কারখানার ম্যানেজারকে পিটিয়ে খুন,
১৬ বছর পর যাবজ্জীবন ১৪ জনের
য়দা তৈরির একটি কারখানার ম্যানেজারকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে নৃশংস ভাবে খুনের দায়ে ১৪ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দিল চুঁচুড়া আদালত।
১৬ বছর ধরে মামলা চলার পরে, মঙ্গলবার আদালতের বিশেষ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক আশিস দেব ওই রায় শোনান। মামলার সরকারি আইনজীবী অমিতকুমার রক্ষিত বলেন, “সাজাপ্রাপ্তদের প্রত্যেকেই ওই কারখানাতেই কাজ করত।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহত সুজিত নন্দীর বাড়ি চন্দননগরের গোন্দলপাড়ায়। সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন তিনি। সেখান থেকে অবসর নেওয়ার পরে দির্ঘাঙ্গী মোড়ের কাছে সিঙ্গুরে দিল্লি রোডের ধারে ময়দা তৈরির একটি কারখানায় ম্যানেজার পদে যোগ দেন বছর ছেচল্লিশের সুজিত। সেখানকার নিরাপত্তার দিকটিও তিনিই দেখভাল করতেন। ১৯৯৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি বিকেলে বেশ কিছু শ্রমিক লাঠি, বল্লম, ভোজালি নিয়ে কারখানায় হানা দেয়। লোহার বড় গেট ভেঙে তারা ভিতরে ঢোকে। অন্তত ১২ জন নিরাপত্তারক্ষী ভিতরে ছিলেন। প্রথমে তাদের মারধর করে হঠিয়ে দেয় শ্রমিকরা।
ইতিমধ্যেই বাইরে হইচই শুনে নিজের অফিস থেকে বেরিয়ে আসেন সুজিতবাবু। তাঁকে হাতের নাগালে পেয়েই ক্ষিপ্ত ওই শ্রমিকেরা ঝাঁপিয়ে পড়ে। এলোপাথাড়ি মারে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন প্রাক্তন ওই সেনাকর্মী। তাঁকে প্রথমে শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে কলকাতায় ইএম বাইপাসের ধারে একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা সুজিতবাবুকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ওই কারখানার শ্রমিক সোহন শর্মা সিঙ্গুর থানায় ঘটনার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্ত শুরু হয়। ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা করে পুলিশ। শুনানিতে মোট ২০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করে আদালত। মামলার সরকারি আইনজীবী অমিতকুমার রক্ষিত জানান, ওই কারখানার ডিরেক্টর বিশ্বনাথ কেডিয়া মূল সাক্ষী। তাঁর বয়ান এবং পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ-সাক্ষ্যের ভিত্তিতে বিচারক গত সোমবার ওই ১৪ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেন। এ দিন রায় শোনান বিচারক।
কেন খুন হতে হয়েছিল সুজিতবাবুকে? কারখানার মধ্যে গুণ্ডামির পরিবেশ তৈরি হয়েছে বলে বুঝতে পারছিলেন সুজিত। ঘটনার কয়েক মাস আগে বিষয়টি পুলিশ-প্রশাসনকে জানিয়েওছিলেন তিনি। এর মধ্যেই একদল শ্রমিক এবং দুষ্কৃতীর হাঙ্গামায় কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। অভিযোগ ওঠে, সুজিতবাবু কারখানা খোলার চেষ্টা করায় তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। ঘটনার দিনই সুজিতবাবুর উদ্যোগে কারখানা ফের খোলে। সে দিনই বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ বিকাশ মণ্ডল নামে এক শ্রমিকের নেতৃত্বে হামলা চলে তাঁর উপরে। কয়েক দিন পরেই পুলিশ অভিযুক্তদের কয়েক জনকে গ্রেফতার করে। কয়েক জন আত্মসমর্পণও করে।
এ দিন রায়ে যাবজ্জীবন ছাড়াও ১০ হাজার টাকা করে সকলকে জরিমানার আদেশ শুনিয়েছেন বিচারক। পাশাপাশি অস্ত্র-সহ অবৈধ জমায়েতের দায়ে প্রত্যেককে ৩ বছরের কারাদণ্ড এবং ১ হাজার টাকা জরিমানারও নির্দেশ দেন তিনি।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.