গ্রেফতারে স্বস্তি ফিরলেও টমকে ছাড়াতে যাবে না পরিবার
ম গ্রেফতারের পাকা খবর পাবার পর স্বস্তি ফিরল পরিবারে। কোথাও কোনও অঘটন ঘটলে রাত বিরেতে টমের খোঁজে বাড়িতে পুলিশের হানা ও নানান জেরার হাত থেকে তাঁরা অন্তত নিস্তার পেলেন বলে মনে করছেন কেএলও-র প্রথম সারির ওই জঙ্গি নেতার পরিবার। তবে পরিজনেরা জানিয়েছেন তাঁরা টমকে ছাড়ানোর চেষ্টা করবেন না।
জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি ব্লকের ফটকটারি গ্রামের বাসিন্দা জয়দেব রায়ের জঙ্গি জীবনে প্রবেশের পর নাম হয় টম অধিকারী। তাঁর বাবা প্রাণকৃষ্ণ রায় ছিলেন এলাকার এক প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে টম বড়। ১৯৯৯ সালে জঙ্গি জীবনে প্রবেশ করার খবর পাবার পর গ্রামের ওই বাড়িতে পুলিশি আনাগোনা শুরু হয়। শিক্ষক প্রাণকৃষ্ণবাবু ২০০৫ সালে হৃদরোগে মারা যান। ততদিনে চাউর হয়ে হয়ে গিয়েছে তাঁর ছেলে জঙ্গি।
ধূপগুড়ির ফটকটারি গ্রামে টম অধিকারীর বাড়ি। ছবি: রাজকুমার মোদক।
স্বামীর মৃত্যুর তিন বছরের মাথায় ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান টমের মা স্বর্ণবালাদেবীও। মায়ের মৃত্যুর এক বছরের মাথায় টমের এক মাত্র বোন মঞ্জু আত্মহত্যা করেন। গ্রামের এক প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক টমের মেজভাই শশাঙ্ক রায় বাড়ির দাওয়ায় বসে বলেন, “পুলিশ দাদাকে মেরে ফেলেনি এটাই ভাগ্য। তবে ও নেপালে ধরা পড়েছে কি না তা নিয়ে পাকা খবর এতদিন পাচ্ছিলাম না। সোমবার খবরের কাগজে দাদা নিশ্চিত গ্রেফতার হয়েছে জেনে দমবন্ধ পরিবেশ থেকে আমরা মুক্তি পেলাম। এখন বিচারে যা হবার তাই ওর হবে। আমরা কেউ আর তার জন্য দৌড়ব না।”
২০০৩ সালে ভুটানে সেনা অভিযানের পর টম-সহ কেএলও-র বড়, মাঝারি, ছোট জঙ্গিরা ধরা পড়েন। টানা আট বছর টমকে জেলে কাটাতে হয়। জামিনে দাদাকে মুক্ত করে বাড়িতে ফিরিয়ে আনার জন্য সে সময় চেষ্টার কোনও কসুর করেনি তার পরিবার। নিজেদের ছ’বিঘা জমি অন্যের কাছে বন্ধক রেখে প্রায় তিন লক্ষ টাকা উকিলের পেছনে খরচ করেও জামিনে ছাড়াতে পারেনি তারা। জেলে থাকাকালীন সময়ে বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর পরিবারের অনুরোধেও টম প্যারোলে ছাড়া পাননি।
২০১১ সালের অক্টোবরে ছাড়া পান টম-সহ বহু জঙ্গি। শশাঙ্কের কথায়, “সংশোধনাগারে আট বছর থেকেও দাদা নিজেকে শোধরাতে পারল না। আমাদের পরিবারের সকলকে দিনের পর দিন পুলিশের ভয়ে পালিয়ে থাকতে হয়েছে। ও যখন আমাদের কথা না ভেবে জীবন বেছে নিয়েছে, তাই আর আমরা ওকে ছাড়ানোর জন্য কোন চেষ্টা করব না।”
টমের দু’ভাই জানান, ১৯৯৯ সালে এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না। পাকা রাস্তা ছিল না। স্কুল ছিল না কাছেপিঠে। উত্তরবঙ্গের বহু গ্রাম ছিল পিছিয়ে। সে সময় ওই আন্দোলনের পেছনে যুক্তি খুঁজে পেতেন। এখন অবশ্য সে পরিস্থিতি নেই বলে তাঁদের দাবি। টমের মেজ ভাই শশাঙ্কের কথায়, “দাদা নিজে কোনও বিচার বিবেচনা না করে জীবন সিংহের কাছে ফিরে গিয়েছিল। তবে সে আমলের সঙ্গে এখনকার পরিস্থিতি মেলালে চলবে কী করে তা বোঝেনি। এখন উত্তরবঙ্গের জন্য মুখ্যমন্ত্রী আলাদা সচিবালয় করেছেন। রাজবংশী ভাষা অ্যাকাডেমি হয়েছে। পঞ্চানন বর্মার নামে বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। তারা ইচ্ছা করলে ভাষা অ্যাকাডেমিতে যুক্ত হতে পারতেন। আলাদা রাজ্য বা দেশের দাবি আর আজ কেউ মানে না তা তাদের বোঝা উচিত ছিল।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.