দু’মাস বেতন না মেলার অভিযোগে দুই আধিকারিককে তালাবন্ধ করে বিক্ষোভ দেখালেন একটি বেসরকারি ইস্পাত কারখানার কিছু ঠিকা শ্রমিক। ঘণ্টা দুয়েক পরে কর্মী সংগঠনের নেতারা উদ্যোগী হয়ে তালা খুলে দেন। খবর পেয়ে পৌঁছয় পুলিশও। তবে বিকেল পর্যন্ত আলোচনা চলে। পুলিশ জানায়, তারা কারখানা কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকদের মধ্যে মধ্যস্থতা করার পরে আপাতত এক মাসের বেতন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তার পরে বিক্ষোভ থামে।
দুর্গাপুরে এই সংস্থার মোট তিনটি ইউনিট রয়েছে। তার মধ্যে একটি লেনিন সরণিতে। সেই ইউনিটটি মাস ছয়েক ধরে বন্ধ। কারখানা কর্তৃপক্ষের দাবি, বাজারের পরিস্থিতি ভাল নয়। এমন পরিস্থিতিতে ঠিকা শ্রমিকদের সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়ে দুর্গাপুজোর আগে উৎপাদন বন্ধের কথা ঘোষণা করেন কর্তৃপক্ষ। কাজ হারান প্রায় সাড়ে তিনশো ঠিকা শ্রমিক। তার পরেও কারখানায় রয়ে গিয়েছেন শ’খানেক শ্রমিক। তাঁরা ডিসেম্বর থেকে বেতন পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। |
বিক্ষোভ শ্রমিকদের। —নিজস্ব চিত্র। |
মঙ্গলবার কারখানার দুই আধিকারিক ওই ইউনিটে যান। তাঁরা অফিসঘরে ঢুকতেই সেই সময়ে কয়েক জন ঠিকা শ্রমিক বাইরে থেকে তালা দিয়ে দেন। ওই শ্রমিকদের দাবি, বকেয়ার ব্যবস্থা না করা হলে দুই আধিকারিককে ছাড়া হবে না। তাঁরা জানাতে থাকেন, বেতন না পাওয়ায় দু’বেলা খাওয়া জুটছে না। ছেলেমেয়ের পড়াশোনার খরচ জোগাড় করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। পিএফ এবং ইএসআইয়ের টাকাও কর্তৃপক্ষ জমা দিচ্ছেন না বলে তাঁদের অভিযোগ।
ঘণ্টা দুয়েক পরে আইএনটিটিইউসি এবং সিটুর কর্মী সংগঠনের নেতারা এসে তালা খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। তবে তাঁরা জানিয়ে দেন, সমস্যার সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত ওই দুই আধিকারিক কারখানা ছেড়ে যেতে পারবেন না। খবর পেয়ে পুলিশ পৌঁছয়। পুলিশ কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলে। পরে আপাতত এক মাসের বকেয়া কারখানা কর্তৃপক্ষ দিতে রাজি হয়েছেন জানিয়ে ঠিকা শ্রমিকদের বিক্ষোভ বন্ধ করতে অনুরোধ করে পুলিশ। শেষে বিকেল ৫টা নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। আইএনটিটিউসি-র পক্ষে পরিমল হাজরা এবং সিটুর পক্ষে অনুপ চক্রবর্তী বলেন, “আপাতত আমরা বিক্ষোভ তুলে নিলাম। তবে শীঘ্র আরও এক মাসের বকেয়া দেওয়ার ব্যবস্থা না হলে ফের আন্দলনের পথে যাব।” ওই দুই আধিকারিক জানান, বিষয়টি তাঁরা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবেন। কারখানার উচ্চ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। |