|
|
|
|
প্রতিহিংসা মেটাতেই চার্জশিট, দাবি তেজপালের |
সংবাদ সংস্থা • পানজিম
১৮ ফেব্রুয়ারি |
জামিন পেলেন না তরুণ তেজপাল। তহেলকার প্রাক্তন সম্পাদক তেজপালের বিরুদ্ধে গত কালই ধর্ষণের চার্জশিট পেশ করেছিল পুলিশ। আজ বম্বে হাইকোর্টের গোয়া বেঞ্চে তাঁর জামিনের আবেদনের শুনানি হওয়ার কথা ছিল। বিচারপতি মৃদুলা ভাটকর এ দিন মামলা মুলতুবি রেখে আগামী ৪ মার্চ পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন। ইতিমধ্যে যেহেতু চার্জশিট দাখিল হয়ে গিয়েছে, এই অবস্থায় দায়রা আদালতে তেজপাল জামিনের আর্জি জানাতে পারেন বলেও আজ স্পষ্ট করে দিয়েছে হাইকোর্ট।
শুনানি আগামী শুক্রবার পর্যন্ত স্থগিত রাখার আবেদন জানিয়েছিলেন তেজপালের আইনজীবীই। সবে কালই তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের চার্জশিট পেশ হয়েছে। তাই প্রস্তুতির জন্য তাঁদের কয়েক দিন সময় লাগবে বলে আদালতকে জানান তিনি। আসামি পক্ষের এই আর্জি মঞ্জুর করেন বিচারক। অন্য দিকে, চার্জশিটের একটি কপি তাঁর কাছে জমা দেওয়ার নির্দেশও দেন সরকার পক্ষকে।
গায়ে সাদা কুর্তা। সঙ্গে ধূসর ট্রাউজার। বছর পঞ্চাশের তরুণ তেজপাল আজ যখন আদালত ছেড়ে বেরোচ্ছিলেন, সে সময় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি। উত্তেজিত তেজপাল তাঁদের উদ্দেশে বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্যই চার্জশিটে এই সব অভিযোগের উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি কোনও ভুল করেননি। তরুণের আরও দাবি, সত্যিটা লুকিয়ে আছে হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজে। আর তাই পুলিশ ফুটেজটা আড়াল করার চেষ্টা করছে। তাঁর কথায়, “আমি যে নির্দোষ প্রমাণিত হব, সেই সম্ভাবনা একশো শতাংশ।”
৭ নভেম্বর গোয়ার একটি পাঁচ-তারা হোটেলে তাঁরই পত্রিকার এক মহিলা সাংবাদিককে তরুণ ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ। গোয়ায় একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল তহেলকা। সেখানে হলিউড অভিনেতা রবার্ট ডি নিরোর দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন ওই তরুণী। তাঁর অভিযোগ, নিরোকে হোটেলের ঘরে ছেড়ে আসার সময় লিফটের মধ্যে তেজপাল ধর্ষণ করেন তাঁকে। পরের দিন, ৮ নভেম্বর আবার তাঁর উপর জোর করে, লিফটে নিয়ে গিয়ে তরুণ ফের ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বলেও জানিয়েছিলেন ওই মহিলা সাংবাদিক। মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট অনুজা প্রভুদেশাইয়ের এজলাসে কাল ২৮৪৬ পাতার চার্জশিট পেশ করেছে গোয়া পুলিশের অপরাধ দমন শাখা। তাতে ১৫২ জন সাক্ষীর বয়ানের পাশাপাশি রয়েছে হোটেলের লবির সিসিটিভি ফুটেজ, ওই তরুণীকে পাঠানো তেজপালের ই-মেল ও মেসেজ প্রমাণ হিসেবে দাখিল করা হয়েছে। তহেলকা সম্পাদকের বিরুদ্ধে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর থেকেই তিনি পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন বলেও চার্জশিটে উল্লেখ করেছেন তদন্তকারী অফিসার। পুলিশের আরও দাবি, নিজের অপরাধের কথা কবুল করেছেন তরুণ।
তেজপাল যদিও সেই দাবি নস্যাৎ করে দিয়েছেন। তিনি জানান, “পুরোটাই মিথ্যে। অপরাধ স্বীকার করে কোনও রকম ই-মেল আমি কাউকে পাঠাইনি।” গোড়ার দিকে তেজপাল জানিয়েছিলেন, যা ঘটেছে তাতে দু’জনেরই সম্মতি ছিল।
গত ৩০ নভেম্বর পানজিমের দায়রা আদালতে অন্তর্বর্তী জামিনের আর্জি খারিজ হয়ে যাওয়ার পরই তরুণ তেজপালকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আপাতত তাঁর ঠিকানা ভাস্কো শহরের কাছে সদা সাব-জেল। অভিযোগকারিণীর বয়ান ও সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে চার্জশিটে তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণ, যৌন নিগ্রহ ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনেছে গোয়া পুলিশ। রাজধানীতে নির্ভয়া গণধর্ষণ কাণ্ডের পর ধর্ষণ সংক্রান্ত আইন
আরও কড়া হয়েছে। তেজপাল যদি দোষী প্রমাণিত হন, নয়া আইন অনুযায়ী যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে তাঁর। |
|
|
|
|
|