়াজ ভাজা)
• হলুদ: অর্দ্ধেক টেবিল-চামচ • তেল • জিরেগুঁড়ো: এক টেবিল-চামচ • ধনেগুঁড়ো: এক টেবিল-চামচ • চিনি: অর্দ্ধেক টেবিল-চামচ
• আদা বাটা: ১-২ টেবিল-চামচ • লঙ্কা বাটা • গুঁড়ো করা গরমমশলা • নুন: পরিমাণ মতো

টিপস
• পনির ব্যবহার করলে আগে কিছু ক্ষণ গরম জলে ভিজিয়ে রাখতে হবে, নরম করার জন্য।
• আর ছানা দিলে ভাল করে মেখে মসৃণ করে নিতে হবে। এ বার সেটাকে ছুরি দিয়ে ছোট ছোট টুকরো করে কেটে, হাল্কা করে তেলে ভেজে নিতে হবে।


প্রণালী
• আলু-ফুলকপি ছোট করে কেটে নুন-হলুদ মাখিয়ে ভেজে নিন।
• মটরশুঁটি সেদ্ধ করে নিতে হবে।
• কড়াইতে এ বার অল্প তেল দিতে হবে।
• একটা ছোট বাটিতে হলুদগুঁড়ো, জিরেগুঁড়ো, ধনেগুঁড়ো, চিনি, নুন,
আদা বাটা ও লঙ্কা বাটা ভাল করে মিশিয়ে কড়াইতে ঢেলে দিন।
• মশলা থেকে তেল বেরিয়ে এলে টোম্যাটো কুচি দিয়ে নেড়েচেড়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন।
• এ বার ভাজা সব্জি ও পেঁয়াজ ভাজা দিয়ে দিন।
• এরপর পালং শাক বাটা ও পনির বা ছানা দিন।
• সব কিছু ভাল করে মিশিয়ে নিয়ে হাল্কা আঁচে ঢাকা দিয়ে রাখুন।
• কিছু ক্ষণের মধ্যেই তৈরি হয়ে যাবে ছানা-পালং।
• নামানোর সময় গরম মশলার গুঁড়ো ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।
• লুচি-রুটি-পরোটার সঙ্গে দারুণ লাগবে। ভাতের সঙ্গেও ভাল লাগে।

ডালের পুর দিয়ে বেগুন ভাজা

উপকরণ
• গোটা বেগুন (বোঁটা ছাড়ানো নয়): ৪টি • ছোলার ডাল: অর্দ্ধেক কাপ • অরহড় ডাল • কাঁচালঙ্কা: ৩-৪টি • তেল: পরিমাণ মতো • নুন: স্বাদ মতো • ধনেপাতা কুচি
• শুকনো লঙ্কা: ২-৩টি • হলুদ: অর্দ্ধেক চামচ • মেথি দানা: অর্দ্ধেক টেবিল-চামচ • রসুন কুচি: ২টি • হিঙ: এক চিমটে • কারি পাতা


প্রণালী
• প্রথমে বেগুনগুলিকে ধুয়ে তার মাথা থেকে ৪ ভাগে কাটতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে বোটা যেন কাটা না-পড়ে।
• কড়াইতে তেল গরম করে বেগুনের টুকরোগুলি ১ মিনিট ভেজে নিন। বেগুনগুলোকে একটু নরম করার জন্য ভাজা, যাতে ওগুলোর মধ্যে পুর ঢোকানোর সময় ভেঙে না যায়।
• কড়াইতে অল্প তেল দিয়ে তাতে শুকনো লঙ্কা ভেজে ছোলার ডাল দিন।
• একটু ভাজা হয়ে এলে এর মধ্যে অরহড়ের ডাল দিয়ে দিতে হবে।
• একটু নাড়াচাড়া করে মেথি দানা, কারি পাতা, রসুন, হলুদ ও পরিমাণ মতো নুন নিশিয়ে ভেজে নিতে হবে।
• এ বারে পুরো মিশ্রণটি গ্রাইন্ডারে গুঁড়ো করে নিন। তার পর অল্প জল দিয়ে মেখে নিতে হবে। মনে রাখতে হবে কোনও ভাবেই যেন জল বেশি না হয়ে যায়।
• এ বার প্রতিটা বেগুনে একটু নুন মাখিয়ে পুর দিয়ে ভরাট করে দিন।
• একটা ফ্রাইং প্যানে অল্প তেল দিয়ে পুর ভরা বেগুনগুলো একটা একটা করে ছেড়ে দিন। প্যানটিকে ঢেকে দিতে হবে। আঁচ খুবই হাল্কা থাকবে।
• পাঁচ মিনিট বাদে ঢাকনাটা খুলে বেগুনগুলো উল্টে দিন। ৩-৪টে কাঁচালঙ্কা আর ধনেপাতার কুচি ছড়িয়ে আবার ঢেকে দিন।
• আরও পাঁচ মিনিট পর ঢাকা খুলে দেখতে হবে বেগুনগুলো নরম হয়েছে কি না। যদি না হয় তবে আবার উল্টে আরও মিনিট তিনেক ঢাকা দিয়ে রাখুন।
খেয়াল রাখতে হবে যে, উল্টানোর সময় যেন পুর বেগুন থেকে বেরিয়ে না যায়।
• বেগুনগুলো ভাজা ভাজা হয়ে এলেই তৈরি ডালের পুর দিয়ে বেগুন ভাজা।
• ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করলে এর থেকে রসনাতৃপ্ত পদ আর খুঁজে পাওয়া যাবে না!

পালং শাক দিয়ে মুগ ডাল

উপকরণ
• মুগ ডাল: ১০-১৫ মিনিট জলে ভিজিয়ে রাখা • পালং শাক: কুচি করে কাটা • আদা: থেতো করে রাখা • হলুদ: ১ টেবিল-চামচ
• ঘি: ২ টেবিল-চামচ • গোটা জিরে: ১ টেবিল-চামচ • লঙ্কাগুঁড়ো: ১ টেবিল-চামচ • শুকনো লঙ্কা: ৩টে • হিঙ: এক চিমটে • নুন: পরিমাণ মতো

প্রণালী
প্রেসার কুকারে ডাল, পালং শাক, আদা, হলুদ
ও পরিমাণ মতো জল দিয়ে সেদ্ধ করে নিতে হবে।
কুকারে একটা হুইসেল পড়লেই নামিয়ে নিন।
ডালটা যাতে ঘন হয় সেই মতো জল দিতে হবে।
এ বার একটা কড়াইতে ঘি গরম করে জিরে ও হিঙ দিতে হবে।
তার পর শুকনো লঙ্কা ও লঙ্কাগুঁড়ো দিন।
একটু ভাজা হলে ১ টেবিল-চামচ জল দিতে হবে।
এ বার মিশ্রণটি ডালের উপর ছড়িয়ে দিন।
পরিবেশন করুন ভাত বা রুটির সঙ্গে।

জন্ম পূর্ব মেদিনীপুরে। ছাত্রজীবনের শেষ দিক কেটেছে কলকাতায়। সেই সঙ্গে কর্মজীবনের কিছুটাও। আপাতত স্বামীর ‘পোস্ট ডক্টরাল রিসার্চ’ সূত্রে টরেন্টো নিবাসী হয়ে পুরোপুরি গৃহিণী। রান্না করা এখন শখের থেকেও বেশি নেশার পর্যায়ে। অবসর সময় কাটে ছবি এঁকে, বই পড়ে আর গান শুনে। ঘুম থেকে উঠেই আনন্দবাজার পড়া, নেট সার্ফিং করা আর সুযোগ পেলেই প্রতিটা মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি— এই ভাবেই সুন্দর করে কেটে যাচ্ছে দিন।



আপনারাও পাঠাতে পারেন নতুন পুরনো ভিন্ন স্বাদের নানা রেসিপি, ছবি-সহ, নীচের ঠিকানায়
হাওয়াবদল, আপনার রান্নাঘর
আনন্দবাজার পত্রিকা, ইন্টারনেট সংস্করণ
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট
কলকাতা ৭০০০০১

ই-মেল করুন haoabadal@abp.in অথবা haoabadal@gmail.com

সংক্ষিপ্ত পরিচিতির সঙ্গে আপনার ছবি পাঠানো বাধ্যতামূলক।


রোজের আনন্দবাজারএ বারের সংখ্যা • সংবাদের হাওয়াবদল স্বাদবদল • আপনার রান্নাঘর • পুরনো সংস্করণ