শিশু মৃত্যুতে বিক্ষোভ হাসপাতালে
চিকিৎসকের গাফিলতিতে শিশু মৃত্যুর অভিযোগ তুলে হাসপাতালে দীর্ঘ ক্ষণ বিক্ষোভ দেখালেন রোগীর পরিজন ও বাসিন্দাদের একাংশ। রবিবার বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের ঘটনা। পরে এসডিপিও (বোলপুর) সূর্যপ্রতাপ যাদবের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী হাসপাতালে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে মৃত শিশুর পরিবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন। ওই চিকিৎসক অবশ্য গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
পরিবার ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত শিশুর নাম বিষ্ণু মোদী। বছর তিনের ওই শিশুর বাড়ি বোলপুর থানার রাইপুর গ্রামের কোঁড়াপাড়ায়। রবিবার পেট খারাপ আর খিঁচুনির উপসর্গ দেখা দেওয়ায় তার বাবা-মা ভোরের দিকে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ছেলেকে ভর্তি করেন। শিশুটির আপৎকালীন চিকিৎসার জন্য তৎক্ষণাৎ ‘কল’ যায় শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তন্ময় মণ্ডলের কাছে। বিষ্ণুর বাবা, পেশায় কৃষক শঙ্কর মোদীর অভিযোগ, “তন্ময়বাবু অসুস্থ ছেলেকে খানিক ক্ষণ দেখেই বাড়ি ফিরে যান। ঠিকমতো চিকিৎসা না করে ফেলে যাওয়ায় ছেলের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়।”

রবিবার বোলপুরে তোলা নিজস্ব চিত্র।
সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ বিষ্ণুর মারা যায়। শিশুটির মা মানসীদেবীর ক্ষোভ, “ডাক্তারবাবু চলে না গেলে আমার ছেলেটা এ ভাবে চিকিৎসা না পেয়ে অকালে চলে যেত না।” ওই শিশুর মৃত্যুর পর থেকেই হাসপাতালে উত্তেজনা তৈরি হয়। অভিযুক্ত চিকিৎসককে তাঁদের সামনে হাজির করানোর দাবিতে, দুপুর দেড়টা পর্যন্ত হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ দেখান মৃত শিশুর পরিজন ও স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। চিকিৎসকের দেখা না মেলা পর্যন্ত তাঁরা শিশুটির দেহ হাসপাতাল থেকে নিয়ে না যাওয়ার হুমকিও দেন। খবর পেয়ে বোলপুর থানা থেকে পুলিশ এসে বিক্ষোভকারীদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ দিকে, অভিযুক্ত ওই চিকিৎসককে নিয়ে বোলপুর মহকুমা হাসপাতাল অতীতেও বিড়ম্বনার মুখে পড়েছে। মাসখানেক আগেই তন্ময়বাবুর বিরুদ্ধে রোগীদের একাংশ বেশির ভাগ দিন ডিউটির সময় অনুপস্থিত থাকার অভিযোগ তুলেছিলেন। এ দিন অবশ্য তন্ময়বাবু চিকিৎসার গাফিলতিতে শিশু মৃত্যুর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, “ইমার্জেন্সি কল পেয়েই হাসপাতালের গাড়িতে চেপে কয়েক মিনিটের মধ্যে পৌঁছে গিয়েছি। ওই শিশুর চিকিৎসাও শুরু করেছিলাম। সকাল ৬টা-১১টা পর্যন্ত শিশুটির প্রয়োজনীয় চিকিৎসা হয়েছে।” তাই তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা গাফিলতির অভিযোগ একেবারেই ঠিক নয় বলে তিনি জানিয়েছেন। হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে যাওয়ার অভিযোগও তিনি উড়িয়ে দিয়েছেন। তন্ময়বাবুর দাবি, “আমি তো হাসপাতালেই ছিলাম। অন্য শিশুরোগীদের ‘অ্যাটেন্ড’ করছিলাম।” এ দিকে, শিশুটির মৃত্যুর কারণ হিসেবে তাঁর প্রতিক্রিয়া, “ওই শিশুটির ভীষণ পেট খারাপ ছিল। প্রবল খিঁচুনিও হচ্ছিল। এমন কেসে বাঁচার সম্ভাবনা কম। তবুও আমরা চেষ্টা করেছি।”
ছুটি নিয়ে বাইরে আছেন বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার প্রদীপ্ত ভট্টাচার্য। ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে রোগীর পরিজন হাসপাতালে বিশৃঙ্খলা করেছেন বলে শুনেছি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তদন্ত করা হবে। কেউ দোষী হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.